Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

দর নামছে না ইলিশের

ইলিশ ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়ে জেলাবাসীর সেই দুঃখ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। 

মহার্ঘ্য: বাঁকুড়ার চকবাজারে। নিজস্ব চিত্র

মহার্ঘ্য: বাঁকুড়ার চকবাজারে। নিজস্ব চিত্র

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

বৃষ্টি নামলেও ইলিশের দর নামল না। আটকে রইল সেই হাজার টাকার ওপারেই। বাজারে ঝুড়ি ভর্তি ইলিশ থাকলেও দাম শুনে বিরস মুখে অনেক ক্রেতাই পিছিয়ে আসছেন। বাঁকুড়া থেকে বড়জোড়া, বিষ্ণুপুর থেকে ইঁদপুর, খাতড়া থেকে শালতোড়া— সর্বত্রই আক্ষেপ ইলিশ কি এ বার ধরাধোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে!

বাঁকুড়া জেলাবাসীর পোস্ত-বিলাস নিয়ে কম খ্যাতি নেই। কিন্তু পোস্তও এখন ১,২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফলে, পোস্ত কেনায় রাশ টানতে হয়েছে অনেক পরিবারেই। তা নিয়ে দুঃখ ছিলই। ইলিশ ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়ে জেলাবাসীর সেই দুঃখ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

বর্ষাকাল এলেও বৃষ্টির দেখা মিলছিল না। তাই অনেকে ভেবেছিলেন, বৃষ্টি নামলে ইলিশের জোগান বাড়বে, নামবে দামও। কিন্তু বৃষ্টি বাড়লেও ইলিশের দর তেমন কমেনি। তাই মন ভাল নেই অনেক গৃহস্থেরই।

পাঠকপাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা প্রাক্তন সরকারি কর্মী অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রথম থেকেই ইলিশের যা দর, তাতে হাত দেওয়াই মুশকিল ছিল। ভেবেছিলাম, কিছু দিন গেলে দর কমবে। কিন্তু কোথায় কী! ইলিশের মরসুম শেষ হতে চলল, কিন্তু হাতে গোনা কয়েক দিন ইলিশ খেয়েছি। মন ভরল না।’’ বাঁকুড়ার মগরা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকেশ পাত্রও বলেন, “বর্ষায় ছুটির দিনে ইলিশ ছাড়া ভাত বা খিচুড়ি কিছুই জমে না। গত বছর গোটা মরসুম জুড়েই ইলিশ খেয়েছিলাম। কিন্তু এ বার তো ইলিশের দর আকাশ থেকে নামছেই না।’’

এ দিকে অন্য বছরের মতো এ বারও ক্রেতারা ঝাঁপিয়ে পড়বেন ভেবে যে সব ব্যবসায়ী প্রচুর পরিমাণে ইলিশ মজুত করেছিলেন, বিক্রিবাটায় মন্দা দেখে হাত কামড়াচ্ছেন তাঁরাও।

শুক্রবার বাঁকুড়ার চকবাজারে গিয়ে দেখা যায়, বরফ চাপা থরে থরে ইলিশ। কিন্তু ক্রেতা এসে সে দিকে আড়চোখে তাকিয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন চালানি রুই, কাতলা। মাছ ব্যবসায়ী বিপত্তারণ ধীবর, বাসুদেব ধীবরেরা জানান, ৮০০ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশ তাঁরা কেজি প্রতি ১,০০০-১,২০০ টাকায় বিক্রি করছেন। তার কম ওজনের ইলিশের দাম কেজি প্রতি ৮০০ টাকা।

বিক্রি কেমন হচ্ছে? দু’জনেই বললেন, ‘‘মানতেই হবে, গতবারের তুলনায় এ বার ইলিশের দর প্রতি কেজিতে কম-বেশি তিনশো টাকা বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় বিক্রি অনেকখানি পড়ে গিয়েছে। যে সব ক্রেতা বছর বছর মরসুমে কেজি কেজি ইলিশ কিনে নিয়ে গিয়েছেন, এ বার তাঁরা নামমাত্র কিনছেন। কী যে হল!’’

শহরের কিছু মাছ ব্যবসায়ী জানাচ্ছেন, ভাল ব্যবসার আশায় তাঁরা শ্রাবণের গোড়ায় প্রচুর পরিমাণে ইলিশ আমদানি করেছিলেন। ভাদ্র শেষ হতে চললেও অর্ধেক ইলিশ তাঁদের কাছে জমে রয়েছে। বিপত্তারণবাবুদের আক্ষেপ, “গত বছর পর্যন্ত ৪০-৫০ কেজি ইলিশ দৈনিক বিক্রি হয়েছে। এ বার সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। মজুত করে রাখা ইলিশ না লোকসানে বিক্রি করতে হয়!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hilsa Bankura Price of Hilsa ইলিশ মাছ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy