আনাজ কেনা চলছে। সিউড়ির বাজারে। নিজস্ব চিত্র।
তীব্র গরমে কমেছে আনাজের উৎপাদন, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে আনাজের দামে। সপ্তাহখানকের মধ্যে প্রায় প্রতিটি আনাজের দামই কেজি প্রতি বেশ কিছুটা বেড়েছে। পাশাপাশি, কমেছে আনাজের জোগানও। বিশেষ করে টোম্যাটো, বেগুন, আদা, রসুন, ধনেপাতা প্রভৃতির দর কার্যত ‘আকাশছোঁয়া’। জেলার প্রায় সব জায়গাতেই বেড়েছে আনাজের দাম। তবে, তুলনামূলক ভাবে কিছুটা দাম কম রামপুরহাট মহকুমা এলাকায়। অন্য দিকে, দিঘা উপকূলে মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরেই জেলার বাজারে ঢুকতে শুরু করেছে টাটকা সামুদ্রিক মাছ। যার ফলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতারা।
বুধবার জেলার বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল সিউড়ি, বোলপুর ও রামপুরহাট তিনটি মহকুমাতেই গত কয়েক দিনে আনাজের দাম বেড়েছে অনেকটাই। এ দিন সিউড়ির কোর্টবাজার এলাকায় সমস্ত জাতের আলুই ২৮-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। টোম্যাটো ৭০-৮০ টাকা, বেগুন ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে৷ অথচ বছরের এই সময় আলু, টোম্যাটো বা বেগুনের দাম এর প্রায় অর্ধেক থাকার কথা বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা৷
বিক্রেতারা জানান, পটল ৬০-৬৫ টাকা, ঢেঁড়স ৪০-৪৫ টাকা, কুমড়ো ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্য বছরে এই সময়ে কুমড়ো ১০ টাকা, ঢেঁড়স ২৫ টাকা এবং পটল ৩৫ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়। পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩৫-৪০ টাকার মধ্যে থাকলেও আদা ২৫০ টাকা, রসুন ২৭০-৩০০ টাকা, কাঁচা লঙ্কা ১৫০-১৭০ টাকা দামে বিকোচ্ছে। ধনেপাতার দাম কেজি প্রতি ৬০০ টাকা ছাড়িয়েছে।
সিউড়ি কোর্ট বাজারের আনাজ বিক্রেতা পীরু আলি বলেন, “প্রচন্ড গরমে আনাজের উৎপাদন এ বার অনেকটাই মার খেয়েছে। ফলে, আনাজের জোগান কমেছে৷ তারই প্রভাব পড়েছে দামের উপরে। এখনই দাম কমার বিশেষ লক্ষণও দেখছি না।”
বোলপুরের বাজারেও এ দিন আনাজের দাম কার্যত একই ছিল। টোম্যাটো ৮০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, ফুলকপি ৪০-৪৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫-৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, আদা ২৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা, রসুন ২৭০-৩০০ টাকা, লঙ্কা ১৫০ টাকা দরে বিকিয়েছে। বোলপুরেও বিক্রেতাদের দাবি, গরমের কারণেই দাম বেড়েছে আনাজের। বর্ষার নতুন আনাজ ওঠার আগে পর্যন্ত দামের খুব একটা হেরফের হবে না।
রামপুরহাটে এ দিন তুলনামূলক ভাবে কম দাম ছিল আনাজের। বিভিন্ন জাতের আলু রামপুরহাটে ২২-৩০টাকা দরের মধ্যে বিক্রি হয়েছে৷ পেঁয়াজ ২৬-৩০ টাকা৷ আদা ১৬০-১৭০ টাকা, লঙ্কা ৯০-১০০ টাকা, টোম্যাটো ৮০-৯০ টাকা, কুমড়ো ২০-২৫ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, ঝিঙে ২৫-৩০ টাকা, পটল ২৫-৩০ টাকা, বিট ৬০-৭০ টাকা, গাজর ৬০-৭০, শসা ৪০-৪৫, চালকুমড়ো ২০-২৫ টাকা পিস, করলা ৬০-৭০ টাকা, পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা, কচু ৫০-৬০ টাকা, ক্যাপসিকাম ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে বিকিয়েছে। তবে রামপুরহাটেও গত তিন-চারদিনের মধ্যে প্রায় সব আনাজের দামই কেজি প্রতি ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার বর্ষার মরসুমের প্রথম টাটকা সামুদ্রিক মাছ ঢুকেছে সিউড়ির বাজারে। দিঘা থেকে পমফ্রেট, ভোলা, খয়রা, সামুদ্রিক মৌরলা এসেছে সিউড়ির মাছের আড়তগুলিতে৷ এই মাছ ঢুকতেই মাছের দামও কমেছে অনেকটাই। এ দিন এই টাটকা পমফ্রেট ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। যেখানে এর আগে পমফ্রেট মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। টাটকা ভোলা মাছ ১৬০-২০০ টাকা কেজি দরে, খয়রা ১২০ টাকা কেজি দরে এবং সামুদ্রিক মৌরলা ১৫০ কেজি দরে বিক্রি হয়েছে সিউড়ির বাজারে।
টিনবাজারের মাছ বিক্রেতা সূর্যদেব ধীবর বলেন, “আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দিঘা থেকে বড় ইলিশ এবং বড় আকারের খয়রা মাছও সিউড়ির বাজারে ঢুকবে। সে ক্ষেত্রে ইলিশের দামও অনেকটাই কমবে।” রামপুরহাটের বাজারেও এ দিন টাটকা লোটে মাছ বিক্রি হতে দেখা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy