সিউড়ির খোলাবাজারে ৫০০ টাকা প্রতি কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে রসুন। সোমবার। নিজস্ব চিত্র ।
মাঝে কাঁদিয়েছিল পেঁয়াজ। সেই পেঁয়াজের দাম কিছুটা স্বস্তি দিলেও এ বার বাড়তে শুরু করেছে রসুনের দাম। সেই দামবৃদ্ধি এতটাই যে, ফের বাজারে গিয়ে পকেটে টান পড়ছে সাধারণ মধ্যবিত্তের।
জেলার খুচরো বাজারে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে রসুন। কোথাও কোথাও একশো গ্রাম রসুনের দাম নেওয়া হচ্ছে ৫৫ টাকাও! পাইকারি বাজারেও ৪০০-৪৩০ টাকা দরে রসুন কিনতে হচ্ছে খুচরো বিক্রেতাদের। নির্দিষ্ট সময়ে চাষ না-হওয়ার কারণেই এই হঠাৎ দামবৃদ্ধি বলে দাবি বিক্রেতাদের। জেলা এনফোর্সমেন্ট শাখারও দাবি, জোগানের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকার কারণেই এই মূল্যবৃদ্ধি। তবে, সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে আশাবাদী আনাজ বিক্রেতারা।
এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের ডিএসপি স্বপন কুমার চক্রবর্তী জানান, এ বছর রসুন চাষের সময় অকাল বর্ষণ হওয়ায়, রসুনের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ফলে যে সময় বাজারে নতুন রসুন চলে আসার কথা, তা আসেনি। অথচ শীতের এই মরশুমে বনভোজন ও বিয়ের প্রচুর অনুষ্ঠান থাকায় রসুনের চাহিদাও অনেক বেশি থাকে। তাঁর কথায়, ‘‘চাহিদা অনুযায়ী জোগান না-থাকার কারণেই এই মূল্যবৃদ্ধি। আগামী দশ দিনের মধ্যে বাজারে নতুন রসুনের জোগান স্বাভাবিক হলে দামও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। এখনও পর্যন্ত কোনও অবৈধ মজুতদারির খবর নেই। আমরা নজর রাখছি।”
রসুনের এই অগ্নিমূল্যের কারণে বিক্রিও নেমেছে তলানিতে বলে দাবি আনাজ বিক্রেতাদের। সোমবার সিউড়ির বড় আনাজ বাজারগুলিতে কেজি প্রতি ৫০০ টাকা দামে রসুন বিক্রি হয়েছে। তবে, পাড়ার মোড়ে বা মুদির দোকানে এবং ছোট ঠেলা গাড়িতে যাঁরা আনাজ বিক্রি করেন, তাঁরা ৫৫০ টাকা কেজি পর্যন্ত দামে বিক্রি করছেন রসুন। আনাজ বাজারে কিছুদিন আগে পর্যন্তও যেখানে প্রায় সকল বিক্রেতাই অল্প পরিমাণে আদা, রসুন ও কাঁচালঙ্কা বিক্রি করতেন, সেখানে এ দিন কয়েক জন বড় বিক্রেতা ছাড়া আর কারও কাছেই রসুন বিক্রি হতে দেখা যায়নি। প্রশ্ন করে জানা গেল, যখন রসুনের দাম স্বাভাবিক ছিল, তখন ক্রেতাদের অনেকেই আনাজের পাশাপাশি অল্প পরিমাণে রসুনও কিনে নিতেন। কিন্তু, রসুনের দর ৫০০ ছোঁয়ায় বিক্রির পরিমাণ অনেকটাই কমে গিয়েছে। তাই লোকসানের আশঙ্কায় আর রসুন বিক্রি করছেন না তাঁরা।
সিউড়ি কোর্ট বাজারের আনাজ বিক্রেতা পিরু আলি বলেন, “সারা বছরই ১৫০-২৫০ টাকার মধ্যে রসুনের দাম ঘোরাফেরা করে। সপ্তাহখানেক আগে পর্যন্তও ৩০০ টাকা কেজি দরে রসুন বিক্রি হয়েছে। কিন্তু, গত সাত দিনে ধাপে ধাপে তা বেড়ে ৫০০ টাকা হয়ে গিয়েছে। তাই বিক্রিও অনেকটা কমেছে। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই নতুন রসুন চলে আসবে। তখন দামও স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
এ দিন বাজারে আনাজ কিনতে আসা অমল দত্ত, দেবাশিস ঘোষেরা বলেন, “মাছ-মাংস রান্নার ক্ষেত্রে রসুন অপরিহার্য। অন্যান্য রান্নার ক্ষেত্রেও রসুন দিলে স্বাদ বেশ ভাল হয়। কিন্তু, রসুনের যা দাম বেড়েছে, তাতে সব রান্নায় ব্যবহার করা অসম্ভব। ফলে, যেটুকু না হলেই নয়, সেটুকু কিনে বাড়ি ফিরছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy