তখনও হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে অ্যাম্বুল্যান্স। নিজস্ব চিত্র
আট মাসের বকেয়া না মেলায় নতুন বছরের প্রথম দিনই নিশ্চয় যান পরিষেবা বন্ধ ছিল বোলপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। পরিষেবা মেলেনি বৃহস্পতিবার সকালেও। পরে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও মৎস্যমন্ত্রীর আশ্বাসে এ দিন দুপুরের পর থেকে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ালেন নিশ্চয় যান চালকেরা।
বোলপুর হাসপাতালে ২৮টি নিশ্চয় যান রয়েছে। সেগুলি প্রসূতিদের নিয়ে যাওয়া ও নিয়ে সার কাজ করে। নিশ্চয় যান চালকদের দাবি, গত ৮ মাস ধরে তাঁদের বকেয়া পাওনা টাকা মেটাচ্ছে না স্বাস্থ্য দফতর। ফলে তাঁদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। নিশ্চয় যান চালক প্রশান্ত মণ্ডল, সিরাজুল শেখ, পরিমল মণ্ডলদের ক্ষোভ, ‘‘এর মধ্যে তেলের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে ৮ টাকা প্রতি কিলোমিটার ভাড়ায় রোগী নিয়ে আসা-যাওয়ায় লোকসান হচ্ছে। তার উপরে ৮ মাস ধরে বকেয়া টাকা না পাওয়ায় আমাদের অবস্থা আরও খারাপ। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েও সুরাহা হয়নি। এ রকম অবস্থায় তাঁদের পক্ষে পরিষেবা দেওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।’’ নিরুপায় হয়েই সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে বুধবার থেকে নিশ্চয় যান পরিষেবা বন্ধ করে দেন বলে তাঁদের দাবি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এই হাসপাতালে নিশ্চয় যান পরিষেবা বন্ধ ছিল। তাই ওই দিন সকাল থেকে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে প্রসূতি থেকে শুরু করে তাঁদের আত্মীয়-পরিজনেদের। তাঁদের অনেককেই বাড়তি টাকা খরচ করে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। কাশীপুর থেকে আসা মোকিদা বিবি, সংসদ গ্রাম থেকে আসা রোহিতা বিবিরা বলেন, ‘‘বুধবার নিশ্চয় যান পরিষেবা বন্ধ থাকায় আমাদের খুবই হয়রানি হয়েছে।’’
নিশ্চয় যান পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরে টনক নড়ে স্বাস্থ্য দফতরের। বোলপুর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তীর্থঙ্কর চন্দ্র জানান, বিষয়টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে জানানো হয়। পরিষেবা সচল করতে মাঠে নামেন চন্দ্রনাথবাবু। তিনি এ দিন নিশ্চয় চালকদের সঙ্গে কথা বলে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। এর পরেই এ দিন দুপুরের পর থেকে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ান চালকেরা। এ বিষয়ে নিশ্চয় যান ইউনিয়নের সম্পাদক রাজু মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও মৎস্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা দুপুরের পরে পরিষেবা চালু করে দিয়েছি। এর পরেও যদি বকেয়া টাকা না মেটানো হয়, আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’
মৎস্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি জানার পরে নিশ্চয় যান মালিক ও চালকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাঁরা যাতে বকেয়া টাকা পেয়ে যান, সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy