Advertisement
১৮ অক্টোবর ২০২৪
Hawkers Eviction

সিউড়ি পুরসভার দ্বৈত অবস্থানে ক্ষুব্ধ দোকানহারা ব্যবসায়ীরা

সিউড়ি সদর হাসপাতালের সামনে একটি খাবারের দোকান চালাতেন বীরেন মাজি। উচ্ছেদ অভিযানে ভাঙা হয়েছে তাঁর দোকান।

সিউড়ি হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তায় উচ্ছেদের পরে ফুটপাত। সারা শহরে রাস্তার ধারে ফুটপাতে

সিউড়ি হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তায় উচ্ছেদের পরে ফুটপাত। সারা শহরে রাস্তার ধারে ফুটপাতে ব্যবসা চালু থাকলেও এই এলাকার ছোট ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। নিজস্ব চিত্র

সৌরভ চক্রবর্তী
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪০
Share: Save:

একই শহরে ফুটপাতের উচ্ছেদ নীতি নিয়ে ভিন্ন অবস্থানের অভিযোগ উঠল পুরসভার বিরুদ্ধে।

সদর শহরে কয়েকজনের ব্যবসায় ছেদ না পড়লেও, কারও রোজগার সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সিউড়ি শহরে ফুটপাত দখলমুক্ত করা নিয়ে পুরসভার এমন দ্বৈত অবস্থান নিয়ে ক্ষুব্ধ দোকানহারা ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, সিউড়ির প্রায় সমস্ত এলাকায় ফুটপাতজুড়ে রমরমিয়ে ব্যবসা চলছে। অথচ সিউড়ি সদর হাসপাতাল সংলগ্ন কিছু দোকান শুরুতেই পুরসভার তরফে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। শুধু সেই দোকানের মালিকদের কেন এই ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুন নবান্নে আয়োজিত প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের পুরসভাগুলি থেকে ফুটপাত দখলমুক্ত করার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা এলাকায় ফুটপাতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। সিউড়ি পুরসভাও তার ব্যতিক্রম নয়। উচ্ছেদের প্রথম দিনেই সিউড়ি সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ফুটপাতের উপরের দোকানগুলি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। সেইমতো ব্যবসায়ীরা মালপত্র সরিয়ে নেন। নির্দিষ্ট ঘোষণা মতো সেই দোকানগুলি ভেঙেও ফেলা হয়। কিন্তু এরপরই ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত আবেদন ও মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা অনুযায়ী ব্যবসায়ীদের কয়েক সপ্তাহ সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। পরে সিউড়ির জেলা স্কুল সংলগ্ন বাজার এলাকায় উচ্ছেদের নোটিস দিতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের বাধার মুখেও পড়তে হয় পুরসভার আধিকারিকদের। এখন সিউড়িতে আপাতত উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ। এখানেই ক্ষোভ দোকানহারা ব্যবসায়ীদের।

সিউড়ি সদর হাসপাতালের সামনে একটি খাবারের দোকান চালাতেন বীরেন মাজি। উচ্ছেদ অভিযানে ভাঙা হয়েছে তাঁর দোকান। বীরেন বলেন, “আমরা যে সরকারি জায়গার উপর দোকান চালাতাম, তা মেনে নিতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের মতোই আরও যাঁরা ফুটপাত দখল করে সিউড়ি শহরে ব্যবসা করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে যখন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তা হলে শুধু আমরা কেন ক্ষতির মুখে পড়ব? আমরা পুরসভার সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে সহযোগিতা করেছিলাম, এটাই কি আমাদের দোষ?” বীরেন জানান, তাঁর ছ’জনের পরিবারে তিনিই একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। গত প্রায় একমাস ধরে ধারদেনা করে চলছে সংসার।

হাসপাতাল মোড়েই মোবাইলের দোকান ছিল রেখান খানের। ভাঙা পড়েছে তাঁর দোকানও। রেহানের বলেন, “বোলপুর বা রামপুরহাট পুরসভায় সমস্ত ফুটপাতে উচ্ছেদ করা হয়েছে, কিন্তু সিউড়ি পুরসভা ব্যবসায়ীদের প্রতি মানবিকতা দেখিয়েছে। শুধু আমরাই সেই মানবিকতা থেকে বঞ্চিত। এখন অন্য কোথাও দোকান করার সামর্থ্য নেই। ফুটপাতে নতুন দোকান খোলার সাহসও নেই। কী ভাবে সংসার চলবে জানি না।”

সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কারও রোজগার কেড়ে নেওয়ার আমরা
পক্ষপাতী নই। তবে, শহরের ফুটপাত সম্পূর্ণ দখল হয়ে যাওয়াও মানা যায় না। দ্রুত আমরা ফের ফুটপাত দখলমুক্তের অভিযান শুরু করব। মুখ্যমন্ত্রী শহরের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় হকার্স কর্নার করার কথা বলেছেন। সেখানে যাতে উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীরা স্থান পান, তা অবশ্যই মাথায় রাখব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Suri Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE