সুহানা পারভিন নেহা। —নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে আহত হয়েছিল সে। শনিবার ভোরে মৃত্যু হল নলহাটির মাঠ কলিঠা গ্রামের ওই কিশোরী, সুহানা পারভিন নেহার (১৬)। মৃতের দাদা সাবের আলি বলেন, “যে ছাত্রদের মোটরবাইক বোনকে ধাক্কা মারে, তারা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে মোটরবাইক চালানোর ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।” জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে।
আত্মীয় ও গ্রামবাসীদের একাংশ জানান, সুহানা পারভিন নেহা ও তার বান্ধবী সাবানূর সুলতানাকে তাদের এক আত্মীয় পরীক্ষার পরে মোটরবাইকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। পিছন থেকে আরও দুই ছাত্র অত্যন্ত দ্রুত গতিতে মোটরবাইক নিয়ে সুহানাদের মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই দুই ছাত্রী ও দুই ছাত্র আহত হয়। স্থানীয়দের সাহায্যে সকলকেই উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সুহানার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পরে তাকে কলকাতায় রেফার করা হয়। এ দিন ভোরে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত না হওয়ায় শনিবার সন্ধে পর্যন্ত দেহ পৌঁছয়নি।
আহত সাবানূর সুলতানা ও রবিউল হকের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা চলছে। তারা শনিবার পরীক্ষা দিতে পারেনি বলে জানিয়েছেন শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক। আর এক আহত নূর কালামকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সুহানারা পরিবারের অভিযোগ, ‘‘ওই দুই ছাত্রের জন্য আমাদের মেয়েটার প্রাণ চলে গেল। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামের অনেকেই।’’
এ দিন মাঠ কলিঠা গ্রামে গিয়ে দেখা যায় সুহানার বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছেন প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা। সুহানার মা কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের কান্নাও থামছিল না। পরিজনেরা জানান, শান্ত ও হাসিখুশি সুহানাকে সকলেই ভালবাসতেন। আক্ষেপ করে গ্রামবাসীদের অনেককেই বলতে শোনা যায়, ‘‘হেলমেট পরে থাকলে হয়ত মৃত্যু হত না। কারণ মাথায় আঘাত বেশি ছিল সুহানার।’’
মৃত ছাত্রীর মা সাবিনা ইয়াসমিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “মেয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে বলেছিল মা পরীক্ষা দিয়ে এসে ভাত খাব। ভালো কিছু রান্না করবে। মাছ রান্না করেছিলাম। আর খাওয়া হল না মেয়ের। যারা এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy