বায়োমেট্রিক হাজিরার এই পদ্ধতিই চালু হবে। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত কর্মীরা নিজেদের উপস্থিতি জানান দেবেন বায়োমেট্রিক যন্ত্রে। কর্মীদের হাজিরার উপর নজরদারি করতে ও কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ফের এমন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে সিউড়ি ব্লকের ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে। বিডিও (সিউড়ি ১) শিবাশিস সরকার জানান, মঙ্গলবার থেকে পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতে এই ব্যবস্থা চালু হয়ে গিয়েছে। বাকি দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে দু-এক দিনের মধ্যে চালু হয়েছে যাবে। কর্মীদের উপস্থিতির উপরে নজর থাকবে।
২০১৯ সালেই সিউড়ি ব্লক বিডিও অফিসে তো বটেই, ওই ব্লকের অন্তর্গত ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করা গিয়েছিল। তাতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কর্মীদের উপস্থিতিতে ইতিবাচক সাড়া মিলেছিল। গোল বাধে কোভিডের পরেই। দফায় দফায় লকডাউন। কর্মীদের অনিয়মিত হাজিরা এই ব্যবস্থাকে আর সচল রাখতে দেয়নি। জানা গিয়েছে, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে লাগানো বায়োমেট্রিক যন্ত্রগুলিতেও নানা সমস্যা দেখা দেয়। সেসব ঠিক করে ফের পুরোনো অভ্যাসে ফিরতে চাইছে ব্লক প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “জেলাশাসকদের কার্যালয়ে বহু ধরেই এই পদ্ধতি চালু রয়েছে। জেলার অন্য কিছু অফিসে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু রয়েছে। তবে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে এমন হাজিরা চালুর উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।’’ তাঁর সংযোজন, “কিছু কর্মী আছেন যাঁরা উদয়াস্ত খাটেন, আর কিছু কর্মী আছেন যাঁরা সুযোগ পেলে ফাঁকি দেন। এই পদ্ধতি চালু হওয়ায় একটা সমতা ফিরবে।” ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রথম যখন বায়োমেট্রিক চালু হয়, তখন ব্লক অফিসের কর্মীদের একাংশ সময়ে আসছিলেন না। অনেকে নির্ধারিত সময়ের আগেই অফিস থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। তাতে পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছিল। বিডিও বলছেন, ‘‘তাই বায়োমেট্রিক হাজিরার কথা ভাবি ব্লক ও পঞ্চায়েতে। কিন্তু কোভিডের ধাক্কায় সব বন্ধ হয়ে যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাই আগের ব্যবস্থা ফিরছে।’’
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গড়ে ৭ থেকে ৮ জন কর্মী রয়েছেন। সব মিলিয়ে ৫০-৬০ কর্মীর উপর নজরদারি করবে যন্ত্র, যা কর্মসংস্কৃতির উপযুক্ত পরিবেশ গড়তে সাহায্য করবে বলে মত আধিকারিকদের। বায়োমেট্রিক হাজিরার প্রশ্নে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দু’ধরনের প্রতিক্রিয়াই পাওয়া গিয়েছে কর্মীদের থেকে। অনেকে বলছেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পঞ্চায়েতের কাজ বাঁধা সম্ভব নয়। নানাবিধ কাজ দেখভাল করতে কর্মীদের অনেক সময়েই নির্ধারিত সময়ের বাইরে কাজ করতে হয়। অনেকেই কাজের প্রতি সহানুভূতিশীল ও দায়িত্বশীল।’’ তবে কর্মীদের অনেকেই মানছেন, তাঁদের মধ্যে কিছু কর্মী আছেন, যাঁরা সত্যিই সুযোগসন্ধানী। নিয়মের জালে পড়লে অভ্যাস বদলায় কি না সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy