বিড়ির জন্য দোকান লুট করে গ্রেফতার যুবক। —নিজস্ব চিত্র।
আকণ্ঠ পান করে ধূমপানের নেশা চেপে বসেছিল মাথায়। পকেট হাতড়েছেন। বাড়িতে তন্নতন্ন করে খুঁজে একটিও বিড়ি পাননি। শুধু একটি বিড়ির জন্য বাজারে গিয়ে একের পর এক দোকানের দরজা ভেঙে চুরি করেছিলেন। পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন তিনি। অবশেষে বাঁকুড়ার চকবাজারের ‘সিরিয়াল চুরি’র ঘটনার কিনারা করল পুলিশ। জানা গিয়েছে, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়েছে চোরকে। সুরজ দে নামে ওই অভিযুক্তকে রবিবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে তাঁর তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে। বাঁকুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র মাচানতলার অদূরে থাকা চকবাজারে দোকান খুলতে গিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দেখেন একটি মাছের আড়ত, একটি ডিমের দোকান এবং একটি মশলার দোকানের দরজা ভাঙা। মাছের আড়তে রুই-কাতলা মাছে হাতে পড়েনি। কিন্তু ফ্রিজ়ে থাকা ইলিশ, পমফ্রেট এবং ভেটকি মাছ চুরি গিয়েছে। ডিমের দোকান থেকে খোয়া যায় কয়েকটা ডিম। মশলার দোকানে চুরি যায় কাজুর বাক্স। পাশাপাশি প্রতিটি দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে অল্প কিছু কিছু করে টাকাও লোপাট হয়। এমন চোরকে ধরতে তদন্ত শুরু করে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। বস্তুত, পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে ওই বাজারে পর পর তিন দোকানে চুরির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ব্যবসায়ীরা।
তবে তদন্ত শুরু করে তিন দিনের মধ্যে চোরকে ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। চুরির সম্ভাব্য সময় বুঝে শুরু হয় সিসিটিভি ফুটেজ দেখার কাজ। তার পর শনিবার বাঁকুড়া শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পোদ্দারপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় সুরজকে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চুরির নেপথ্যের কাহিনি শুনে তাজ্জব বনে যান তদন্তকারীরা। পুলিশের কাছে সুরজ স্বীকার করেন, চুরি তিনি একাই করেছেন। কারণ? পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত পোদ্দারপাড়ায় নিজের বাড়িতে বসে মদ্যপান করেন সুরজ। মদের নেশা ধরতেই মাথায় চেপে বসে ধূমপানের ইচ্ছা। কিন্তু পকেট হাতড়ে বিড়ি খুঁজে-না পেয়ে বাড়ি তন্নতন্ন করেছেন। কিন্তু একটা বিড়িও মেলেনি। নেশা করবেন বলে বাজারের দিকে হাঁটা দেন। কিন্তু তখন একটি দোকানও খোলা পাননি। ঠিক তখনই তাঁর মাথায় খেলে যায় চুরির বদবুদ্ধি।
পুলিশকে সুরজ জানিয়েছেন, একটি লোহার রড জোগাড় করেছিলেন। সেটা দিয়ে পর এক দোকানের দরজা ভেঙে বিড়ির খোঁজ চালাতে শুরু করেন তিনি। সুরজের দাবি, মদের নেশায় তিনি এতটাই মত্ত ছিলেন যে, মাছের আড়তেও বিড়ির খোঁজ করেছেন। তার পর গিয়েছেন ডিম এবং মশলার দোকানে। কোথাও বিড়ি পাননি। তাই রাগের চোটে অল্প অল্প করে দোকানের জিনিস চুরি করে বাড়ি চলে যান।
পুলিশ সূত্রে খবর, একটি কাজুর বাক্স, কিছু ডিম এবং কিছু টাকা চুরি করে বাড়ি নিয়ে যান অভিযুক্ত। কিন্তু সুরজ নগদ টাকা এবং কাজু চুরির কথা অস্বীকার করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy