Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

দৃষ্টিহীন পিউয়ের পাশে কলকাতার মহানাগরিক

পুরুলিয়ায় গত কয়েক বছর ধরে নজরকাড়া পুজো হচ্ছে জেলার কয়লাখনি অঞ্চল নিতুড়িয়া ব্লকে। পুলিশের হিসাবেই, গত কয়েক বছরে পুজোর কয়েকটা দিনে লক্ষাধিক দর্শক ভিড় জমিয়েছিলেন পুজো মণ্ডপগুলিতে। নিতুড়িয়ার পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম বড় ভামুরিয়া বাথানেশ্বর সর্বজনীন।

প্রত্যয়ী: পিউয়ের পাশে পুরমন্ত্রী। শনিবার মহাজাতি সদনে। নিজস্ব চিত্র

প্রত্যয়ী: পিউয়ের পাশে পুরমন্ত্রী। শনিবার মহাজাতি সদনে। নিজস্ব চিত্র

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:১৯
Share: Save:

তিন বছর বয়সে চোখে হঠাৎই কালো স্পট। অস্ত্রোপচারের পরেও সারেনি তা। ক্রমে দু’চোখেই দৃষ্টি হারান পিউ চক্রবর্তী। বীরভূমের দুবরাজপুরের কোটা গ্রামের বাসিন্দা পিউ অদম্য ইচ্ছার জোরে উচ্চমাধ্যমিকে ৮০ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেয়ে পাস করেছেন। এখন বীরভূম মহাবিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে পড়ছেন। শুক্রবার কলকাতার মহাজাতি সদনের অ্যানেক্স হলে পিউকে সংবর্ধনা জানাল বীরভূমের বাসিন্দাদের নিয়ে কলকাতায় গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান ‘বীরভূমি’। শুধু পিউ নন, জেলার বিভিন্ন ব্লকের ৩৪ জন পড়ুয়া যাঁরা অভাব, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯০ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেয়ে সফল হয়েছেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে পক্ষ থেকে তাঁদের সকলকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক পুরষ্কার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। জেলার বাসিন্দা তথা প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমলকুমার মুখোপাধ্যায় পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোমাদের দেখে বলতে পারি বীরভূম আর পিছিয়ে নেই।’’ কৃতীদের হাতে মানপত্র তুলে দেওয়ার সময় মন্ত্রী তথা কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ জানতে পারেন পিউ দৃষ্টিহীন। হায়দরাবাদে চিকিৎসার জন্য রবিবার রওনা দেবেন তিনি।

তখনই পুরমন্ত্রী ঘোষণা করেন— পিউয়ের চোখের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ তাঁর মেয়র রিলিফ ফান্ড থেকে দেবেন। বীরভূমির সংগঠকদের তা দেখার দায়িত্ব দেন। দিন কয়েক আগে সাঁইথিয়ার এক সদ্যোজাতের চিকিৎসার জন্য লক্ষাধিক টাকা দিয়েছেন মেয়র। আরেক পড়ুয়া মৌমিতা মণ্ডল গৃহহীন, গোয়ালঘরে থেকে পড়াশোনা চালিয়েছেন জেনে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশবাবু তাঁকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

পাইকরের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন চলতে পারেন না। উচ্চমাধ্যমিকে ৯১ শতাংশ নম্বর পেয়ে বর্তমানে মুরারই কলেজে ইংরেজি অনার্স নিয়ে পড়ছেন তিনি। কোলে তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁকে দেওয়া হয় সংবর্ধনা। ফিরহাদ হাকিম এগিয়ে গিয়ে তাঁর হাতে মানপত্র তুলে দেন। পরে দর্শকাসনে তাঁর পাশে গিয়ে কিছুক্ষণ কথাও বলেন। ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ মেধাবী সিউডির কড়িধ্যার মিলন দত্তকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

বীরভূমির সদস্য চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী জেলার উন্নয়নে সকলকে সামিল হওয়ার আবেদন জানান। এ বছর জেলা থেকে রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন পাওয়া দুই শিক্ষক দীনবন্ধু বিশ্বাস এবং বর্ণালী রুজকেও সম্মান জানানো হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Firhad Hakim Mahajati Sadan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy