সিউড়ি সদর হাসপাতালে পরীক্ষা দিচ্ছে শুভ্রদীপ দাস। নিজস্ব চিত্র।
সোমবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে অসুস্থ পড়লেন জেলার চার পরীক্ষার্থী। তার মধ্যে তিন জন পরীক্ষার্থী হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দিলেও অন্য জন পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি।
সোমবার ছিল দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা। কিন্তু তার আগেই রবিবার পেটের যন্ত্রণায় কাহিল হয়ে পড়ে সিউড়ির চন্দ্রগতি মুস্তাফি মেমোরিয়াল হাই স্কুলের ছাত্র শুভ্রদীপ দাস। বেশ কিছুদিন ধরেই অ্যাপেন্ডিক্সের সমস্যায় ভুগছিল সে। পরীক্ষা শেষ করেই অস্ত্রোপচার হওয়ারও কথা ছিল তাঁর। কিন্তু প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় রবিবারই সিউড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ঘটনার কথা জানান হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষককেও।
বীরভূম জেলা স্কুলে ছিল শুভ্রদীপের পরীক্ষাকেন্দ্র। জানান হয় সেখানেও। সোমবার শরীরের পরিস্থিতি একটু ভাল হওয়ার পরেই পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে শুভ্রদীপ। কিন্তু বেসরকারি নার্সিংহোম থেকে যেহেতু পরীক্ষা দেওয়া যায় না, তাই শিক্ষকদের পরামর্শ মেনে তাঁকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থাতেই পরীক্ষা দেয় শুভ্রদীপ। পরীক্ষার শেষে সে বলে, “কিছুটা অসুবিধা হয়েছে, কিন্তু আমি পরীক্ষাটা দিতে চেয়েছিলাম। আশা করি আগামী পরীক্ষাগুলি পরীক্ষাকেন্দ্রেই দিতে পারব।”
বোলপুর মহকুমা হাসপাতালেও এ দিন পরীক্ষা দেয় এক ছাত্রী। যাদবপুর বান্ধব হাই স্কুলের ছাত্রী ইন্না খাতুনের পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল বোলপুরের শ্রীনন্দা হাই স্কুল। এ দিন পরীক্ষা শুরুর মিনিট দশেক পরে পেটে ব্যথা শুরু হয় ইন্নার। কিছু ক্ষণ পরেই শ্বাসকষ্টও শুরু হয়। এর পরই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে। উচ্চ মাধ্যমিকের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইসারি কমিটিকে জানান হয় পুরো বিষয়টি। তাঁদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দেন ইন্না। পরীক্ষার পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রামপুরহাটা গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী প্রেরণা সরকারের পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল রামপুরহাট হাই স্কুলে। এ দিন সকাল থেকেই বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় প্রেরণার। পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে না বুঝতে পেরে স্কুল কর্তৃপক্ষকে পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানান হয়। এর পরেই তাঁকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয় এবং সেখান থেকেই পরীক্ষা দেয় প্রেরণা।
তবে বাকিদের মতো পরীক্ষা দেওয়া হল না লাভপুরের হাতিয়া হাই স্কুলের আজিমা খাতুনের। শারীরিক অসুস্থতার কারণে পরীক্ষার মাঝ পথেই খাতা এবং প্রশ্নপত্র জমা দিয়ে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিতে যেতে হয়। সোমবার লাভপুরের চৌহাট্টা হাই স্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছিল আজিমা। পরীক্ষা দিতে দিতেই দুপুর ১২ টা নাগাদ অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। পরিবারের লোকেদের খবর পাঠান হয়। তাঁরা এসে খাতাপত্র জমা দিয়ে আজিমাকে চিকিৎসার জন্য সিউড়ির একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান।
চৌহাট্টা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা ভেনু সুপারভাইজার মহম্মদ আবুল খায়ের জানান, বাংলা পরীক্ষার দিনেও ওই পরীক্ষার্থী মাথা ঘোরা এবং দুর্বলতা জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আজও একই উপসর্গ দেখা দেয়। তার জন্য দু’দিনই আলাদা ঘরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু দু’দিনই শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে পারেনি আজিমা। আজিমার বাবা শেখ সালাম বলেন, “মেয়ে কয়েক দিন ধরেই দূর্বল হয়ে পড়েছিল। আমরা আজ পরীক্ষা দিতে আসতেও বারণ করেছিলাম। কিন্তু শোনেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy