বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া জমিতে পড়ে রয়েছে কাটা ধান। মহম্মদবাজারের আসেঙ্গায় বুধবার। ছবি: পাপাই বাগদি
মঙ্গলবার সকাল থেকেই আকাশে মেঘের ঘনঘটা ছিল। মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি হলেও চাষের কাজে, বিশেষ করে চাষিদের মাঠের ধান ঘরে তুলতে তেমন অসুবিধায় পড়তে হয়নি। কিন্তু, নিম্নচাপের প্রভাবে মঙ্গলবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি বুধবারও দিনভর চলায় বীরভূমের ধানচাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। অনেকেই বলছেন, মাঠের ধান ঘরে তোলার আগেই পাকা ধানে মই দিয়ে দিল এই বৃষ্টি।
বুধবার ঠিক কত বৃষ্টি হয়েছে, তার হিসাব এখনই দিতে পারেনি জেলা কৃষি দফতর। তবে, কৃষি আধিকারিকদের মতে, সিউড়ি ও বোলপুরের তুলনায় রামপুরহাট মহকুমা এলাকায় বৃষ্টি বেশি হয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের উপ অধিকর্তা (প্রশাসন) শিবনাথ ঘোষ জানান, সাম্প্রতিক নিম্নচাপে জেলায় বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস ছিল না। দফতর সূত্রের খবর, রামপুরহাট মহকুমায় বেশির ভাগ জমির ধান মাঠ থেকে ঘরে তোলা হয়েছে। তুলনামূলক ভাবে সিউড়ি ও বোলপুর মহকুমা এলাকায় এখনও মাঠে অনেক ধান পড়ে আছে। কৃষি আধিকারিকদের মতে, যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তাতে মাঠে পড়ে থাকা কাটা ধানের বেশি ক্ষতি হবে। পাশাপাশি জমিতে থাকা পাকা ধান ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনাও আছে।
অন্য দিকে, যে সমস্ত জমি থেকে ধান তোলা হয়ে গিয়েছে, এই বৃষ্টিপাতের ফলে ওই সমস্ত জমি ডালশস্য, সর্ষে চাষের পক্ষে অনুকূল হবে। যে-সব জমিতে ইতিমধ্যেই সর্ষে, ডালশস্য চাষ হয়েছে, সেখানেও বৃষ্টি উপকারে লাগবে। আলুর ক্ষেত্রেও জমিতে জল জল না-দাঁড়ালে সমস্যা হবে না বলেই কৃষি আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন।
তবে, ধানচাষিরা পড়েছেন বেজায় মুশকিলে। পাড়ুই, খয়রাশোল, ময়ূরেশ্বর, লাভপুর, মহম্মদবাজার এলাকার চাষিরা জানান, যে-ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে আগামী কয়েক দিন জমিতে থাকা ধান কাটাই যাবে না। আবার যে সমস্ত জমিতে কাটা ধান মজুত করা আছে বা জমিতে কাটা অবস্থায় আঁটি করার জন্য বিছানো আছে, সেখানেও ধানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। রামপুরহাট থানার আটলা গ্রামের ধানচাষি পার্থসারথি মণ্ডল বলেন, ‘‘জমিতে জল দাঁড়িয়ে গেলে মাঠে পড়ে থাকা এক বিঘে ধান ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। খুবই চিন্তায় আছি।’’ ক্ষতির আশঙ্কায় ভুগছেন ইলামবাজারের জয়দেব অঞ্চলের চাষি সন্তোষ পাল, পাড়ুইয়ের মহুল্যা গ্রামের শেখ সফিউল্লা, লাভপুরের দরবারপুরের হোসেন আলি, ময়ূরেশ্বরের কুলিয়াড়ার ধীরেন দাস কিংবা মহম্মদবাজারের ভুতুড়া এলাকার চাষি লক্ষ্মীকান্ত রায়, খয়রাশোলের রুপোশপুরের চাষি মহাদেব দাসেরাও।
মাড়গ্রাম থানার চাঁদপাড়া গ্রামের সমর সিংহ বলছিলেন, ‘‘বৃষ্টির আশঙ্কায় আগাম বেশি শ্রমিক লাগিয়ে ধান কেটে ঘরে তুললেও এখনও মাঠে পাঁচ বিঘে জমিতে ধান কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। এই বৃষ্টিতে কী ভাবে কাটা ধান ঘরে তুলব, বুঝে উঠতে পারছি না। কারণ, জমিতে জল দাঁড়িয়ে যাবে।’’ আটলা গ্রামের কাঞ্চন মণ্ডলের প্রায় ২৫ বিঘে জমির ধান কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। তিনিও ধান ঘরে তোলার বিষয়ে উদ্বেগে রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy