সিউড়িতে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমে এসে তৃণমূলের জেলবন্দি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে আক্রমণ করলেন সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটে খাতা খুলতে না পারলেও বিজেপি ও তৃণমূলকে একযোগে আক্রমণ যে তাঁরা চালিয়ে যাবেন তাও জানান মীনাক্ষী। তাঁর কথায়, ‘‘জিতে গেলেই চোর কখনও সাধু হয়ে যায় না।’’ তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘ওরা নিজেরা কী ভাবে শূন্য থেকে বেরিয়ে আসবে তা নিয়ে ভাবুক। আমাদের নিয়ে না ভাবলেও চলবে।
বৃহস্পতিবার ডিওয়াইএফের মহকুমা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন উপলক্ষে প্রথমে নলহাটি এবং পরে সিউড়িতে দু'টি রুদ্ধদ্বার সভার আয়োজন করা হয়। দু'টি সভাতেই বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী ও রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা। সংগঠন সূত্রে খবর, আগামী দিনে সংগঠন কোন পথে চলবে এবং সংগঠনের সদস্যদের প্রধান কর্তব্য কী হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় দু’জায়গাতেই।
সম্প্রতি একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন অনুব্রত। তা নিয়ে তাঁর অনুগামীদের উৎসাহও দেখা গিয়েছে। সেই প্রসঙ্গেই মীনাক্ষীর কটাক্ষ, ‘‘একজন চোর বা অপরাধী ছাড়া পেলে অন্য চোর বা অপরাধীদেরই উৎসাহ বাড়ে। যারা উচ্ছ্বাস করছে তারা কারা, তা এই উচ্ছ্বাস দেখলেই বোঝা যায়।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় বাজেটে শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নকে কার্যত গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। রাজ্য ও কেন্দ্র উভয় সরকারই শিক্ষাকে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ মীনাক্ষীর।
রাজ্যে বাম-কংগ্রেস জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও নিজের মতামত জানান মীনাক্ষী। অধীর চৌধুরীর সঙ্গে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরোধ প্রসঙ্গে মীনাক্ষী বলেন, “জোট সম্পর্কে যা বলার দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব বলবেন, তবে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে যে গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি একসঙ্গে সে মানুষের রুটি-রুজির পক্ষে লড়াই করেছেন, তার প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।”
সম্প্রতি কেন্দ্রের পেশ করা বাজেটকেও আক্রমণ করেন মীনাক্ষী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নির্বাচনের আগেই বলেছিলাম বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিতে বেকারদের চাকরি দেওয়ার কোনও ভাবনাই নেই। গবেষণা বা শিক্ষা বিষয়ে আরও বেশি মানুষকে যুক্ত করা, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়ে আসার কোনও ভাবনা এই সরকারের নেই। কেন্দ্রীয় বাজেটে সেটাই প্রমাণ হয়ে গেল।’’
লোকসভা ভোটে সিপিএম যে ক’টি আসনে লড়েছিল তার মধ্যে দু’টি আসন ছাড়া সব আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে সিপিএমের। তবে লোকসভা ভোটে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি বলে দাবি মীনাক্ষীর। তিনি বলেন, “টাকা ছড়িয়ে, পুলিশ-প্রশাসনকে পকেটে পুরে জিতে নিয়ে যারা সাধারণ মানুষের রুটি-রুজিকে আক্রমণ করে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা যেভাবে আমাদের বক্তব্য মানুষের সামনে তুলে ধরছিলাম, সে ভাবেই চালিয়ে যাব।”
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা কটাক্ষ, “তৃণমূল কী ভাবে জিতেছে, তৃণমূল মানুষের পাশে আছে কি না, এ বিষয়ে আমাদের সিপিএমের কাছে শংসাপত্র প্রয়োজন নেই। মানুষ আমাদের দু'হাত ভরে আশীর্বাদ দিয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy