নীল জলরাশির মাঝে দু’পাশে ফুঁড়ে উঠেছে সবুজ জঙ্গলে ঢাকা পাহাড়। কানে ভেসে আসে শুধুই পাখিদের কলরব। এমনই মনোরম প্রকৃতি মন কেড়েছিল প্রশাসনিক আধিকারিকদের। প্রশাসনের উদ্যোগে তাই পুরুলিয়ার মানবাজার ২ ব্লকের ধাদকিডি গ্রামের অদূরে দুর্গাডি পাহাড়ের উপরে গড়ে উঠেছে ‘ইকো টুরিজ়ম পার্ক’। নতুন এই পর্যটন কেন্দ্রের নাম রাখা হয়েছে দুর্গাডি পর্যটন কেন্দ্র। কংসাবতী জলাধারের পাশে জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ের উপরে কটেজে রাত কাটাতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বুকিং-ও।
বোরো থেকে বড়গেড়িয়া হয়ে ধাদকিডি প্রায় ১৪ কিমি পথ। সেটুকু পার হলেই পৌঁছনো যাবে দুর্গাডি পর্যটন কেন্দ্র। সামনের ক্যানভাস জুড়ে শুধুই নীল জলরাশি। রয়েছে একাধিক ছোট-বড় পাহাড়। সেখানকার কটেজ চত্বর থেকে পর্যটকেরা উপভোগ করতে পারবেন পাহাড়, জঙ্গল ও মুকুটমণিপুরের জলাধারের নীল জলরাশি।
জলাধারের মাঝে মাঝে রয়েছে ছোট ছোট দ্বীপ। পাহাড়ের গা বেয়ে থাকা জলাধারের জলেও নামা যাবে। ছোট ছোট দ্বীপের পাশ দিয়ে মৎস্যজীবীদের নৌকা বেয়ে চলে যাওয়াও দেখতে বেশ লাগে। বাড়তি আকর্ষণ পড়ন্ত বিকেলে কটেজের বাইরে চেয়ারে বসে চায়ের কাপ হাতে সূর্যাস্ত দেখা। সন্ধ্যা নামলে চাঁদের আলোয় ঝিলমিলিয়ে ওঠে জলাধারের জলরাশি। সকাল হলে কটেজের জানলায় টোকা মারবে পাখিও। জানালা দিয়ে উঁকি মারলেই জলাধারের মাঝে জেগে থাকা ছোট ছোট দ্বীপ দেখা যাবে চোখের সামনে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মুকুটমণিপুরের মতোই এই জায়গাতেও কংসাবতী জলাধার, পাহাড় ও জঙ্গল ঘিরে বৃহত্তর পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশাসন আরও সক্রিয় হলে এবং ব্যাপক ভাবে প্রচার করলে দ্বিতীয় মুকুটমণিপুর উপহার পেতে পারেন পর্যটকেরা।
জলাধারের অন্যপাড়ে রয়েছে ঘাট গোবিন্দপুর, মানবাজারের দোলাডাঙা, মুকুটমণিপুর। এ পাড়ে রয়েছে ধাদকিডি, পাহাড়কোল, পিড়রা, বুরুডি, শুশুনিয়া। কংসাবতী জলাধারের পাশে এই বৃহৎ এলাকা জুড়ে একাধিক পর্যটন কেন্দ্র গড়া যেতে পারে। ধাদকিডি ও পাহাড়কোর— দুই পাহাড়ে মধ্য ‘রোপওয়ে’ চালু করলে সেখানে পাহাড়, জঙ্গল ও নীল জলরাশির সৌন্দর্য রোমাঞ্চিত করবে পর্যটকদের।
প্রশাসন সূত্রে জানাগিয়েছে, মানবাজার ২ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে সেখানে ছ’টি কটেজ তৈরি করা হয়েছে। পাশে একটি পার্কও তৈরি করা হয়েছে। সেখানে আগ্রহী পর্যটকদের জন্য ১০টি তাঁবুও বসানো হয়েছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে পর্যটকেরা বুকিং শুরু করে দিয়েছেন। দুর্গাডি পর্যটন কেন্দ্রও তাঁদের বরণ করতে প্রস্তুত।
বিডিও (মানবাজার ২) গোলাম গওসল আজম বলেন, “আপাতত সেখানে ছ’টি কটেজ, একটি চিল্ড্রেন পার্ক ও তাঁবু বসানো হয়েছে। রাজ্য পর্যটন দফতরের ওয়েবসাইট থেকে কটেজ বুক করা যাচ্ছে। পর্যটকদের দুই পাহাড়ে মাঝে নৌকাবিহারের পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি জানান, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরুষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তার দিকটি দেখতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy