Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2020

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পাশে আছেন সুলতাদি

সংসার, নিজের অসুস্থ শিশুকে সামলে এই যে অন্যের সন্তানদের জন্য ঘর ছেড়ে যখন-তখন বেড়িয়ে পড়েন, বাড়িতে সমস্যা হয় না? সুলতাদেবী জানান, স্বামী বিকাশ পালের সমর্থনই তাঁর প্রেরণা।

সহায়: সুলতা পাল। নিজস্ব চিত্র।

সহায়: সুলতা পাল। নিজস্ব চিত্র।

তারাশঙ্কর গুপ্ত
ইন্দাস শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

সন্তান বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হয়েছে শুনে যখন বাড়ির লোকেদের মাথায় হাত পড়ে যায়, সে সময়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ান তিনি। কোথায় গেলে ওই সব শিশুকে সুস্থ রাখার জন্য সরকারি সুবিধা মিলবে, তার খোঁজ দেন। এ ভাবেই ইন্দাস ব্লকের আমরুল পঞ্চায়েতের কেনেটি গ্রামের সুলতা পাল গত বাইশ বছর ধরে বিশেষ চাহিদা সম্পন্না শিশুদের সাহায্য করকে করতে হয়ে সবার কাছে হয়ে উঠেছেন— ‘সুলতাদি’।

ইন্দাস চক্রের দুই বিশেষ শিক্ষক চন্দনকুমার ঘোষ এবং হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘আমরুল পঞ্চায়েতের শারীরিক বা মানসিক ভাবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য কোনও কর্মসূচিতে গেলে সুলতাদি আমাদেরও সাহায্য করেন। ওই সব শিশু যাতে সরকারি প্রশিক্ষণ পায়, সে জন্য বাবা-মায়েদের উৎসাহ দেন। নিজের ইচ্ছাতেই এই কাজ করে যাচ্ছেন।’’

এক জন আটপৌরে বধূর এই কাজে নামার কারণ কী? সুলতাদেবী বলেন, ‘‘বিশেষ শিশুদের কষ্ট, তার বাবা-মায়ের কষ্টটা আমি বুঝি। আমার ২২ বছরের ছেলে সেরিব্রাল পালসির সমস্যায় ভুগছে। তাকে ভাল রাখতে কম দৌড়ঝাঁপ করতে হয়নি। তাই যখনই শুনি এলাকার এই ধরনের শিশুরা কিছু বুঝতে না পারলে, জেদ করলে বড়রা বকাবকি করছেন, সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যাই। অভিভাবকদের বোঝাই কী ভাবে ওদের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে, কী ভাবে যত্ন নিতে হবে। কোথায় গেলে সরকারি সাহায্য পাওয়া যাবে, তা-ও জানাই।’’

পাত্রগাতি গ্রামের এক বিশেষ শিশুর মা মানা ঘোষ বলেন, ‘‘ছেলের মানসিক বিকাশ আর পাঁচটা বাচ্চার মতো নয় দেখে, কী করব ভেবে অসহায় হয়ে পড়েছিলাম। সুলতাদি জানিয়েছিলেন, প্রশিক্ষণ দিলে উন্নতি সম্ভব। বছর কয়েকের মধ্যে অনেক উন্নতি হয়েছে। দিদিকে দেখলে বাচ্চাটা খুব খুশি হয়।’’

সংসার, নিজের অসুস্থ শিশুকে সামলে এই যে অন্যের সন্তানদের জন্য ঘর ছেড়ে যখন-তখন বেড়িয়ে পড়েন, বাড়িতে সমস্যা হয় না? সুলতাদেবী জানান, স্বামী বিকাশ পালের সমর্থনই তাঁর প্রেরণা। বিকাশবাবু বলেন, ‘‘নিজের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছেলের দেখাশোনা, চাষি পরিবারে কাজ সামলে স্ত্রী যে অন্যের শিশুদের পাশে দাঁড়ায়, এটা গর্বের।’’

আমরুল এলাকার বাসিন্দা তুফান মেদ্যা ও মন্টু মেদ্যার দুই ছেলে শারীরিক ভাবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। তাঁরা বলেন, ‘‘সুলতাদির কাছেই জেনেছি কী ভাবে সরকারি সাহায্য পাওয়া যায়। উনি আমাদের অভিভাবক।’’ সুলতাদেবী বলছেন, ‘‘২০১২ সালে কিছু দিন বিশেষ শিশুদের জন্য একটি সরকারি প্রকল্পে কাজের সুবাদে প্রশিক্ষণ পেয়েছিলাম। তাই ভাল ভাবে সাহায্য করতে পারি। ঈশ্বর যে বিশেষ শিশুর বাবা-মায়েদের বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছেন, এটাই তাঁদের বোঝাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Specially abled children Durga Puja 2020 House wife
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy