দূষণ: লালবাঁধে (বাঁদিকে)। বাঁকুড়ার গন্ধেশ্বরী নদীতে (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
কয়েক কোটি টাকা খরচে সংস্কার করা বিষ্ণুপুরের লালবাঁধ প্রতিমা বিসর্জনের জেরে দূষিত হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসন কেন ঐতিহ্যবাহী বাঁধে বিসর্জন বন্ধ করতে পারল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
বিজয়ার পরে, দু’দিন কেটেছে। কিন্তু বুধবারও লালবাঁধের জলে বেশ কিছু প্রতিমার কাঠামো ভাসতে দেখা গিয়েছে। কাঠামোর খোঁচা সামলে কোনও রকমে স্নান সারেন বাসিন্দারা। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত বলেন, ‘‘লালবাঁধে বিসর্জন করা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটিগুলিকে দ্রুত জল থেকে কাঠামো তুলে নিতে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে পুজোর আগে বিষয়টি নিয়ে পুজো কমিটিগুলিকে সচেতন করা হবে।’’
বিষ্ণুপুর পুরসভার বিদায়ী উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ‘‘পুরসভা থেকে লালবাঁধ পরিষ্কার করা হবে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে প্রায় ৩ কোটি ১৭ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে কয়েকবছর আগে লালবাঁধের সংস্কার করা হয়। এ দিন সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধে ভাসছে প্রতিমার কাঠামো, খড়। দড়ি, পুজোর ফুল, শালপাতা, প্লাস্টিক, থার্মোকল ইত্যাদি।
লালবাঁধে নিত্য দিন স্নান করতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম দে, পঙ্কজ দাস বলেন, ‘‘চোখের সামনে লালবাঁধের চেহারা ফিরল। অবাক লাগে তার পরেও স্থানীয় পুজো উদ্যোক্তাদের সচেতনতার অভাব দেখে। লালবাঁধ বিষ্ণুপুরের গর্বের দর্শনীয় স্থান। তা হলে কেন এই বাঁধকে নোংরা করা হচ্ছে?’’
লালবাঁধে প্রতিমা বিসর্জন করা এক পুজো কমিটির সম্পাদক শঙ্খজিৎ রায় বলেন, ‘‘লালবাঁধে দীর্ঘদিন ধরে অনেকেই প্রতিমা নিরঞ্জন করছেন। এ বারেও তাই ফেলেছি। প্রশাসন তা জানত। তবে লালবাঁধ সংস্কারের পরে আমাদেরও সেখানে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে খারাপ লেগেছে। এ বার বিকল্প চিন্তা-ভাবনা করছি।’’
বাঁকুড়া জেলায় পরিবেশ নিয়ে কাজ করা এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য অনির্বাণ পাত্র বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরের পরিবেশের উপরে লালবাঁধের প্রভাব অনেকখানি। এই জলাশয় শহরের ভূগর্ভস্থ জলস্তরের যেমন ভারসাম্য রাখে, তেমনই মরসুমি পাখিদেরও আশ্রয়স্থল। বহু পর্যটক শুধু পাখি দেখতেই লালবাঁধে আসেন। তবে শুধু প্রশাসন নয়, লালবাঁধকে দূষণ থেকে বাঁচাতে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy