শান্তিনিকেতনের বনডাঙায় শিবির। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। সে দিকে লক্ষ্য রেখে, সবার কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে, শারদোৎসব শেষ হতেই মঙ্গলবার থেকে রাজ্য জুড়ে আবার শুরু হল দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। ব্যতিক্রম নয় বীরভূমও। প্রকৃত দাবিদার যেন বঞ্চিত না হন এবং কাউকে যেন বাড়িতে কোনও সুবিধা দেওয়া না হয়— সে দিকে আধিকারিকদের বাড়িতে নজর রাখতে বলা হয়েছে। প্রথম দিনেই জেলা জুড়ে ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের। আগামী এক মাস ধরে চলবে এই কর্মসূচি। কেবলমাত্র দু’টি সরকারি ছুটি এবং রবিবারগুলি বাদ দিয়ে বাকি সব দিনই সাধারণ মানুষ এই পরিষেবা পাবেন।
প্রশাসন জানিয়েছে, দুয়ারে সরকারে, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্ণীর ভান্ডার, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের পাশাপাশি এ বার যুক্ত হয়েছে মৎস্যচাষিদের নিবন্ধীকরণ, বিদ্যুৎ সংযোগ ও বিদ্যুতের বিলের বকেয়ার আংশিক মুকুব-সহ মোট ২৫টি নতুন প্রকল্প।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে চার দফায় দুয়ারে সরকার শিবির করার পরেও যাঁরা সুযোগ নিতে পারেননি বা শিবিরে আসতে পারেননি, তাঁদের জন্য এই ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। জেলায় মোট ১,০১৩টি ক্যাম্প করা হবে। পাশাপাশি, দুয়ারে সরকারে ভ্রাম্যমান ক্যাম্প থাকছে ৩১৭টি। এর মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার কাজ হবে। এ দিন সকাল থেকে বোলপুর, সিউড়ি, রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই, দুবরাজপুর, মহম্মদবাজার, রাজনগর, লাভপুর, নানুর-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্পগুলিতে অনেকে হাজির হন।
বোলপুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বনডাঙ্গা এলাকায় দুয়ারে সরকার ক্যাম্প বসেছে। সেখানে সকাল থেকে ভিড় জমাতে দেখা যায় আদিবাসী-সহ অন্য উপভোক্তাদের। কেউ স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড, কেউ লক্ষ্মীর ভান্ডার তো কেউ এসেছিলেন বিদ্যুতের বকেয়া বিল জমা দিয়ে বাকি বিল মুকুব করাতে। বিদ্যুতের বকেয়া বিল জমা দিতে এসেছিল বোলপুরের বাসিন্দা বাপি বীরবংশী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এই নতুন ধরনের প্রকল্প চালু করায় সত্যি বহু মানুষ উপকৃত হবেন।’’ স্থানীয় বাসিন্দা সুমতি মাড্ডি, শুকুরমুনি হেমব্রম, সরলা বাগদিরা বলেন, “আগে বেশ কয়েকটি পরিষেবার জন্য আবেদন করেছিলাম, কিন্তু পাইনি। তাই আবার এসেছি। এ বার পাব বলে আশা করছি।”
উপভোক্তারা ঠিকঠাক পরিষেবা পাচ্ছেন কি না, তা দেখতে ওই ক্যাম্পটিতে এ দিন দুপুরের পরিদর্শনে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “যে সমস্ত মানুষ এখনও বিভিন্ন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন, তাঁদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য এই দুয়ারে সরকার ফের চালু করা হয়েছে। এতে মানুষের ভাল সাড়া মিলেছে। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন যাতে সবাই এই প্রকল্পের সুবিধা পাক। আমারও আশা রাখি বীরভূমে সে জায়গায় পৌঁছতে পারব।”
জেলাশাসক বিধান রায়ও এ দিন সিউড়ি দু’নম্বর ব্লক, বোলপুর ও লাভপুরে বেশ কয়েকটি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, “যত দিন ধরে দুয়ারে সরকার চলবে, তত দিনই আমি ক্যাম্পগুলিতে পরিদর্শনে যাব। কোনও ভাবেই প্রকৃত দাবিদারের বাইরে অন্য কেউ পরিষেবা না পান, তার জন্য আধিকারিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।” প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই অবাঞ্ছিত কাউকে কোনও বাড়তি সরকারি সুবিধা পাইয়ে দিয়ে যাতে বিতর্ক তৈরি না হয়, সে দিকেও সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কোনও প্রকৃত দাবিদার যাতে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সে দিকেও আধিকারিকদের নজর রাখতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy