হরিণশিঙা গ্রামে পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র
মহম্মদবাজারের ডেউচা-পাঁচামিতে প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকায় সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট বা সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন সমীক্ষা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি রুখতে এত দিন বার্তা দেওয়া হচ্ছিল প্রশাসনের শীর্ষ মহল থেকে। কেমন এগোচ্ছে সমীক্ষা, কোথায় আপত্তি বা সংশয় স্থানীয় বাসিন্দাদের, সেটা বুঝতে এ বার সরাসরি তাঁদের দাওয়ায় হাজির হলেন বীরভূমের জেলাশাসক বিজয় ভারতী ও জেলা পুলিশ সুপার সুপার শ্যাম সিংহ।
সোমবার বেলা আড়াইটে নাগাদ জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার হিংলো গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিণশিঙা গ্রামে যান। ঘণ্টা খানেক ছিলেন ওই গ্রামে। সামাজিক সমীক্ষা নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। কারও কারও বাড়ির দাওয়ায় বসে সমীক্ষক দলের কাছ থেকে ৮০টি প্রশ্ন সংবলিত ফর্ম নিজের হাতে পূরণ করেন জেলাশাসক। তাঁর কথায়, ‘‘কোন কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে গ্রামবাসীর আপত্তি, সেটা জানতেই আমি নিজের হাতে সমীক্ষার আবেদন পূরণ করলাম। ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গিয়েছে। মানুষের ভীতি ও বিভ্রান্তি এড়াতে আরও প্রচার চলবে।’’
মহম্মদবাজারের ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১টি মৌজার মাটির নীচে সঞ্চিত কয়লা একক ভাবে তোলার অধিকার পেয়েছে এ রাজ্য। কিন্তু খনি গড়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন হল। কিন্তু, সমীক্ষার কাজে গতি ততটা নেই। প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার বাড়ি রয়েছে। এ পর্যন্ত মধ্যে সমীক্ষার কাজ হয়েছে ৬০০-৭০০ বাড়িতে। নিময় মেনে সমীক্ষার কাজ হচ্ছে না বলে আপত্তি উঠেছিল স্থানীয়দের তরফে। সব বাড়িতে সমীক্ষা করা হচ্ছে না অভিযোগে সম্প্রতি সমীক্ষক সংস্থার কর্মীদেকর ফেরতও পাঠিয়ে দেন গ্রামবাসীদের একাংশ।
এই ঘটনার পরেই তৎপরতা শুরু হয় জেলা প্রশাসনে। সংবাদ মাধ্যমকে ডেকে এলাকার মানুষের উদ্দেশে জেলাশাসক বার্তা দেন, জমি জোর করে কেউ নেবে না। এখানে কয়লা খনি হবে কি না বা খনি করলে সেটা অর্থনৈতিক ভাবে সার্থক হবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর পেতেই সমীক্ষা চলছে। সমীক্ষা মানেই কয়লা খনি গড়া নয়। এটা একেবারেই প্রাথমিক ধাপ। জেলাশাসকের বার্তার পরে সমীক্ষার কাজে কিছুটা গতি এসেছে। কিন্তু তার পরেও এলাকাবাসীর সংশয় রয়েছে নানা বিষয়ে। বিশেষ করে আদিবাসী প্রধান এলাকায়। দাবি উঠতে শুরু করেছে, কয়লা খনির জন্য উচ্ছেদ করা যাবে না তাঁদের।
এমন নানা প্রশ্ন নিয়ে সংশয় কাটাতেই এ দিন এলাকায় হাজির হন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। কথা বলেন।
হরিণশিঙা গ্রামের কানু হেমব্রম, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য লতিকা হেমব্রম-সহ তিন জনের বাড়ি দওয়ায় পৌঁছে যান তাঁরা। জেলাশাসক তাঁদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা কী অবস্থায় এখানে আছেন, সেটা জানতেই সমীক্ষা। তাতে আপত্তি করার কোনও কারণ নেই। আপনারা না চাইলে খনি হবে না।’’
জেলাশাসকের আশ্বাসের পরে মনের সংশয় কিছুটা হলেও কেটেথে কানুদের। তাঁরা বলছেন, ‘‘সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে জেলার দুই শীর্ষ আধিকারিকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে জানলাম, জোর করে কিছু হবে না এখানে। আরও অনেক প্রশ্নের উত্তরও পেলাম। সেটা ভাল দিক।’’ হরিণশিঙার পরে দুই কর্তা ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবির দেখতে নিশ্চিন্তপুর গ্রামে, হিংলো গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy