Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
khayrasole

শুকনো হিংলো জলাধার, সেচ নিয়ে উদ্বেগ

জলাধারের দায়িত্বে থাকা এসডিও (হিংলো সেচ) সাধন গঙ্গোপাধ্যায় মানছেন সে কথা। তিনি বলেন, ‘‘এ বার বর্ষার প্রথম দিকে সেভাবে বৃষ্টি হয়নি।

জলাধারের হাল। নিজস্ব চিত্র

জলাধারের হাল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খয়রাশোল শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩০
Share: Save:

জলধারণের ক্ষমতা ১৩৮৪৫ একর ফিট। অথচ শীত ঢোকার আগেই জলাধারে জল শেষ। রবি ফসল বা বোরো চাষের সময় জল মেলার সম্ভাবনা নেই। জল না থাকায় নেই পরিযায়ী পাখিরাও। খয়রাশোলের হিংলো জলাধারের ছবিটা এমনই।

জলাধারের দায়িত্বে থাকা এসডিও (হিংলো সেচ) সাধন গঙ্গোপাধ্যায় মানছেন সে কথা। তিনি বলেন, ‘‘এ বার বর্ষার প্রথম দিকে সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। পরের দিকে বৃষ্টি হলেও অন্য বারের মতো নয়। যেটুকু জল ছিল শেষ বেলায় আমন চাষের জন্য দিতে হয়েছে। তাতেই সব জল ছেড়ে দিতে হয়েছে।’’ সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হিংলো নয়। সেচের জন্য যে জলাধারের উপরে সবচেয়ে বেশি নির্ভর করতে হয়, ময়ূরাক্ষী নদীর গতিপথে থাকা ঝাড়খণ্ডের সেই মশানজোড় জলাধার থেকেও এ বার জল মিলবে না।

সেচ দফতর সূত্রের খবর. হিংলো জলাধারটি তৈরির ফলে খয়রাশোলের বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকা, দুবরাজপুর ও ইলামবাজার ব্লকের আংশিক কৃষিজমি মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার হাজার একর জমিকে সেচের আওতায় আনা গিয়েছিল। কিন্ত ক্রমাগত পলি জমে একাধারে যেমন জলাধারের জলধারণের ক্ষমতা কমেছে। ঠিক সেভাবেই দু’পাড়ের মাটি পড়ে নষ্ট হয়েছিল সেচখালগুলির নাব্যতা। গত বছর সেচ খাল সংস্কার করে পাড় বাঁধানো বা ‘কংক্রিট লাইনিং’ করা হলেও মূল জলাধারে পলি সাফ করা যায় নি। সেটি যে হবে তারও আশু সম্ভাবনা নেই। সেটাই সমস্যার মূলে।

লাগোয়া ঝাড়খণ্ড ও বীরভূমে বর্ষায় লাগাতার দু’চারদিন ভারী বৃষ্টি হলেই উপচে পড়ে হিংলো জলাধার। তখন জল ছেড়ে দিতে হয়। গত বর্ষায় যেখানে সর্বোচ্চ ৫৭ হাজার কিউসেক জল ছাড়তে হয়েছিল, সেখানে এ বার বৃষ্টি কম হওয়া সর্বোচ্চ ১২ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল সেচের জল। কিন্তু আমন ধান ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই জলাধার শূন্য হয়ে গিয়েছে। সেচ দফতরের আধিকারিকেরা অনেকে অবশ্য বলছেন, ‘‘আমন ধান বাঁচাতেই মূলত জলাধার। পরে জল থাকলে বোরো সেচে দেওয়া হয়ে থাকে।’’

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমে যে কয়েকটি জলাশয়ে পরিযায়ী পাখি আসত সেই তালিকায় হিংলোও রয়েছে। ২০২০ সালে পাখি সুমারি চালানোর সময় এই জলাশয়ে ১৩ রকমের পাখির সন্ধান মিলেছিল। মাঝে কিছু নীচু জায়গায় সামান্য জল আছে কিন্ত সেটাও সেচ বা পাখিদের জন্য পর্যাপ্ত নয়।

জলাধার সংলগ্ন এলাকার চাষিরা জানাচ্ছেন, বোরো চাষ সেভাবে এই এলাকায় হয় না। তবে জল থাকলে রবি চাষে সুবিধা পাওয়া যায়। সেটা এবার হচ্ছে না। জয়দেব কেঁদুলি লাগায়ো অজয়ে মকর স্নানের সময়ও অসুবিধা হবে। হিংলো যেহেতু অজয়ে মিশেছে তাই মকর স্নানের আগে এই জলাধার থেকে প্রতিবার ২-৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। জল না থাকায় এবার সেটাও বন্ধ।

অন্য বিষয়গুলি:

khayrasole Irrigation department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE