Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
বিশ্বকাপ জ্বরে কাবু দু’জেলাই
ICC ODI World Cup 2023 Final

প্রজেক্টর, জায়ান্ট স্ক্রিনের চাহিদা তুঙ্গে

বাঁকুড়ায় ভাড়ায় প্রজেক্টর দেওয়ার ব্যবসা রয়েছে সঞ্জীব বিষয়ী, বিদেশ মাঝিদের। তাঁরা জানান, চাহিদা এতটাই যে বাইরে থেকে প্রজেক্টর আনাতে হচ্ছে। তার জন্য ভাড়াও বেড়েছে।

An image of ICC ODI World Cup

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৯
Share: Save:

বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মার ব্যাটে রানের ফুলঝুরি ছুটবে। বিপক্ষের ব্যাটসম্যানেরা কুপোকাৎ হবেন মহম্মদ শামি, জসপ্রীত বুমরাদের সুইংয়ে! বিশ্বকাপ ফাইনালের এমন দৃশ্য সকলের সঙ্গে দেখার মজা কি হাতছাড়া করা যায়? তাই চাহিদা বেড়েছে প্রজেক্টরের। সুযোগ বুঝে আট-দশ গুণ ভাড়াও হাঁকানো হয়েছে।

বাঁকুড়ায় ভাড়ায় প্রজেক্টর দেওয়ার ব্যবসা রয়েছে সঞ্জীব বিষয়ী, বিদেশ মাঝিদের। তাঁরা জানান, চাহিদা এতটাই যে বাইরে থেকে প্রজেক্টর আনাতে হচ্ছে। তার জন্য ভাড়াও বেড়েছে। সঞ্জীব বলেন, “ফাইনালের আগে এত চাহিদা বাড়বে বুঝতে পারিনি। অনেকে চড়া দরে ভাড়া নিতে চাইছেন। তবু ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।” বিদেশের কথায়, “পাঁচটি প্রজেক্টর ছিল। সবই আগে ভাড়া দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এর পরে চাহিদা দেখে আসানসোল, দুর্গাপুর থেকে কিছু প্রজেক্টর আনতে হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে ভাড়াও বেড়েছে।”

বাঁকুড়ার হরেশ্বর মেলা দুর্গাপুজো কমিটির সম্পাদক রমেশ মুরারকা জানান, স্থানীয় ছেলেমেয়েদের জেদাজেদিতে ৭ হাজার টাকা ভাড়ায় প্রজেক্টর আনতে হয়েছে। এলাকায় না পেয়ে মোটা টাকা গুনে বাঁকুড়া থেকে প্রজেক্টর ভাড়া করে আনতে হয়েছে বলে জানান পাত্রসায়রের বেলুট যুব সঙ্ঘের কর্মকর্তা কুন্তল রায়ও। তিনি বলেন, “প্রজেক্টর লাগাতে এত ঝক্কি হবে ভাবিনি। তবে ফাইনালের উন্মাদনা তো সব কিছুর ঊর্ধ্বে।”

এ দিকে, সিমলাপালের কুঁকরাকোন্দর ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাবের সম্পাদক দেবাশিস মল্লিক বলেন, “আমাদের নিজস্ব প্রজেক্টর রয়েছে। সেটাই ভাড়ায় নিয়ে যেতে এই ক’দিন লোকজন ক্লাবের সামনে লাইন দিয়েছিল। মোটা অঙ্কের ভাড়া দিতে চাইলেও কাউকে দিইনি। আমরা সবাই মিলে খেলা দেখব।” একই কথা জানান খাতড়ার সণ্টু দত্তও। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত প্রজেক্টর। বিশ্বকাপে সবাইকে বড় স্ক্রিনে খেলা দেখাব। তাই কাউকে ভাড়ায় দিইনি।”

বিষ্ণুপুরেও ফাইনালের উন্মাদনা তুঙ্গে। কাটানধারের ন্যাশনাল ক্লাবের কর্তা জয়দেব রায় জানাচ্ছিলেন, হন্যে হয়েও প্রজেক্টর ভাড়ায় না পেয়ে শেষে প্রজেক্টর কিনেই নিয়েছেন। বিষ্ণুপুরের গোপালগঞ্জের যুবগোষ্ঠী শারদীয়া কমিটির সম্পাদক গোপাল দাস কর্মকার বলেন, “প্রজেক্টর পেলাম না কোথাও। নিজেদের ব্যক্তিগত টিভিই রাস্তার পাশে বের করে খেলা দেখানো হবে।” বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে ২৪ ফুটের এলইডি টিভিতে খেলা দেখানোর আয়োজন করেছে শহরের রানিগঞ্জ মোড়ের মুচকুন্দতলার শিক্ষা সঙ্ঘ ক্লাব।

ভারত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার পরে থেকে প্রজেক্টর, জায়ান্ট এলইডি স্ক্রিন বা টিভির চাহিদা আকাশছোঁয়া পুরুলিয়াতেও। পুরুলিয়া শহরের এক ব্যবসায়ী মানবেন্দ্র মাহাতো বলেন, "শনিবার দিনভর অন্তত কুড়িটা ফোন এসেছে প্রজেক্টরের খোঁজে। ঝাড়খণ্ড থেকেও ফোন এসেছে।”

কাশীপুরের এক ব্যবসায়ী দয়াময় কর্মকার জানান, তাঁর চারটে এলইডি টিভির সবকটিই সেমিফাইনালের পরে বুকড হয়ে গিয়েছে। রঘুনাথপুরের ব্যবসায়ী হীরক গোস্বামীও জানান, সাতটা এলইডি টিভি, জায়েন্ট এলইডি স্ক্রিন, গোটা তিন প্রজেক্টরের সব গুলিই ভাড়া হয়ে গিয়েছে। একই কথা জানান আদ্রার ব্যবসায়ী প্রমোদ সাউও। তাঁরা বলেন, “শনিবার অনেকে ফোন করে জায়ান্ট স্ক্রিনের খোঁজ করেছেন। সকলকেই ফেরাতে হচ্ছে।”

চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রজেক্টর বা এলইডি স্ক্রিনের ভাড়া বাড়ার অভিযোগ তুলছেন ক্লাবের কর্মকর্তারা। তাঁদের দাবি, সুযোগ বুঝে এলইডি বা জায়ান্ট স্ক্রিনের দশ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া চাইছে। প্রজেক্টরের ভাড়াও দ্বিগুণ। তবে এর পরেও উৎসাহে খামতি নেই ক্লাবগুলির। প্রায় সর্বত্রই দল বেঁধে বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার পরিকল্পনা সারা।

ভারতের জয়ের কামনায় পুজোর্চনার আয়োজনও হবে। ঝালদার আনন্দবাজারে খেলোয়াড়েরা মন্দিরে পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। ঝালদার এক পুরপ্রতিনিধি বিজয় কান্দু বলেন, “পুজো দিয়ে সকলে মিলে খেলা দেখব। এলইডি টিভির ব্যবস্থা হয়েছে। দুপুরে কেউ বাড়ি যাব না। এক সঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়া হবে।” খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন থাকছে বান্দোয়ানের নাচমহল ক্লাবেও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy