মোদী ও দিদি রাখি, দুবরাজপুরে। নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক বছরে বাজারে ভাল চাহিদা তৈরি হয়েছিল ‘মোদী রাখি’ ও ‘দিদি রাখি’-র। কিন্তু সেই চাহিদায় সামান্য ভাটা পড়েছে বলে অভিমত জেলার বিভিন্ন বাজারের রাখি বিক্রিতাদের। তাঁদের কথায়, এবার মোদী ও দিদি রাখি কম এসেছে। এলেও চাহিদা সীমিত।
মোদী ও দিদি। যতই তাঁরা একে অন্যের যুযুধান হন, দু’জনই রাজনৈতিক ময়দানে যথেষ্ট জনপ্রিয়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে তাঁদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে এবং তাঁদের দলীয় প্রতীক দিয়ে তৈরি হয়েছিল রাখি। রাখির বাজারেও জমে উঠেছিল মোদী-দিদি লড়াই। মাঝে ২০২০ সালে কোভিডের ধাক্কা বাদ দিলে ফি বছর শয়ে শয়ে বিকিয়েছে মোদী ও দিদি রাখি। বিক্রির নিরিখে কে কাকে টেক্কা দিচ্ছেন, নজর রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরাও। সেই দৃশ্য এবার কার্যত অমিল।
আজ, সোমবার রাখি পূর্ণিমা। গোটা দেশের আট থেকে আশি সকলেই মেতে উঠবেন রাখি বন্ধন উৎসবে। জেলার বাজারগুলি রাখিতে ছেয়ে গিয়েছে। প্রতি বছরের মতো এ বারও বাজারের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন রাখি প্রস্তুত করেছেন ব্যবসায়ীরা। সদ্য পেরিয়েছে স্বাধীনতা দিবস। ত্রিবর্ণ রাখি, ছোটদের জন্য আলো দেওয়া ব্যাটারি-চালিত রাখি, জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্রের ছবি-সহ রাখি— সবই রয়েছে দোকানগুলিতে। তালিকায় আছে মোদী ও দিদি রাখিও। দোকানে পাশাপাশি রাখা দু’ধরনের রাখি। বিজেপির দলীয় প্রতীক-সহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি এবং দলীয় ঘাসফুল প্রতীক-সহ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি।
দুবরাজপুরের এক রাখি ব্যবসায়ী সুমন দে বলেন, “বহু টাকার রাখি কিনেছি। হরেক দামের রাখিও রয়েছে। রয়েছে দিদি ও মোদী রাখি। দামও নাগালের মধ্যে। তবে মোদী ও দিদির ছবি দেওয়া রাখির বিক্রির হিড়িক তেমন নেই। রাখির বাজার এমনিতেই এবার একটু ঢিলে। দেখি, কী হয়।” মহম্মদবাজারের পটেলনগরের রাখি ব্যবসায়ী সুদীপ্ত বিশ্বাস বলেন, “মোদী, দিদি রাখির চাহিদা নেই। তা ছাড়া বাজারেও ওই দু’ধরনের রাখি কম এসেছে। সিউড়ি এবং মুরারই বাজারে এবার বহু রাখি এলেও যুযুধান দুই রাজনীতিকের মুখের ছবি দেওয়া রাখি আসেনি বললেই চলে।” বোলপুরের এক ব্যবসায়ী বলেন, “একটা সময় ছিল রাখি বিক্রিতে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী একে অন্যকে টক্কর দিয়েছেন। এবার তার লেশমাত্র নেই।”
এর সঙ্গে কি রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির যোগ রয়েছে? অন্তত সেদিকেই ইঙ্গিত বিরোধীদের।সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “আরজি কর কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া রাখি কোনও বোন তাঁর ভাই বা দাদাকে পরাবেন বলে মনে হয় না। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তো রাখিকে শুধু ধর্মীয় উৎসব হিসেবেই দেখেন। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষিতে রাখি অনেক বেশি করে সম্প্রীতির প্রতীক।”
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহসভাপতি বাবন দাস বলেন, “এখন রাজ্যের পরিস্থিতি খুব অস্থির। যে রাজ্যের বোনকে এ ভাবে মরতে হয় সেখানে রাখির বিষয়টি আড়ালেই চলে গিয়েছে।” অন্য দিকে, তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিরোধীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি কলুষিত করতে চাইছেন। তবে রাখি বিক্রি কম বেশি দিয়ে সেটা বিচার করা অর্থহীন। স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। জননেত্রী ফের স্বমহিমায় সামনে আসবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy