প্রতীকী ছবি।
এত দিন পর্যাপ্ত সংখ্যায় করোনা প্রতিষেধক না আসা নিয়ে সমস্যা ছিল। আর এখন জেলায় প্রতিষেধকের জোগান নিয়মিত হলেও সিরিঞ্জের ঘাটতিতে টিকাকরণে প্রভাব পড়ছে বলে দাবি। পরিস্থিতি এমনই যে, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে প্রায়ই জেলার বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে বলেও দাবি জেলার স্বাস্থ্য-কর্তাদের একাংশের। সমস্যার কথা মানছে রাজ্য পরিবারকল্যাণ দফতর।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, “সিরিঞ্জের ঘাটতি রয়েছে। কোনও ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে।” অবিলম্বে জেলায় পর্যাপ্ত সিরিঞ্জ পাঠানো বা সিরিঞ্জ কিনতে অর্থ বরাদ্দের আর্জি জানিয়ে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার তরফে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলায় এ মুহূর্তে কোভিশিল্ড ও কো-ভ্যাক্সিন মিলিয়ে মোট ৫৮ হাজার ৯১০টি করোনা প্রতিষেধক মজুত রয়েছে। সেখানে সিরিঞ্জ রয়েছে ১৮,১৭৮টি।
এ পরিস্থিতিতে প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ বজায় রাখতে শিশুদের প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচির জন্য মজুত থাকা সিরিঞ্জও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি। তবে এতে শিশুদের ডিপথেরিয়া, বিসিজি, হাম, হেপাটাইটিসের মতো ‘রুটিন’ প্রতিষেধকগুলি দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য-কর্তাদের একাংশ।
পাশাপাশি, সিরিঞ্জের অভাবে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ কর্মসূচি বন্ধ থাকায় সামগ্রিক ভাবে জেলায় প্রতিষেধক দেওয়ার গতি ব্যাহত হচ্ছে বলে মত স্বাস্থ্য দফতরের।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার এক কর্তার কথায়, “সিরিঞ্জ না থাকায় গত সপ্তাহে জেলার তিন-চারটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক দিন করে করোনা প্রতিষেধক দেওয়া বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সমস্যা এখনও চলছে। শিশুদের প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য রাখা সিরিঞ্জও করোনা প্রতিষেধক দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এ ভাবে, এক দিকে যেমন করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার গতি ব্যাহত হচ্ছে, তেমনই শিশুদের প্রতিষেধক দেওয়ার সিরিঞ্জেও ঘাটতির শুরু হওয়ার আশঙ্কা দানা বাঁধছে।”
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার একাধিক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, দু’হাজার করোনা প্রতিষেধকের সঙ্গে কখনও বারোশো কখনও পাঁচশো সিরিঞ্জ পাঠানো হচ্ছে। কখনও আবার সিরিঞ্জ না দিয়ে কেবল প্রতিষেধক পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
একই সমস্যা চলছে বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলাতেও। বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “সিরিঞ্জ কম পরিমাণে আসছে। বাধ্য হয়ে তহবিল থেকে সিরিঞ্জ কিনে করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ করতে হচ্ছে।”
সিরিঞ্জের সমস্যা নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ জানান, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রেই সিরিঞ্জের ঘাটতি চলছে। যে সংস্থাগুলির কাছ থেকে রাজ্য সিরিঞ্জ কেনে, তারা চাহিদামতো সিরিঞ্জের জোগান দিতে পারছে না। সপ্তাহখানেক ধরে গোটা রাজ্যে প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ সিরিঞ্জের ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে সূত্রে খবর।
জেলায় জেলায় সিরিঞ্জের ঘাটতির সমস্যার কথা মানছেন রাজ্য পরিবারকল্যাণ দফতরের আধিকারিক অসীম দাস মালাকারও।
তাঁর কথায়, “সিরিঞ্জের ঘাটতির সমস্যা কম-বেশি প্রায় সব জেলায় রয়েছে। তবে আগামী দিনে প্রতিষেধকের সমসংখ্যক সিরিঞ্জও জেলায় জেলায় পাঠানোর চেষ্টা করছি আমরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy