বিজয় দাই। রামপুরহাট নিজস্ব চিত্র।
চন্দ্রযান ২-এর সময় তিনি ছিলেন। চন্দ্রযান ৩-এর সময়েও আছেন। মল্লারপুর থানার দক্ষিণগ্রামের বাসিন্দা, ইসরোর সিনিয়র বিজ্ঞানী বিজয় দাই-কে নিয়ে তাই গর্বিত গ্রামের বাসিন্দারা।
শুক্রবার যখন সফল উৎক্ষেপণ হল চন্দ্রযান ৩-এর, তখন টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিলেন গ্রামের অনেক বাসিন্দা। আবার শঙ্কাও ছিল। চার বছর আগে সফল উৎক্ষেপণের পরেও চাঁদের মাটি ছোঁওয়ার কিছুক্ষণ আগে মুখ থুবড়ে পড়েছিল চন্দ্রযান-২। তখনও ইসরোর সিনিয়র বিজ্ঞানী হিসাবে চন্দ্রযান ২ উৎক্ষেপণকারীদের দলে ছিলেন গ্রামের ছেলে বিজয়। এ বার তেমন অঘটন না হওয়া দেশবাসীর সঙ্গেই নিশ্চিন্তে দক্ষিণগ্রামের বাসিন্দারা। মাসখানেক আগে দক্ষিণগ্রামের বাড়িতে এসে বাবা, মা, ভাই ও অন্য আত্মীয়স্বজনদের চন্দ্রযান ৩ উৎক্ষেপণের দিন সকলকে দূরদর্শনের পর্দায় চোখ রাখার জন্য বলে গিয়েছিল বিজয় দাই। সবাই তা করেনও। তবে বাড়ির ছেলের সঙ্গে শুক্রবার যোগাযোগ করতে পারেননি পরিবারের লোকজন। শনিবার আনন্দবাজারকে বিজয় জানালেন, এখনও তিনি খুবই ব্যস্ত।
বিজয়ের দাদা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিনয় দাই বললেন, ‘‘ভাই এখন চরম ব্যস্ত। আমরাই কথা বলার চেষ্টা করেও পারিনি। তবে আমরা ও গ্রামবাসী সকলেই বিজয়ের জন্য গর্ব অনুভব করছি। চন্দ্রযান -৩ যাতে সফল ভাবে গবেষণার কাজ করতে পারে সেই কামনা করছি।’’
বিজয়ের বাবা নারায়ণচন্দ্র দাই পেশায় অস্থায়ী এনভিএফ কর্মী ছিলেন। সামান্য জমি চাষ করে তিন ছেলের লেখাপড়া চালিয়েছেন। বিজয় স্থানীয় দক্ষিণগ্রাম জগত্তারিনী হাইস্কুল থেকে ২০০০ সালে মাধ্যমিকে ভালভাবে পাশ করে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পাশ করেন। তারপরে জয়েন্ট দিয়ে কল্যাণী সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যাণ্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি টেক করেন। এর পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম টেক করার সময় ইসরোর বিজ্ঞানী পদের জন্য আবেদন জানান।
২০০৭ সালে ইসরোতে বিজ্ঞানী পদে চাকরি পান বিজয়। ইসরোতে বিভিন্ন ধরণের প্রকল্পের কাজে যুক্ত ছিলেন তিনি। সম্প্রতি আরএস ১২ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হয়। তার নানা দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। পরে চন্দ্রযান ২ এবং বর্তমানে চন্দ্রযান ৩-এর কার্যকলাপে অন্য অনেক বিজ্ঞানীর সঙ্গে যুক্ত আছেন বিজয়ও। তাঁর বাবা নারায়ণ দাই বললেন, ‘‘ছেলে প্রথম থেকেই মেধাবী ছিল। বর্তমানে দেশসেবার কাজে নিযুক্ত আছে। এতে আমরা খুশি এবং গর্বিত। আমরা সকলেই চাই চন্দ্রযান ৩ ভালো ভাবে সফল হোক।’’
জেলারই এক জন বাসিন্দা দেশের বিজ্ঞান গবেষণার এমন গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপে যুক্ত জেনে খুশি জেলাশাসক বিধান রায়ও। তিনি বলেন, ‘‘বীরভূম জেলা সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান সাধনা সব দিক দিয়েই বীর সন্তানদের জন্ম দিয়ে এসেছে। দক্ষিণগ্রামের বিজয় দাই যে ভাবে ইসরোর গবেষণামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন তাতে আমরা সত্যিই আনন্দিত এবং গর্ব বোধ করছি। বিজয়বাবুর কর্মকাণ্ড-সহ চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্য কামনা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy