—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে ক্ষমতায় নেই সিপিএম। একজন বিধায়কও নেই। এরই মধ্যে পুরুলিয়া জেলায় সিপিএমের কাছে এক টুকরো মরুদ্যানের মতো জেগে আছে পুঞ্চা ব্লকের জামবাদ পঞ্চায়েত। ১৯৭৮ থেকে একটানা এই পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। ৩৪ বছরের বাম শাসনের পরে রাজ্যের পরিবর্তন ঘটলেও বামেরা তাদের ‘গড়’ জামবাদ পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ধরে রেখেছে।
দলের পশ্চিম পুঞ্চা এরিয়া কমিটির সম্পাদক অম্বরীশ মাহাতোর আশা, ‘‘২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও আমরা নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে ইতিহাস গড়ব।’’
পঞ্চায়েতে সিপিএম একটানা শাসন ক্ষমতা ধরে রাখার রহস্য কি? স্থানীয়দের দাবি, এলাকার অনিল মাহাতো, আনন্দ সিং পাতরদের মতো প্রবীণ সিপিএম নেতারা নতুনদের সঙ্গে নিয়ে এখনও এলাকায় নিরন্তর জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। পঞ্চায়েতের কাজের পাশাপাশি মানুষের বিপদে-আপদে তাঁরা বছরভর পাশে থাকছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, ২০১৩ সালের নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতে সিপিএম ৫১.৪৩ শতাংশ ভোট পায়। তৃণমূল পেয়েছিল ৩৮.১৩ শতাংশ ভোট। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিপিএমের ভোট বেড়ে হয় ৬০.৪১ শতাংশ। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বামেদের প্রাপ্ত ভোট কমে দাঁড়ায় ৩০.৭৩ শতাংশে।
স্থানীয় এক সিপিএম নেতার নেতার কথায়, ‘‘সে বার বাম ভোটে বিজেপি কিছুটা থাবা বসিয়েছিল। বামেদের দীর্ঘ যাত্রাপথে একমাত্র গত লোকসভা নির্বাচনেই ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূল ৯টি বুথে ভোট বেশি পেয়েছিল।’’
তৃণমূলের প্রাক্তন পুঞ্চা ব্লক যুব সভাপতি জীমূতবাহন পন্ডার দাবি, ‘‘ওই সময় দল আমাকে জামবাদ পঞ্চায়েতের দায়িত্ব দিয়েছিল। সে বারই প্রথম আমরা ‘লিড’ পেয়েছিলাম। পরে দল ওই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি।’’
কংসাবতী নদী পুঞ্চা ব্লককে আড়াআড়ি ভাগ করেছে। নদীর পশ্চিম প্রান্ত কেন্দা থানা এলাকার অধীনে। জামবাদ পঞ্চায়েত ওই অংশের মধ্যেই পড়ে। অন্য অংশ পুঞ্চা থানা এলাকার অধীনে পূর্ব পুঞ্চা নামে পরিচিত। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের ক্ষোভ, দলের নেতারা পশ্চিম পুঞ্চাকে তেমন গুরুত্ব দেননি। বরাবর ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন পূর্ব পুঞ্চার বাসিন্দারা। তবে কয়েক মাস আগে পশ্চিম পুঞ্চার বাসিন্দা অশোক মাহাতো ব্লক সভাপতির পদে বসেছেন। তিনি এ বার জামবাদে পরিবর্তন আনতে পারেন কি না, তা নিয়ে অনেকেই কৌতূহলী।
জামবাদ পঞ্চায়েতের ৯টি আসনেই ক্ষমতায় সিপিএম। ১১টি গ্রামের প্রায় ১২ হাজারের কিছু বেশি বাসিন্দাকে নিয়ে গঠিক এই পঞ্চায়েতে এ বারও তাঁরা ক্ষমতায় ফিরবেন বলে আশাবাদী বিদায়ী উপপ্রধান তপন মাহাতো। তাঁর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত পরিষেবায় রং দেখা হয় না। বিভিন্ন প্রকল্পের পরিষেবা সর্বস্তরের মানুষ পাচ্ছেন। এছাড়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি, সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সবাই উপকৃত হচ্ছেন।’’
তৃণমূল কর্মীদের একাংশ অবশ্য ওই পঞ্চায়েত দখলে নেতৃত্বের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন।যদিও ব্লক তৃণমূল সভাপতি অশোক মাহাতোর দাবি, ‘‘রাজ্যের তৃণমূল সরকারই ওই সব প্রকল্প এনেছে। তার প্রচারে মানুষের সাড়া পেয়েছি। ধীরে হলেও জামবাদ অঞ্চলে আমাদের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ছে।’’
হাল ছাড়ছে না বিজেপিও। ‘‘ধীরে হলেও জামবাদ পঞ্চায়েতে আমাদের সংগঠন বাড়ছে। কে জিতবে তা পরের কথা। কিন্তু ওখানে ত্রিমুখী লড়াই হবে’’— বলছেন পুঞ্চার বাসিন্দা তথা বিজেপির জেলা সম্পাদকজনপ্রিয় ঘোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy