E-Paper

তখন মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষককে দেখেই প্রণাম

তবে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অন্য জেলার মতোই বীরভূমের উন্নয়নেও যে তিনি নানা পদক্ষেপ করেছিলেন তা মনে করিয়ে দেন সিপিএম নেতারা।

২০১০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে ইলামবাজারে দলের জনসভায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

২০১০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে ইলামবাজারে দলের জনসভায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ছবিঃ ফাইল ছবি।

সৌরভ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৪ ১০:০৬
Share
Save

এসেছেন দলের কর্মী হিসেেব। এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও। বৃহস্পতিবার সকালে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর খবর জানাজানি হওয়ার পরেই সেই সব সফরের স্মৃতিচারণায় ভাসলেন সিপিএমের বীরভূেমর নেতারা। দলের তরফেও জেলা জুড়ে পালিত হল শোক, হয়েছে মৌনী মিছিল।

জেলার সিপিএম নেতারা বলছেন, সিপিএমের প্রাক্তন পলিটবুরো সদস্য বুদ্ধদেবের জীবনাবসানে বামপন্থী রাজনীতিতে একটি যুগের অবসান ঘটল। কী ভাবে কলকাতায় ডাক্তারি পড়তে গিয়ে বুদ্ধদেবের সহায়তায় মাথা গোঁজার ঠাঁই মিলেছিল, সেই ঘটনার কথা এ দিন জানান সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য রামচন্দ্র ডোম। নিজের শিক্ষকদের প্রতি বুদ্ধদেব কতটা শ্রদ্ধাশীল ছিলেন, তা জানান দলের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ।

বীরভূম জেলার সঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরাসরি কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল না। তবে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অন্য জেলার মতোই বীরভূমের উন্নয়নেও যে তিনি নানা পদক্ষেপ করেছিলেন তা মনে করিয়ে দেন সিপিএম নেতারা। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নানা কারণে একাধিকবার বীরভূমে এসেছিলেন তিনি। ২০০৪ সালে যখন শান্তিনিকেতন থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পদকটি চুরি যায়, তখন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জেলায় এসেছিলেন তিনি। পরে ২০০৫ সালে বোলপুরে পুরসভা নির্বাচনের প্রচারে, ২০১০ সালে মহম্মদবাজারে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয় বিক্ষোভরত আদিবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করতে এবং ওই বছরেই সাঁইথিয়া স্টেশনে ঘটা ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলায় এসেছিলেন বুদ্ধদেব।

তবে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগেই দু'টি ঘটনার কারণে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে বিশেষভাবে মনে রেখেছিলেন সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ। তিনি জানান, বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের দুই অধ্যাপক ভূদেব চৌধুরী এবং ভবতোষ দত্ত আগে প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াতেন। সেখানে বুদ্ধদেব তাঁদের প্রত্যক্ষ ছাত্র ছিলেন। পরে আশির দশকে ভূদেব চৌধুরী অসুস্থ থাকাকালীন বুদ্ধদেব নিজে দায়িত্ব নিয়ে তাঁর চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব পালন করেন। তখন র মন্ত্রী হলেও নিয়মিত ভূদেব চৌধুরীকে দেখতে শান্তিনিকেতনে আসতেন বুদ্ধদেব।

অপর ঘটনাটির সময় গৌতম ঘোষ বিশ্বভারতীর ছাত্র। গৌতম জানান, বিশিষ্ট শিল্পী তথা আশ্রমিক শান্তিদেব ঘোষের মৃত্যুর পর সঙ্গীতভবনে একটি স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকেও। কিন্তু, সঙ্গীতভবনে ঢুকেই বুদ্ধদেব দেখেন তাঁর মাস্টারমশাই ভবতোষ দত্ত মঞ্চের সামনে দর্শকের আসনে বসে আছেন। এই দেখে মঞ্চে না উঠে সরাসরি দর্শকাসনের দিলে এগিয়ে যান তিনি। সেখানে গিয়ে ভবতোষ দত্তকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে তাঁকে নিয়েই মঞ্চে ওঠেন বুদ্ধদেব। গৌতম ঘোষ বলেন, “রাজনীতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকেও একজন মানুষ কতটা মাটির কাছাকাছি থাকতে পারেন, সেটা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখে বুঝেছিলাম। আমার দেখা রাজনীতিবিদদের মধ্যে তো বটেই সার্বিকভাবে বাংলার রাজনীতি একজন প্রকৃত শিক্ষিত, ভদ্র ও বিনয়ী ব্যক্তিত্বকে হারাল।”

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা জুড়ে শোক মিছিল করে সিপিএম। সিউড়ি, রামপুরহাট, বোলপুর দুবরাজপুর, রাজনগর, নলহাটি, মুরারই, ময়ূরেশ্বর সহ জেলার প্রায় সব জায়গাতেই মৌনী মিছিলের আয়োজন করে সিপিএম।

Buddhadeb Bhattacharjee Death Buddhadeb Bhattacharjee Suri

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়।

  • সঙ্গে পান রোজ আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই -পেপার পড়ার সুযোগ।

  • এখন না পড়তে পারলে পরে পড়ুন, 'সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে।

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

SAVE 1%*
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।