Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

বিয়েতে অতিথিদের গাছ বিলি খাতড়ার দম্পতির

‘‘অভ্যাগতদের বলেছি, তাঁরা যেন প্রিয়জনের নামে চারাগাছগুলির নামকরণ করেন। তা হলে পরিচর্চায় বাড়তি উৎসাহ থাকবে।’’

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০০:৪২
Share: Save:

বিয়ের প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে আসা আমন্ত্রিতেরা নবদম্পতির থেকে উপহার পেলেন একটি করে চারা গাছ। দিলেন সেটিকে যত্ন করে বড় করার প্রতিশ্রুতি। সোমবার বাঁকুড়ার খাতড়া থাকার চাকা গ্রাম দেখল বিরল এক বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান। যেখানে ফাটেনি শব্দবাজি, ব্যবহার হয়নি প্লাস্টিক বা থার্মোকলের জিনিস।

ওন্দা থানার দক্ষিণপাড়া জুনিয়র মাদ্রাসার ভূগোলের শিক্ষক মিন্টু পতি ছোটবেলা থেকেই পরিবেশপ্রেমী। বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়ার স্কুলে-স্কুলে চারাগাছ বিলি করেন। রবিবার সিমলাপালের কুশতোরা গ্রামের জয়শ্রী সতপতির সঙ্গে বিয়ে হয় মিন্টুর। প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে পরিবেশবার্তা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল মিন্টুর। কিন্তু কী ভাবে তা দেওয়া হবে তা ভেবে পাচ্ছিলেন না। শেষপর্যন্ত উপায় বার করেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির স্নাতক জয়শ্রী।

মিন্টুর কথায়, ‘‘আমার স্ত্রী আমাকে ২০০টি গাছের চারা উপহার দেন। তারপর সেই চারাগুলি বিলি করা হয় প্রীতিভোজে আমন্ত্রিত অভ্যাগতদের।’’ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন কলকাতার দুই পরিবেশপ্রেমী রামপ্রসাদ নস্কর এবং তারকচন্দ্র পাল। মিন্টুর দাবি, ‘‘পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করতে সাইকেলে ভারত ভ্রমণ করেছেন ওই দুই পরিবেশপ্রেমী। গত রবিবার ওঁরা কলকাতা থেকে সাইকেলে চড়ে আমার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। তাঁদের হাত দিয়েই আমরা সোমবার চারাগাছগুলি বিতরণ করেছি।’’

অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে চন্দন, মেহগনি, অশ্বত্থ, জাম এবং বকুল গাছের চারা। মিন্টু বলেন, ‘‘সেই গাছই দিয়েছি যেগুলি বাঁচে অনেক বছর এবং অক্সিজেন দেয় বেশী। প্রতিটি গাছের চারার দাম ৩৫-৪০ টাকা।’’ শুধু অতিথি-অভ্যাগতরাই নন, প্রীতিভোজের অনুষ্ঠানে যাঁরা খাবার পরিবেশন করেছেন, তাঁদেরও গাছের চারা দিয়েছেন নবদম্পতি। তারপর আদায় করে নিয়েছেন গাছের পরিচর্চা করার প্রতিশ্রুতি।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জয়শ্রী বলেন, ‘‘অভ্যাগতদের অনুরোধ করেছি, তাঁরা যেন তাঁদের প্রিয়জনের নামে চারাগাছগুলির নামকরণ করেন। তাহলে গাছগুলির পরিচর্চায় বাড়তি উৎসাহ থাকবে।’’ নবদম্পতি ঠিক করেছেন, কোনও আনন্দ অনুষ্ঠানে গেলে তাঁরাও গাছের চারা উপহার দেবেন। সঙ্গে আদায় করে নেবেন সেটির পরিচর্চার প্রতিশ্রুতি।

ভূগোলের পাশাপাশি পবিবেশবিদ্যাতেও স্নাতকোত্তরের ডিগ্রি অর্জন করেছেন মিন্টু। তিনি বলেন, ‘‘পরিচিত কাউকে প্রচুর অর্থ খরচ করে জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে দেখলে আমি তাঁদের কাছে যাই। আমাকে কয়েকটি গাছের চারা দেওয়ার আবেদন করি। তাঁদের দেওয়া গাছের চারা স্কুলে-স্কুলে বিলি করি। আমি নিজেও অনেক চারা গাছ কিনি। বহু মানুষ আমাকে এই কাজে সাহায্য করেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy