উদ্যোগ: জেলা পুলিশের ‘মাতৃস্নেহ’ গাড়ি। ফাইল চিত্র
শিশুদের তো বটেই, লকডাউনের মাঝে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্যও মুশকিল আসান হয়েছে জেলা পুলিশের ‘মাতৃস্নেহ’ পরিষেবা। রবিরার রাতে সেটা প্রত্যক্ষ করেছেন লোকপুর থানা এলাকার চুয়াগড় গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা বধূ জবা বাউড়ি। জেলা পুলিশের ওই পরিষেবার জন্যই হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। প্রি-ম্যাচিওর হলেও সদ্যোজাত শিশু ও মা উভয়েই সুস্থ আছেন।
লকডাউনের মাঝে শিশুরা যাতে সমস্যায় না পড়ে, সে জন্য ১৪ এপ্রিল জেলার ৬টি পুরসভা এলাকায় ছটি গাড়ি চালু করে জেলা পুলিশ। যেমন চিকিৎসার জন্য কোনও শিশুকে হাসপাতালে পৌঁছনো কিংবা ওষুধ বা খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো সহ নানা পরিষেবা। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় মাতৃস্নেহ। বলা হয়েছিল, একটা ফোন করলেই কেবলমাত্র শিশুদের যে কোনও পরিষেবায় হাজির হয়ে যাবে ওই গাড়ি। কিন্তু, শিশু তো মায়ের থেকে আলাদা নয়, তাই অন্তঃসত্ত্বাদেরও এই পরিষেবার আওতায় আনা হয়। প্রতিটি গাড়িতেই থাকছেন এক জন মহিলা পুলিশ কর্মী। মঙ্গলবার পর্যন্ত আরও ৭টি এমন গাড়ি চালু করেছে পুলিশ। অর্থাৎ, জেলার ২৪টি থানার মধ্যে ১৩টি থানা এলাকায় এই পরিষেবা চালু। এ জন্য দুটি হেল্পলাইন নম্বর চালু হয়েছে। প্রতিদিন নানা সমস্যা মেটাচ্ছে মাতৃস্নেহ। সেই তালিকায় রয়েছেন লোকপুরের ওই বধূও।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ৯টা নাগাদ ওই অন্তঃসত্ত্বা বধূ যখন প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন, তখন ফোন করেও ১০২ এবং নিশ্চয়যান অ্যাম্বুল্যান্স পাননি স্থানীয় আশাকর্মী বন্দনা গড়াই। লকডাউনের মধ্যে আর কোনও উপায় না পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে মাতৃস্নেহ কন্ট্রোল রুমের নম্বরে ফোন করতেই তৎপর হয় পুলিশ। লোকপুর থানায় ওসি রমেশ সাহা মাতৃস্নেহ নিয়ে হাজির হন ওই বধূর বাড়িতে। তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে খয়রাশোলের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করান। সেখানে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু, শিশুটি সময়ের আগে জন্মানোয় বেশ কিছু সমস্যা ছিল। উভয়কেই সিউড়ি জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। ওই প্রসূতি ও তাঁর পরিজনেরা বলছেন, ‘‘পুলিশের এই পরিষেবা না পেলে মা ও শিশু উভয়ের প্রাণ সংশয় হত।’’
মঙ্গলবার শান্তিনিকেতন থানা এলাকায় সর্পলেহনা গ্রামের পম্পা দলুই নামে এক অন্তঃসত্ত্বা হঠাৎ অসুস্থ হলে তাঁকে বাড়ি থেকে বোলপুরের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে আসা এবং চিকিৎসার পরে ওই বধূকে বাড়িতে দিয়ে আসা হয় মাতৃস্নেহের গাড়িতেই। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘সোমবার মহম্মদবাজারের এক শিশুর পা ভেঙেছিল, তাকেও হাসপাতালে পৌঁছনো হয়েছে। থ্যালাসেমিয়া রক্ত নেওয়ার জন্য হাসপাতালে পৌঁছনো হয়েছে আর এক শিশুকে।’’ জেলা পুলিশের দাবি, এই কয়েক দিনে ১০০-র বেশি পরিষেবা দিয়েছে মাতৃস্নেহ। প্রতিনিয়ত ফোনও আসছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy