Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

আনাজ-ফলে আশার আলো

হোটেলে কাজ করতে গিয়ে আনাজের দাম সম্বন্ধে একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল। লকডাউনে ঘরবন্দি মানুষ বাজারে যেতে পারছেন না।

বদল: শসা, বেল বিক্রি করছেন সুদর্শন মহন্ত। নিজস্ব চিত্র

বদল: শসা, বেল বিক্রি করছেন সুদর্শন মহন্ত। নিজস্ব চিত্র

বাসুদেব ঘোষ
বোলপুর শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২০ ০২:৪৯
Share: Save:

নিজে রাঁধুনি অথচ নিজের রান্নাঘরেই চাল বাড়ন্ত। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কয়েকদিন আধপেটা খেয়ে থাকার পরে বোলপুরের শুঁড়িপাড়ার যুবক যাদব প্রবীণ সূর্যকান্ত বুঝতে পারলেন লকডাউনের মেয়াদ বাড়তে থাকায় এভাবে আর বেশিদিন চলবে না। আদতে মহারাষ্ট্রের লাতুরের বাসিন্দা এই যুবক বোলপুরের একটি লাইন হোটেলে রান্নার কাজ করছিলেন বছর আটেক ধরে। সাত হাজার টাকা বেতনে বাড়ি ভাড়া দিয়ে কোনও রকমে সংসার চলে যাচ্ছিল। শান্তিনিকেতনের পরিবেশে বাংলাটাও রপ্ত করে ফেলেছিলেন ভালই। কিন্তু লাইন হোটেলও বন্ধ হয়ে গেল লকডাউন শুরু হওয়ার পরে। মালিক জানিয়ে দিলেন হোটেল বন্ধ থাকায় মাইনে মিলবে না। কিছুদিন চেয়েচিন্তে চললেও বেশিদিন যে এভাবে চলবে না বুঝতে পেরেছিলেন দ্বিতীয় দফার লকডাউন শুরু হওয়ার পরেই। শুরু করলেন বিকল্প পেশার সন্ধান। কিন্তু কাজ খুঁজলেই বা এই বাজারে কাজ দিচ্ছে কে?

হোটেলে কাজ করতে গিয়ে আনাজের দাম সম্বন্ধে একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল। লকডাউনে ঘরবন্দি মানুষ বাজারে যেতে পারছেন না। তাই ঘরের দোরে যদি রোজকার রান্নার জন্য টাটকা আনাজ পৌঁছে যায় তার থেকে ভাল আর কী হবে, এই ভাবনাটা মাথায় আসার পরেই ঠেলাগাড়ি জোগাড় করে শুরু করলেন আনাজ ফেরি। হোটেলে চাকরির মতো নিশ্চিত রোজগার না হোক এই বাজারে কোনও রকমে খেয়ে-পরে চলে যাচ্ছে যাদবের। যাদব নিজেই বলেন, ‘‘অনেকেই অন্য পেশা ছেড়ে এখন আনাজ ফেরি করছে। মানুষকে খেতে হবেই। তা সে যেভাবেই হোক। এলাকার বাজার থেকে কিনেই বিক্রি করছি সামান্য লাভে। তবে লকডাউন খুললেই পুরনো কাজে ফিরে যাব।’’ শহরের পথে এখন প্রতিদিনই অসংখ্য যাদব চোখে পড়ে। যাঁরা পেশা বদলেছেন পেটের তাগিদে।

বোলপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুদর্শন মহন্ত অবশ্য পেশা বদলাননি, মাধ্যম বদলেছেন। চৌরাস্তার মোড়ে ফুটপাতে প্লাস্টিকের সামগ্রীর ব্যবসা ছিল তাঁর। লকডাউন শুরু হওয়ার পরে সেসব নিয়ে বসা যাবে না সাফ জানিয়ে দিল প্রশাসন। ঘুরে ঘুরে ফেরি করার উপায় নেই। তাই ঠিক করলেন ওই একই জায়গায় ফলের দোকান দেবেন। পাইকারি বাজার থেকে ফল কিনে বসতে শুরু করলেন প্রতিদিন। সুদর্শন বলেন, ‘‘নতুন ব্যবসায় লাভ কম হলেও সংসার চলে যাচ্ছে। লকডাউন উঠুক তখন আবার ব্যবসা বদলাবো বা দুটোই একসঙ্গে করব। তাতে লাভ বেশি হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy