প্রতীকী ছবি
খাঁ-খাঁ করছে মন্দির চত্বর। সকালে এক বার মন্দিরের দরজা খুলছে। ভক্তদের পরিচিত কোলাহল, ঘণ্টাধ্বনির বদলে মন্দির চত্বরে শোনা যাচ্ছে নাম না জানা পাখির ডাক আর পাতা ঝরার শব্দ।
পঞ্চকোটরাজের শেষ রাজধানী কাশীপুরের কালভৈরব থেকে পুঞ্চার বুধপুরের বুদ্ধেশ্বর, পুরুলিয়া ১ ব্লকের চিড়কার গৌরীনাথ থেকে পাড়ার আনাড়ার বাণেশ্বর—পুরুলিয়া জেলার সর্বত্রই শিবমন্দিরে এ বার গাজনে অন্য ছবি দেখা যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে এ বার সর্বত্রই ভিড় এড়াতে গাজন বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘লকডাউন-এ ভিড় জমানোর প্রশ্নই ওঠে না। মেলা কমিটিগুলি নিজেরাই নোটিস দিয়ে মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’
চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন থেকেই নীলপুজোর ব্রত শুরুর মধ্যে দিয়ে জেলায় গাজনের সূচনা হয়। সারা বৈশাখ মাস জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় মেলা চলে। কোথাও দু’দিন, কোথাও তিন দিন, কোথাও টানা সপ্তাহ জুড়ে মেলা হয়। এ বার সব বন্ধ। নোটিস দিয়ে, মাইকে ঘোষণা করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মেলাও।
কংসাবতী তীরে পুঞ্চার বুধপুর বুদ্ধেশ্বর মন্দির প্রাঙ্গণে ও টুশ্যামা আদিনাথ মন্দির প্রাঙ্গণে চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে গাজন ও নীলপুজোয় জনসমাগম বন্ধ থাকবে বলে নোটিস দেওয়া হয়েছে। নোটিস দিয়ে গাজন বন্ধের কথা জানিয়ে দিয়েছে বাঘমুণ্ডির লহরিয়া শিবমন্দির কমিটিও। পুরুলিয়া ২ ব্লকের বেলমা অষ্টগ্রামী শিবমন্দির কমিটির তরফেও নোটিস জারি করে চড়ক পুজোর অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়েছে। পাড়া ব্লকের লিপানিয়া ও পুরুলিয়া ২ ব্লকের সিহলি গ্রামের গাজনও একই কারণে স্থগিত রাখা হয়েছে।
পঞ্চকোট রাজবংশের হাত ধরে শুরু হওয়া কাশীপুরের শতাব্দী প্রাচীন নপাড়ার কাল ভৈরবনাথের গাজনও বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তাদের তরফে কাজল মোদক। এ বার বন্ধ কাশীপুরের বড়রা গ্রামের চৈত্র সংক্রান্তির গাজনও। পুরুলিয়া ২ ব্লকের সিহলি গ্রামের বাসিন্দা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হলধর মাহাতো উপবাস রেখে ‘ভক্তা’ হন। তিনিও বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে গাজন করা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy