প্রতীকী ছবি।
জেলায় ফিরে আসা আরও এক পরিযায়ী শ্রমিকের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ল! এ বার নলহাটি ১ ব্লকের সরকারি নিভৃতবাসে থাকা এক যুবকের করোনা-পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। ওই যুবক সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে বীরভূমে ফিরেছেন। কিন্তু, তাঁর শরীরে করোনার কোনও উপসর্গ ছিল না। নিয়মমাফিক লালারসের পরীক্ষায় কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। এর আগে রামপুরহাট ১ ব্লকের বাসিন্দা, কলকাতা-ফেরত এক শ্রমিকেরও করোনা-পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। উপসর্গহীন এই সব করোনা-রোগীরাই আপাতত মাথাব্যথার কারণ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের।
এই নিয়ে জেলায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল সাতে। এর আগে ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক, রামপুরহাট ১ ব্লক এবং দুবরাজপুর ব্লকের মোট ছ’জনের করোনো-পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছিল। তবে, তাঁদের মধ্য সুস্থও হয়ে উঠেছেন পাঁচ জন। ফলে, জেলায় সক্রিয় করোনা-রোগীর সংখ্যা সোমবার পর্যন্ত দুই। সোমবারই বোলপুর কোভিড হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে রামপুরহাট ১ ব্লক এবং দুবরাজপুরের দুই করোনা আক্রান্ত যুবককে।
বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার এক কর্তা জানান, নলহাটির যুবকরে মতোই করোনা-পজ়িটিভ হলেও প্রথম থেকে এই দু’জনের কোনও উপসর্গ ছিল না। কোভিড হাসপাতালে ভর্তির পরেও নতুন করে অসুস্থতা দেখা যায়নি। ২ তারিখ তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল। তারপর থেকে দশ দিন কেটেছে। কোনও সমস্যা না থাকলে নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী বাড়িতে পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, নতুন যে যুবক করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি নলহাটি ১ ব্লক প্রশাসনিক কার্যালয় সংলগ্ন সরকারি নিভৃতবাসে গত ৮ মে থেকে ছিলেন। পেশায় রাজমিস্ত্রি ওই যুবকের বাড়ি নলহাটির কলিঠা পঞ্চায়েত এলাকায়। ৮ মে তাঁর লালারস সংগ্রহ করা হয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরীক্ষাগার থেকে রবিবার গভীর রাতে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় রিপোর্ট এসে পৌঁছয়। ওই যুবককে এ দিন দুপুরেই বোলপুরে কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, আক্রান্ত যুবক নলহাটির সরকারি নিভৃতবাসে যে ঘরে ছিলেন, সেখানে ৫ জন ছিলেন। স্বাস্থ্য দফতর ওই ৫ জন তো বটেই, সঙ্গে নিভৃতবাসে থাকা আরও ৮৮ জনের লালারস সংগ্রহ করবে। নিভৃতবাসে যাওয়া চিকিৎসক, নার্স, ব্লক অফিসের কর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ার এবং আক্রান্ত যুবকের পরিবারের লোকজনের তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে।
নলহাটির ওই যুবক এ দিন ফোনে জানান, তিনি ময়ূরেশ্বরের এক প্রধান মিস্ত্রির অধীনে পশ্চিম মেদিনীপুরের নাড়াজোল বাজার এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। লকডাউন চলাকালীন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন কোনও কাজ হচ্ছিল না। কাজ না থাকার জন্য নাড়াজোলে অন্যান্যদের সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে গৃহবন্দি ছিলেন। কিন্তু পরিবারের কথা ভেবে ৫ মে সাইকেলে ওই যুবক এবং হেডমিস্ত্রি-সহ ছ’জন বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। ৭ মে সন্ধ্যায় হেডমিস্ত্রির বাড়িতে সকলে পৌঁছন।
ওই যুবকের দাবি, ৭ মে গভীর রাতে হেডমিস্ত্রির বাড়ি থেকে মোটরবাইকে নলহাটিতে নিজের বাড়ি জন্য বেরিয়েছিলেন। ৮ মে সকালে বাড়ি পৌঁছনোর পরে তিনি নলহাটি ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যান। পরীক্ষা করার পরে তাঁকে সরকারি নিভৃতবাসে রেখে দেওয়া হয়। সেখানে থাকাকালীন যুবকটির লালারস সংগ্রহ করা হয়। যদিও তাঁর কোনও উপসর্গ ছিল না।
তবে, রামপুরহাট ১ ব্লক এবং নলহাটি ১ ব্লকের দুই করোনা আক্রান্ত যুবকই প্রশাসনের অগোচরে বাড়িতে ফিরেছেন। এবং পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি প্রতিবেশীদের সঙ্গেও মিশেছেন। প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতরের অগোচরে বাড়িতে চলে এসে পরবর্তীতে পাড়া-পড়শির চাপে পড়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে সরকারি নিভৃতবাসে ঠাঁই হয় দু’জনের। নেওয়ার পরে সেখানে লালারস সংগ্রহ করার পরে করোনা পরীক্ষায় পজ়িটিভ ধরা পড়ছে। বর্তমানে এই বিষয়টিই প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের কাছে উদ্বেগের।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৩ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক এসেছেন। জেলার বিভিন্ন সরকারি নিভৃতবাসে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy