প্রতীকী ছবি।
মরসুমি ডেঙ্গি আর ম্যালেরিয়া চোখ রাঙাচ্ছে। এ দিকে, বাঁকুড়া জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার পার হয়ে গিয়েছে। প্রতিদিন নতুন করে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়লেও ‘মাস্ক’ পরা বা স্বাস্থ্য-বিধি মানার বিষয়ে অনেকেই সচেতন হচ্ছেন না। পুজোর সময়ে নতুন করে সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়লে রোগীদের কোথায় ভর্তি রাখা হবে, তা নিয়েই চিন্তায় স্বাস্থ্য-কর্তারা।
শনিবার প্রকাশিত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, বাঁকুড়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫,৭০৯। করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। তার উপরে রয়েছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার জোড়া হানা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ বছর এখনও পর্যন্ত বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলায় ৫৪ জন ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় ৩৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলায় ৫৭ ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় ৪। তবে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় দু’টি স্বাস্থ্য-জেলাতেই এখনও কোনও মৃত্যুর ঘটনা নেই বলে দাবি করা হয়েছে।
পুজোর আর অল্প কয়েকদিন বাকি। দফায় দফায় বৃষ্টি চলছে। আর চলছে কেনাকাটা। জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশের আশঙ্কা, জমা জলে মশার উপদ্রব বাড়বে। বাড়তে পারে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রকোপও। এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই বাজারে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। মাস্ক পরা, স্বাস্থ্য-বিধি মানা বা দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে বেশির ভাগ মানুষেরই ঢিলেঢালা ভাব দেখা যাচ্ছে।’’ পুজোয় প্রচুর লোকজন বাড়িতে ফিরবেন। আনলক পর্বের শুরু থেকেই বাইরে থেকে ফেরার পরে, কোয়রান্টিন থাকার বাধ্যবাধকতা শিথিল হয়েছে। ফলে, নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ।
এ সবের আঁচ পেয়েই আগাম আলোচনা শুরু হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মধ্যে। তাঁদের কেউ কেউ মেনে নিচ্ছেন, সংক্রমণ চট করে বেড়ে গেলে রোগীদের রাখার ব্যবস্থা করাটাই বড় চিন্তার বিষয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জেলার একমাত্র কোভিড হাসপাতাল ওন্দা সুপার স্পেশালিটিতে মোট ২৫০টি শয্যা রয়েছে। কিছু দিন আগে পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ২০০ রোগী সেখানে ভর্তি থাকছিলেন। স্বাস্থ্য-কর্তাদের দাবি, ইদানিং রোগী ভর্তির গড় কিছুটা কমে দেড়শোর মধ্যে থাকছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার আওতায় ১৬টি ব্লকে ১৫টি সেফ হাউস রয়েছে। তাতে মোট ৪৫৪ জন রোগীকে রাখা সম্ভব। বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার ছ’টি ব্লকে সেফ হাউস রয়েছে ন’টি। তাতে রাখা যেতে পারে মোট ২১৬ জনকে।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, “রাস্তাঘাটে বেরনো মানুষজনের অনেকেই মাস্ক পরছেন না। বাজারহাটে নিরাপদ দূরত্বও বজায় থাকছে না। পুজোর মরসুমে এটাই বিপদ ডেকে আনতে পারে। এক ধাক্কায় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে তাঁদের রাখার জন্য সেফ হাউসের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে ভাবছি আমরা। হোম আইসোলেশনে রাখার উপরেও জোর দিচ্ছি।” তিনি জানান, করোনার পাশাপাশি, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিয়ে সতর্ক থাকতে হচ্ছে। জ্বরে আক্রন্ত ব্যক্তিদের একই সঙ্গে করোনা, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নির্ণয়ের পরীক্ষা করানোর বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “জেলায় যা সেফ হাউস রয়েছে, এখনও পর্যন্ত তা যথেষ্ট বলেই মনে হচ্ছে। তবে দরকার হলে আরও বাড়ানো হবে।” মশাবাহিত রোগগুলি আটকাতে নিয়মিত কর্মসূচি চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy