গুরুপদ মেটে। ফাইল চিত্র
দশ দিনের লড়াই শেষ। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল বাঁকুড়া জেলার ইন্দাসের তৃণমূল বিধায়ক গুরুপদ মেটের। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। রাজ্যের মন্ত্রী তথা বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাওড়ার একটি বেসরকারি কোভিড হাসপাতালে গুরুপদবাবুর মৃত্যু হয়। দলের অপূরণীয় ক্ষতি হল।’’ এর আগে ফলতার বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ ও পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বিধায়ক সমরেশ দাশ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁরাও তৃণমূলের।
খবর পেয়ে ইন্দাসের হাজরাপাড়ায় গুরুপদবাবুর বাড়ির কাছে ভিড় করেন দলের কর্মী ও সাধারণ মানুষ। গুরুপদবাবুর ভাই তারাপদ মেটে বলেন, ‘‘পরিবারের কাকে, কী ভাবে সামলাব ভেবে পাচ্ছি না।’’ তিনি জানান, গুরুপদবাবুর স্ত্রী রুনু মেটে ও তাঁর ১৬ বছরের ছেলে ও সাড়ে চার বছরের মেয়ে রয়েছে। রুনুদেবী নিজেও করোনা আক্রান্ত হয়ে ইন্দাসের সেফহাউসে রয়েছেন। রাতে হাওড়ায় রওনা দেন তারাপদবাবুরা।
তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে গুরুপদবাবুর জ্বর ও শরীরে ব্যথার উপসর্গ থাকায় করোনা পরীক্ষা করানো হয়। বিধায়ক করোনা আক্রান্ত জানার পরে, ২২ সেপ্টেম্বর তাঁকে ওন্দা কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বাঁকুড়ার স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, ‘‘করোনা আক্রান্ত বিধায়কের শ্বাসকষ্ট-সহ আরও নানা উপসর্গ ছিল। ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়।’’
সূত্রের খবর, গত ২৪ সেপ্টেম্বর গুরুপদবাবুকে হাওড়ার ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু তাঁর অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে থাকে। কিছু দিন ভেন্টিলেশনে ছিলেন।
সম্প্রতি দলে তাঁর গুরুত্ব বেড়েছিল। গুরুপদবাবুকে তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র ও আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ইন্দাসের ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখ হামিদ বলেন, ‘‘তৃণমূলের প্রায় জন্মলগ্ন থেকে রাজনীতি করা গুরুপদবাবু আদ্যন্ত সৎ ও পরোপকারী বলে পরিচিত ছিলেন। ২০১১ সাল থেকে টানা দু’বার তিনি ইন্দাসের বিধায়ক।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রের দাবি, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল নেতাদের ভিড়ে গুরুপদবাবু ব্যতিক্রম ছিলেন।’’ বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘‘সাদাসিধে প্রকৃতির গুরুপদদার এই চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না।’’
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল সততা নিয়ে চলে। প্রথমবার বিধায়ক হওয়ার পরে, গুরুপদবাবু কয়েকমাস ভাতা পাননি। কলকাতায় থাকার খরচ তুলতে নিজের দু’টি গরু বিক্রি করেছিলেন। আমি সাহায্য করলেও ভাতা পেয়ে তা ফেরত দেন। এক জন আদর্শবান নেতাকে হারালাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy