Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

রেফার করা রোগীকে নিল না অ্যাম্বুল্যান্স

হাসপাতাল চত্বরেই সার সার দাঁড়িয়েছিল অ্যাম্বুল্যান্স। যদিও পূজা দেবীর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, টানা দু’ঘণ্টা চেষ্টা করেও তাঁরা এক জন অ্যাম্বুল্যান্স চালককেও রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি করাতে পারেননি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২০ ০২:২৬
Share: Save:

হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা নিয়ে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বিষ্ণুপুর পুরসভার কাদাকুলি বাউরিপাড়ার বাসিন্দা পুজা বাউরি। সোমবার রাতে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটলে পূজা দেবীকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিষ্ণুপুর হাসপাতালের ডাক্তারেরা। সেই মতো, রাত ১০টা নাগাদ পূজাদেবীকে বাঁকুড়া নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স খুঁজতে শুরু করেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা।

হাসপাতাল চত্বরেই সার সার দাঁড়িয়েছিল অ্যাম্বুল্যান্স। যদিও পূজা দেবীর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, টানা দু’ঘণ্টা চেষ্টা করেও তাঁরা এক জন অ্যাম্বুল্যান্স চালককেও রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি করাতে পারেননি। অবশেষে স্থানীয় কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় একটি গাড়ি জোগাড় করা যায়।

এই ঘটনা একমাত্র নয়। বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, করোনা সংক্রমণের কারণে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চালকই রোগী অ্যাম্বুল্যান্সে তুলতে চাইছেন না। কখনও সরাসরি করোনা সংক্রমণের কথা তুলে, কখনও নানা অজুহাত দিয়ে তাঁরা রোগী পরিবহণ এড়িয়ে যাচ্ছেন।

বিষ্ণুপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে শতাধিক অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু কোনও রোগীর বিপদে অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা হাজির হন না। বিভিন্ন অজুহাতে তাঁরা পালিয়ে যান। কেউ আবার সাধারণ রোগীকেও করোনা- আক্রান্ত ভেবে বেঁকে বসেন। এমন হলে তো মানুষকে পরিষেবা দেওয়া যাবে না। করোনার আতঙ্কের জেরে অন্য রোগীরও প্রাণসংশয় দেখা দেবে। পুরসভার পক্ষ থেকে আমরা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে এ নিয়ে অভিযোগ জমা দিতে চলেছি।”

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িৎকান্তি পাল বলেন, “এই মুহূর্তে হাসপাতালে ‘অ্যাম্বুল্যান্স-১০২’ রয়েছে ৬টি। তার মধ্যে দু’টি সংরক্ষিত রাখা হয়েছে কোভিড-১৯ এর রোগীদের জন্য। সাধারণ রোগীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য চারটি অ্যাম্বুল্যান্স যথেষ্ট নয়। অন্য দিকে, অন্য গাড়ি বা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরাও কিন্তু সাধারণ রোগীকে করোনা আক্রান্ত বলে ভুল করছেন, বা ভয়ে পরিষেবা দিতে চাইছেন না। এতে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা নিয়ে একটা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। হাসপাতালের ‘অ্যাম্বুলেন্স-১০২’ –এর চালকেরা পরিষেবা দিতে চাইছেন না বলে কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত আমাদের জানা নেই। তবু হাসপাতাল চত্বরে থাকা অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের সঙ্গে কথা বলা হবে।”

প্রবীণ অ্যাম্বুল্যান্স চালক ভোলানাথ অধিকারী বলেন, “হাসপাতালের রেফার হওয়া রোগী আমরা পাই না। অ্যাম্বুল্যান্স- ১০২ এর চালকেরাই রেফার রোগীদের নিয়ে যায়। বাইরের রোগী পেলে আমরা তো নিয়ে যাবই। আসলে সোমবার জল-ঝড়ের রাতে কেউই ছিল না। করোনার আতঙ্ক তো আছেই। হয়তো সে কারণে বেশি টাকা দিলেও চালকেরা যেতে রাজি হচ্ছিলেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy