Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Purulia TMC leader murder

আদ্রায় তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার কংগ্রেস প্রার্থী, সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব ‘হাত’ শিবির

ধনঞ্জয় খুনে আরশাদ ছাড়াও মহম্মদ জামাল নামে আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে আদ্রা থানার পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার রঘুনাথপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়।

(বাঁ দিকে) তৃণমূল নেতা ধনঞ্জয় চৌবে খুনে ধৃত কংগ্রেস প্রার্থী আরশাদ হোসেন।

(বাঁ দিকে) তৃণমূল নেতা ধনঞ্জয় চৌবে খুনে ধৃত কংগ্রেস প্রার্থী আরশাদ হোসেন। নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ ১৪:৪০
Share: Save:

পুরুলিয়ায় তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলীয় পার্টি অফিসে গুলিতে খুন হন আদ্রা শহর তৃণমূলের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। আততায়ীদের গুলিতে জখম হয়েছেন তাঁর দেহরক্ষী রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল শেখর দাসও। সেই ঘটনায় শুক্রবার বেতো গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী আরশাদ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছে কংগ্রেস।

ধনঞ্জয় খুনে আরশাদ ছাড়াও মহম্মদ জামাল নামে আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে আদ্রা থানার পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার রঘুনাথপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হতে পারে। জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদ্রা থেকে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের আদালতে হাজির করিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে। তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তিন জনকে আমরা চিহ্নিত করেছি। বাকিটা ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যাবে।’’

গ্রেফতারি নিয়ে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, পঞ্চায়েত ভোটে তাদের কোণঠাসা করতেই দলীয় প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুনের ঘটনার নেপথ্যে শাসক তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল এবং সিন্ডিকেট-বিবাদ থাকতে পারে বলে দাবি হাত শিবিরের। দলের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘খুনের ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। আমাদের দলের কেউ যদি সত্যিই এই ঘটনায় জড়িয়ে থাকেন, তাঁর অবশ্যই শাস্তি পাওয়া উচিত। কিন্তু এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আর নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারে একমাত্র সিবিআই-ই।’’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সন্ধ্যায় পার্টি অফিসের বারান্দায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে বসেছিলেন ধনঞ্জয়। সঙ্গে শেখরও ছিলেন। সেই সময় আচমকাই দু’জন বাইকে করে পার্টি অফিসে এসে গুলি ছুড়তে আরম্ভ করেন। অন্তত ছয় রাউন্ড গুলি চলেছে। এর পর ঘটনাস্থলে মোটরবাইক ফেলে রেখেই সেখান থেকে পালান আততায়ীরা। স্থানীয়েরাই দু’জনকে রঘুনাথপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই ধনঞ্জয়কে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পরে শেখরকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

গুলিকাণ্ডের পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি আদ্রায়। এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের আবহে এই ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার আদ্রার রাস্তা অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। সকাল থেকে দোকানপাটও বন্ধ শহরে। পুলিশ সূ্ত্রে খবর, যে পার্টি অফিসে ধনঞ্জয়কে খুন করা হয়েছে, তার পার্শ্ববর্তী এলাকার সিসি ক্যামেরা থেকে বেশ কিছু ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখেই তিন জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আততায়ীরা যে বাইকটি ফেলে গিয়েছেন, সেটির নম্বর প্লেটও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, নম্বর প্লেট বদলেই খুনের পরিকল্পনা করা হয়। সেটি চুরির বাইক হতে পারে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ।

যে ভাবে ধনঞ্জয়কে খুন করা হয়েছে, তা কোনও পেশাদার শুটারের কাজ বলে মনে করছেন পুলিশের একটি অংশ। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, সেই কারণে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও খোঁজখবর করা শুরু করেছেন তাঁরা। কিন্তু আততায়ীরা বাইকটি কেন ফেলে গেলেন, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC leader murder purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE