Advertisement
E-Paper

মৃত্যুর ১১ দিন আগে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দেন পূর্ণিমা কান্দু! পাকস্থলীতে ক্ষতিকর পদার্থ, ইঙ্গিত ময়নাতদন্তে

পরিবারের দাবি, মৃত্যুর ১১ দিন আগে নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং পুরুলিয়া জেলার পুলিশ সুপারকে চিঠি দেন কংগ্রেস কাউন্সিলর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু।

Purnima Kandu

(বাঁ দিকে) তপন কান্দু। পূর্ণিমা কান্দু (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:১৬
Share
Save

ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দুর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, তাঁকে বিষপ্রয়োগ করে খুন করা হয়েছে — এমন অভিযোগ আগেই তুলেছিল পরিবার। পূর্ণিমার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে বলে সূত্রের খবর। জানা যাচ্ছে, পাকস্থলীতে ‘ক্ষতিকারক পদার্থ’-এর উপস্থিতি মিলেছে। পরিবারের এ-ও দাবি, মৃত্যুর ১১ দিন আগে নিজের নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং পুরুলিয়া জেলার পুলিশ সুপারকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা।

গত শুক্রবার পুরুলিয়ার ঝালদায় বাড়ি থেকে পূর্ণিমাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। প্রতিবেশীদের সাহায্যে কংগ্রেস কাউন্সিলরকে ঝালদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অভিযোগ ওঠে খুনের। তদন্তের স্বার্থে পূর্ণিমার দেহ যে ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল, সেই ঘরটি সিল করে রেখেছে পুলিশ। বাড়ির সামনে পাহারায় রাখা হয়েছে সশস্ত্র পুলিশকর্মীদের।

এখন পরিবারের তরফে প্রকাশ্যে আনা চিঠিতে দেখা যাচ্ছে, পূর্ণিমা নিজের নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তিত ছিলেন। স্বামী তপনের হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে ঝালদা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লিখেছিলেন, তাঁর এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে দু’জন নিরাপত্তারক্ষীকে মোতায়েন করেছিল প্রশাসন। কিন্তু পরে তাঁদের কেউই আর নিরাপত্তা দেননি। তাঁর এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার জন্য যে দু’জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের ওই কর্তব্য থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় নিজের নিরাপত্তার জন্য চিন্তিত ছিলেন পূর্ণিমা। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘ঝালদার বাড়িতে আমি আমার নাবালক পুত্র এবং কন্যার সঙ্গে থাকি। পরিবারে কোনও পুরুষ সদস্য নেই। আমি বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়েছি যে, আমার স্বামীর খুনে অভিযুক্তেরা আমাকে এবং আমার পরিবারকে ‘টার্গেট’ করতে পারে। অভিযুক্তেরা জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে আমরা ভীত। আমাকে এবং আমার পরিবারকে যদি নিরাপত্তা দেওয়া হয়, তা হলে বাধিত থাকব।’’

২০২২ সালের ১৩ মার্চ ঝালদা-বাঘমুন্ডির রাস্তায় গোকুলনগরের কাছে সান্ধ্যভ্রমণে বেরিয়ে খুন হন পূর্ণিমার স্বামী, কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন। ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কংগ্রেস কাউন্সিলরকে গুলি করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। স্বামীর মৃত্যুর পর রাজনীতিতে প্রবেশ পূর্ণিমার। ঝালদা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন তিনি। সে সময় ত্রিশঙ্কু অবস্থায় ঝুলে থাকা ঝালদা পুরসভার উপ পুরপ্রধানও হন তিনি। পূর্ণিমার অভিযোগের ভিত্তিতেই তপন খুনের তদন্তে নামে সিবিআই। রাজ্য পুলিশ এবং সিবিআই সাত জনকে গ্রেফতার করেছিল। কান্দু পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে বেশ কয়েক জন ইতিমধ্যেই জামিনে মুক্ত। তার পর থেকে আশঙ্কায় ছিলেন পূর্ণিমা। হামলার আশঙ্কায় গত ১ অক্টোবর রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি।

পরিবারের দাবি, পূর্ণিমার মৃত্যুর নেপথ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে। তপনের ভাইপো, ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার মিঠুন কান্দু বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও হাতে পাইনি। তাই সেখানে কী উল্লেখ রয়েছে, তা জানা নেই। তবে কাকিমাকে খুন করা হয়েছে, সেই সন্দেহের কথা আমি আগেও জানিয়েছিলাম। আবারও জানাচ্ছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই আমি থানায় লিখিত অভিযোগ জানাব।’’ তবে পুজোর আগে পূর্ণিমা নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্য প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছিলেন কি না, সেটা তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেন মিঠুন।

Tapan Kandu Murder Jhalda Municipality West Bengal Police purulia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy