আবাস যোজনার বাড়ি। — ফাইল চিত্র।
দাবি মতো কাটমানির টাকা না দেওয়ায় মুরারই ১ ব্লকের ডুমুরগ্রাম পঞ্চায়েতের গণেশপুর গ্রামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার এক জনের টাকা ঢুকে গেল একই নামের অন্য জনের অ্যাকাউন্টে। এমনই অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের পঞ্চায়েত সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা এবং অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাসক দলের জনপ্রতিনিধি ও নেতা।
অভিযোগ, গণেশপুর গ্রামে নূর ইসলাম শেখ নামে দু’জন ব্যক্তি রয়েছে। এক জনের নাম আবাস যোজনায় আছে। কিন্তু টাকা ঢুকেছে অন্য নূর ইসলামের অ্যাকাউন্টে। প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা তুলেও নেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে।
যে নূর ইসলামের নাম আবাস যোজনার তালিকায় ছিল তাঁর অভিযোগ, ‘‘মাটির বাড়িতে কষ্ট করে বাস করছি। খড়ের ছাউনি দেওয়ার সামর্থ্য নেই। বৃষ্টির জল থেকে বাঁচতে ত্রিপল দেওয়া আছে। ঝড় হলে ভয়ে কাঁপতে শুরু করি। এই বোধহয় ঘরের ছাউনি উড়ে যাবে। আমার নাম আবাস যোজনার তালিকায় ছিল। এর মধ্যে পঞ্চায়েত সদস্য জাবের আলি ও মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বক্তিয়ার হোসেনের যোগসাজশ করে অন্য নূর ইসলামের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। বিষয়টি জানার পরে পঞ্চায়েত, ব্লক অফিসে জানিয়েছি। কোনও সুরাহা না হওয়ায় মহকুমা শাসকের দফতরে দিন তিনেক আগে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দু’কিস্তিতে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা দেওয়া হয়। যে উপভোক্তার নাম তালিকায় থাকে তাঁর সমস্ত নথি পরীক্ষার পরে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়। অর্ধেক কাজ হওয়ার পরে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা অ্যাকাউন্টে ঢোকে। প্রশাসন সূত্রে খবর, অভিযোগ পেয়ে অন্য নূর ইসলামকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল।
জাবের আলি ও বক্তিয়ার হোসেন— দু’জনই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘উপভোক্তাদের নথি যাচাইয়ের পরে অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে। এই প্রক্রিয়ায় পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের কোনও হাত থাকে না। ভুল করে যে নূর ইসলামের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছিল তাঁকে টাকা ফেরৎ দেওয়ার কথা বলা হয়। আমাদের উপরে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’
তালিকায় নাম থাকা নূর ইসলাম বলেন, ‘‘এলাকায় কাজ নেই বলে মুম্বইয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে কোনও রকম সংসার চালাচ্ছি। টাকা ফেরৎ পেলে বাড়ি করার কাজ শুরু করব।’’ গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যে নূর ইসলামের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে তিনিও পরিযায়ী শ্রমিক। দেওঘরে কাজ করতে গিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক অরিণ দত্ত বলেন, ‘‘কাটমানিতে তৃণমূলের ছোট, মেজো ও বড় নেতা— সকলেই জড়িত। আবাস নিয়ে দল খুব শীঘ্রই বড় আন্দোলন শুরু করবে।’’
তৃণমূলের জেলা সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা ছিল না। তবে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ হলে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবেন আধিকারিকরা। তৃণমূলের কেউ জড়িত আছে কিনা তা দলগত ভাবে খোঁজ নেওয়া হবে। আর বিরোধীদের কোনও কাজ নেই বলে দলকে বদনাম করার চেষ্টা করছে।’’
মুরারই ১ বিডিও প্রণব চট্টরাজ বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে তিন বার নোটিস দেওয়া হয়েছে। এ সপ্তাহে আইন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy