বাঁ দিক থেকে মন্ত্রী, উল্টো দিকে পঞ্চায়েত প্রধান। ছবি: সমীর দত্ত
ভালুবাসার পরে এ বার বিশরী পঞ্চায়েত। নিজের বিধানসভা এলাকায় ফের আরও এক দলীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুকে অসম্মান করার অভিযোগ উঠল। যা নিয়ে বাগবিতণ্ডাও বাধল। এই ঘটনার পিছনে দলীয় দ্বন্দ্ব দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
বৃহস্পতিবার মানবাজার ১ ব্লকের বিশরী পঞ্চায়েত এলাকায় দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন মন্ত্রী সন্ধ্যারানি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গুরুপদ টুডু ও দলীয় নেতা-কর্মীরা। বিকেলে তাঁরা বিশরী পঞ্চায়েত অফিসে যেতেই গোলমালের সূত্রপাত ঘটে।
অভিযোগ, মন্ত্রীকে দেখেও বিশরী পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সজ্জিতা বেসরা নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াননি। মন্ত্রীকে বসতেও বলেননি। এতে মন্ত্রীকে অসম্মান করা হয়েছে বলে তাঁর ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ। শেষে মন্ত্রী নিজেই প্রধানের সামনে রাখা একটি প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে পড়েন। তারপরে মন্ত্রী ও তাঁর স্বামী এই ঘটনা নিয়ে সাঁওতালি ভাষায় প্রধানের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
পরে গুরুপদ অভিযোগ করেন, ‘‘পঞ্চায়েত প্রধানের সৌজন্যবোধের অভাব রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রী এলে দাঁড়িয়ে নিজের চেয়ার ছেড়ে দিতে হয়। তাঁর শিক্ষার ঘাটতি আছে।’’ মন্ত্রী সন্ধ্যারানি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের মানবাজার ১ ব্লক সভাপতি দেবেন্দ্রনাথ মাহাতো দাবি করেন, ‘‘যা ঘটেছে, তাতে মন্ত্রীকে অসম্মান করা হয়েছে। ব্যক্তি সন্ধ্যারানি টুডুকে কারও পছন্দ না-ও হতে পারে। কিন্তু এই ঘটনায় মন্ত্রী পদকে অসম্মান করা হল।’’
পঞ্চায়েত প্রধান সজ্জিতার পাল্টা দাবি, ‘‘আমার পঞ্চায়েত এলাকায় দলীয় কর্মসূচি হচ্ছে, অথচ আমাকেই কেউ জানাননি। এটা কেন হবে? তাছাড়া ওরা এই পঞ্চায়েতের অনুন্নয়ন নিয়ে অভিযোগ করছেন। অথচ আমরা যথেষ্ট কাজ করেছি। সম্মান পেতে হলে অন্যকে সম্মান দিতে জানতে হয়।’’
তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে বিশরী পঞ্চায়েতের শালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তথা মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ পাত্র দাবি করেন, ‘‘বিশরী পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্রতিটি নির্বাচনে তৃণমূল এগিয়ে থাকে। বিজেপির সঙ্গে মেলামেশা করা কিছু লোককে নিয়ে এ দিন দলের কর্মসূচি করা হয়েছে। আসলে এ সব করে কেউ কেউ শান্ত এলাকাকে ঘেঁটে দিতে চাইছেন। যাঁরা দলের বিরোধিতা করে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়ে কর্মসূচিতে থাকা যায় না।’’
ঘটনা হল, মাস খানেক আগে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে মানবাজার ১ ব্লকেরই ভালুবাসা পঞ্চায়েতে তৃণমূলের মহিলা প্রধান তাঁর অফিসে মন্ত্রী সন্ধ্যারানি এসেছেন জেনেও দোতলায় বসেছিলেন। নীচে নেমে তাঁকে স্বাগত জানাননি। তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠেরা।
ফের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল বৃহস্পতিবার। এ নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছেন বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলে উঁচুতলায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন। এ কথা দলের সবাই জানেন। এই ঘটনা তারই প্রতিফলন।’’ সে অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘প্রধানের মন্ত্রীকে সম্মান জানানো উচিত ছিল। তবে ঠিক কী ঘটেছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy