দুর্গা প্রতিমা।
মণ্ডপ তৈরির কাজ তদারকি করছেন সাজাহান মিদ্যা। দূরে পুজোর খরচপাতি নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত মহম্মদ আলি খান ও সুদীপ চক্রবর্তী। দুর্গাপুজো ঘিরে এমন সম্প্রীতির ছবি চোখে পড়ছে পাত্রসায়রের পাণ্ডুয়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামে দুর্গাপুজোর চল ছিল না। বছর দুয়েক আগে গ্রামের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ এক সঙ্গে মিলে শুরু করেন ষোলোআনার দুর্গাপুজো। পাণ্ডুয়া হাটতলার কাছে হওয়া ওই পুজো গোটা ব্লকে কার্যত সম্প্রীতির নজির হয়ে উঠেছে। গ্রামের বাসিন্দা তথা পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সাজাহান মিদ্যা বলেন, “গ্রামে দীর্ঘদিন হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনের পাশাপাশি বসবাস। গ্রামে দশহরা ছাড়া বড় উৎসব ছিল না। এক দিন গ্রামের মানুষের আলোচনায় উঠে আসে দুর্গাপুজো আয়োজনের কথা। পরে, সকলে মিলে ঠিক করেন দুর্গোৎসব হবে। ধর্ম আলাদা হলেও উৎসব সবার।”
পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য অসিত নন্দী বলেন, “দুর্গাপুজো ঘিরে গ্রামের সকলের ভীষণ উৎসাহ। হিন্দু ও মুসলিম, উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কমিটি গড়ে দায়িত্ব পালন করেন। সবাই এক সঙ্গে পাড়ায় ঘুরে চাঁদা সংগ্রহ করি। পুজোর আয়োজন করি।” বাজারের দায়িত্বে থাকা মহম্মদ আলি খান বলেন, “সবাই এক সঙ্গে হই হই করে বাজারে যাই। পুজোর আগে বিষ্ণুপুর থেকে সব বাজার করে আনতে হয়।” সুদীপও জানান, পুজোর সময়ে গ্রামের রূপটা যেন বদলে যায়। গ্রামের প্রায় সব পরিবারে আত্মীয়-পরিজনেরা আসেন। সব বাড়িতে সে সময়ে উৎসবের আমেজ।
বিসর্জনের শোভাযাত্রার দায়িত্বে থাকা মোমেজাদ মিদ্যা বলেন, “আমরা স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে রাখি। বিসর্জনে মহিলারাও যান। যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে দিকে কড়া নজর থাকে।” গ্রাম ছাড়ার মুখে দেখা গেল, ভিড় করে ঠাকুর গড়া দেখতে ব্যস্ত সোমা মাঝি, আহেলা বিবিরা। পুজো ঘিরে তারাও খুব ব্যস্ত। বাড়ি বাড়ি প্রসাদ বিলি করার দায়িত্ব পড়েছে যে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy