Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

চুরির ‘অপবাদ’, ছাদ থেকে ঝাঁপ ছাত্রীর

শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে গিয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ পেয়েছি। গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কেউ ছাড় পাবে না।’’

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ০১:১৩
Share: Save:

স্কুলের তিন তলার ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর জখম হল এক ছাত্রী। তার পরিবারের অভিযোগ, সহপাঠীরা টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন চালানোয় ছাত্রীটি ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পুরুলিয়া শহর লাগোয়া ওই বেসরকারি আবাসিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছে এই মর্মে বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ করেছেন ছাত্রীটির মা। তিনি নির্যাতনের জন্য মেয়ের চার সহপাঠীর নাম অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন।

বুধবার বেলায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর চিকিৎসা চলছে পুরুলিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ছাত্রীটির ডান পায়ে হাড়ে চিড় ধরেছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে গিয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ পেয়েছি। গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কেউ ছাড় পাবে না।’’

বলরামপুর থানা এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রী একাদশ শ্রেণিতে এই স্কুলে ভর্তি হয়। হস্টেলে সে আরও পাঁচ জন ছাত্রীর সঙ্গে থাকে। ছাত্রীর দাদা এ দিন দাবি করেন, স্কুল থেকে প্রথমে তাঁদের জানানো হয়েছিল, পায়ে শাড়ি জড়িয়ে ছাদ থেকে সে কোনও ভাবে

পড়ে গিয়েছে। তাঁরা হাসপাতালে এসে দেখেন তখনও জ্ঞান ফেরেনি। সন্ধ্যায় জ্ঞান ফিরলে ছাত্রীটি জানায়, চুরির অপবাদে টানা নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তাঁর কথায়, ‘‘বোন কপাল করে বেঁচে গিয়েছে বলে সব জানতে পারলাম। কিছু ঘটে গেলে বড় সর্বনাশ হয়ে যেত।’’

তার দিদির অভিযোগ, ‘‘গত সপ্তাহে ছুটিতে বোন বাড়ি এসেছিল। তখনই আমাকে জানিয়েছিল যে ওকে টাকা চুরির অপবাদ দেওয়া হয়েছে। এমনকি সে টাকা নিয়েছে বলে জোর করে মুচলেকাও লিখিয়ে নিয়েছিল সহপাঠীরা। বোন ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু অত্যাচার এতটা বেড়ে যাবে যে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করবে, ভাবিনি।’’

হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে ছাত্রীটি দাবি করে, ‘‘বেশ কয়েকদিন ধরে কয়েকজন সহপাঠী আমাকে উত্ত্যক্ত করছে। প্রথমে এক জন বলে আমি তার দুশোর কিছু বেশি টাকা নিয়েছি। পরে সেই টাকা তার বালিশের তলায় পাওয়া যায়। তারপরে আর এক জন দাবি করে তার আটশোর বেশি টাকা আমি নিয়েছি। আমি বারবার অস্বীকার করলেও ওরা মানসিক ভাবে নির্যাতন চালিয়ে যেতে থাকে। স্কুলের এক শিক্ষককে বলেও লাভ হয়নি। ওরা আমার মৃত্যু কামনা করত। শেষে মঙ্গলবার হস্টেল সুপারকে সব জানাই। রাতে তিনি আমাকে তাঁর কাছে রেখে দেন। সে জন্য বুধবার সকালে ওরা আরও নির্যাতন বাড়িয়ে দেয়। মারধরও করে। মাথা ঠিক ছিল না। স্কুলের ছাদে উঠে নীচে ঝাঁপ দিই।’’

ছাত্রীর মায়ের কথায়, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে উপযুক্ত পদক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

purulia student suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy