Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Raghunathpur

খেলাইচণ্ডী মেলা নিয়ে দড়ি টানাটানি তিন কমিটির

পশ্চিম বেড়ো চণ্ডী মন্দির উন্নয়ন কমিটির কর্মকর্তা অলক মাজির দাবি, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে মেলা পরিচালনা করছেন।

মেলার দাবিতে মিছিল। নিজস্ব চিত্র

মেলার দাবিতে মিছিল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫৯
Share: Save:

মেলা পরিচালনার দায়িত্ব চেয়ে প্রশাসনের কাছে তিনটি কমিটি আবেদন করায় এ বার ঐতিহ্যবাহী খেলাইচণ্ডী মেলা করা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

সূত্রের খবর, রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বেড়ো গ্রামের ওই মেলা তিনটি কমিটি করতে চাওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যার আশঙ্কা করছে রঘুনাথপুর থানার পুলিশ। বিষয়টি তারা রঘুনাথপুরের মহকুমা প্রশাসনকে জানায়। তারপরেই ৬ ও ৭ ডিসেম্বর তিনটি কমিটিকে নিয়ে বৈঠক করেন রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক তামিল ওভিয়া এস। কিন্তু সমাধানসূত্র বেরোয়নি।

মকর উৎসবের দিন থেকে শুরু হয় খেলাইচণ্ডী মেলা। হাতে সময় কম। তাই মেলা করার জন্য প্রশাসন দ্রুত অনুমতি দিক, এই দাবিতে রবিবার বেড়ো গ্রামে মিছিল করে প্রায় ২০০ বাসিন্দা। মিছিলে শামিল হন গ্রামের মহিলারাও। মিছিলের উদ্যোক্তাদের মধ্যে গৌতম দে, রবীন চন্দ্র বলেন, ‘‘তিনশো বছরের পুরনো এই মেলার দিকে তাকিয়ে থাকেন রঘুনাথপুর মহকুমার বাসিন্দারা। কয়েক হাজার লোকের রুটি-রুজির সংস্থান হয় এই মেলায়। সবাই চাইছেন, ঐতিহ্যবাহী এই মেলা করার অনুমতি দ্রুত দিক প্রশাসন।” স্থানীয় সূত্রের খবর, বেড়ো গ্রামে চণ্ডী মেলা শুরু করেছিলেন চণ্ডী মন্দিরের সেবাইতেরা। মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল লাঠি খেলা। তা থেকেই লোকমুখে মেলার নাম হয়ে যায় খেলাইচণ্ডী মেলা।

চণ্ডী মন্দিরের সেবাইত শ্রীনিবাস আচার্য গোস্বামী ২৩-২৪ বছর আগে মেলা পরিচালনায় দায়িত্ব লিজ় দেন স্থানীয় পশ্চিম বেড়ো চণ্ডী মন্দির উন্নয়ন কমিটির এক সদস্যকে। তারপর থেকে মন্দির উন্নয়ন কমিটি মেলা করে আসছিল। ২০১৫ সালে লিজ়ের মেয়াদ শেষ হয়। সেই থেকে মন্দিরের বর্তমান সেবাইত দুয়ারাকানাথ আচার্য গোস্বামী গ্রামের শ’তিনেক বাসিন্দাকে নিয়ে খেলাই চণ্ডী মাতা মেলা কমিটি তৈরি করে মেলা পরিচালনা করে আসছেন। কমিটির সভাপতি দুয়ারাকানাথ।

বর্তমানে পশ্চিম বেড়ো চণ্ডী মন্দির উন্নয়ন কমিটি এবং পঞ্চগ্রামীণ খেলাইচণ্ডী মেলা কমিটি নামের দু’টি কমিটি মেলা পরিচালনার দায়িত্ব চেয়ে আবেদন করে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে। তাতেই জটিলতা তৈরি হয়েছে।

সূত্রের খবর, বৈঠকে প্রশাসন প্রস্তাব দেয়, তিনটি কমিটি থেকে কয়েকজন প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করে হবে। সেই কমিটি মেলা পরিচালনা করবে। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি খেলাই চণ্ডী মেলা কমিটি।

পশ্চিম বেড়ো চণ্ডী মন্দির উন্নয়ন কমিটির কর্মকর্তা অলক মাজির দাবি, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে মেলা পরিচালনা করছেন। মেলা থেকে প্রাপ্ত অর্থে সংস্কার করে নতুন ভাবে তৈরি করা হয়েছে চণ্ডী মন্দির। তাছাড়া মেলা প্রাঙ্গণের অন্যান্য পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করার জন্য তাঁরা এ বার মেলা পরিচালনার দায়িত্ব চেয়েছিলেন। অলকের দাবি, ‘‘মেলা পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রশাসন সব পক্ষকে নিয়ে একটি কমিটি তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল। আমরা সম্মত হলেও খেলাইচণ্ডী মেলা কমিটি রাজি না হওয়ায় সমস্যা হয়।”

ইতিমধ্যেই তাঁরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বলে জানাচ্ছেন আর এক কমিটির সভাপতি তথা সেবাইত দুয়ারাকানাথ। তাঁর দাবি, ‘‘আদালত নির্দেশ দিয়েছে চণ্ডী মেলা করার আবেদন করবে খেলাই চণ্ডী মেলা কমিটি। তারপরেও আরও দু’টি কমিটি মেলা করার দায়িত্ব চেয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে। আদালতের নির্দেশেই স্পষ্ট, অন্য কেউ মেলা করতে পারবে না। তাহলে সব পক্ষকে নিয়ে মিলিত কমিটি করার বিষয়টি আসছে কোথা থেকে?”

অন্য বিষয়গুলি:

Raghunathpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy