Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Temple reformation in Jhalda

মন্দির সংস্কারে সিভিক কর্মীরা, বিতর্ক

শনিবার ঝালদার শিলফোড় পাহাড়ের সিঁড়ির ধাপে ধাপে সাদা পোশাকে থাকা প্রায় একশো জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে দাঁড় করিয়ে তাঁদের হাতে-হাতে ইট, বালি ও পাথর কুচি তোলানো হয় বলে অভিযোগ। 

সাদা-পোশাকে: ইট নিয়ে ঝালদার শিলফোড় পাহাড়ে। নিজস্ব চিত্র

সাদা-পোশাকে: ইট নিয়ে ঝালদার শিলফোড় পাহাড়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪৮
Share: Save:

‘পুলিশের কালীপুজো’র জন্য পরিচিত মন্দিরের সংস্কারে তাঁদের নির্মাণ সামগ্রী তুলতে কার্যত বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন ঝালদা থানার সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ। শনিবার ঝালদার শিলফোড় পাহাড়ের সিঁড়ির ধাপে ধাপে সাদা পোশাকে থাকা প্রায় একশো জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে দাঁড় করিয়ে তাঁদের হাতে-হাতে ইট, বালি ও পাথর কুচি তোলানো হয় বলে অভিযোগ।

এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বাজায় রাখতে পুলিশকে সহযোগিতা করার কাজে নিয়োগ করা হলেও কেন তাঁদের শ্রমিকের কাজ করানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ। তবে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, ‘‘‘স্থানীয় মানুষ, মন্দির কমিটি মন্দিরের দেখাশোনা করে। কখনওসখনও পুলিশও তাদের সাহায্য করে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে মন্দিরের এই কাজ করাতে নিষেধ করা হয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, ঝালদা শহরের নামোপাড়ায় শিলফোড় পাহাড়ের মাথায় ওই কালীমন্দির অনেক কালের। মন্দিরের পুজো পরিচালনার জন্য কমিটি থাকলেও, ঝালদা থানার পুলিশের সহযোগিতায় সেখানে পুজো হয় বলে তা ‘পুলিশের কালীপুজো’ বলে পরিচিত।

প্রাচীন ওই মন্দির জীর্ণ হয়ে পড়ায় সম্প্রতি তা সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের দাবি, ঝালদা থানা থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে একটি ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ রয়েছে। শুক্রবার ওই গ্রুপে ১০০ জন সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম লিখে জানানো হয়— শনিবার সকাল ৭টায় ঝালদার কালীপাহাড়ে পৌঁছে যেতে হবে। কেউ যেন গরহাজির না থাকেন। যিনি গরহাজির থাকবেন, তাঁকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘ডিউটি’ দেওয়া হবে না। থানার আইসি-র আদেশানুসারে ওই মেসেজ পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। যদিও ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষ এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ দাবি করেন, এ দিন পাহাড়ের নীচে পৌঁছতেই থানার এক আধিকারিক তাঁদের নির্মাণ সামগ্রী দেখিয়ে বলেন, ‘এগুলো উপরে তুলতে হবে। এটা আমাদের কাজ। মায়ের কাজ। দেরি না করে সবাই সিঁড়িতে পরপর দাঁড়িয়ে যাও’।

এ দিন দুপুরে ওই পাহাড়ে গিয়ে দেখা গিয়েছে, পাহাড়ে ওঠার সিঁড়িতে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে সাদা পোশাকের সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। এক হাত থেকে আর এক হাত বদল করে পাহাড়ের মাথায় ইট তুলছেন তাঁরা। কেউ বা আবার মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছেন বালি, পাথরকুচির কড়াই। তাঁদের কাজের দেখভাল করছিলেন ঝালদা থানার কয়েকজন পুলিশ কর্মী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ বলেন, ‘‘এ দিন কাজ করার সময় পথচলতি অনেকে আমাদের মাল বইতে দেখে টিপ্পনী কাটছিলেন। মুখ বুজে সে সব সহ্য করতে হল।’’

ঝালদার পুরপ্রশাসক তথা ওই পুজো কমিটির সম্পাদক প্রদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘পুজো কমিটি, পুলিশ ও ঝালদাবাসী যৌথ ভাবে মন্দির সংস্কার করার পরিকল্পনা নিয়েছে। কেউ স্বেচ্ছাশ্রম দিতেই পারেন। কিন্তু জোর খাটিয়ে যদি কাজ করানো হয়ে থাকে, তবে ঠিক হয়নি। কী ঘটেছে, খোঁজ নেব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Jhalda Purulia Civic Police Temple
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy