মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার আগে তাঁতিপাড়া দলীয় কার্যালয়ে চিত্রলেখা রায়। নিজস্ব চিত্র
বৃত্ত সম্পূর্ণ হল যেন।
পাঁচ বছর আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বীরভূমে বিরোধী-শূন্য জেলা পরিষদ গড়ার পথে একমাত্র ‘বাধা’ ছিলেন তিনিই। পরে অবশ্য মনোনয়ন প্রত্যাহার করে তৃণমূলেই যোগ দেন। প্রার্থী হওয়া আর হয়নি তাঁর। ‘কথা রেখে’ জেলা পরিষদ বিরোধী-হীন রাখতে পেরেছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রাজনগরের তাঁতিপাড়া গ্রামের সেই চিত্রলেখা রায়কে এ বার রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রার্থী করল তৃণমূল।
১৫ আসন বিশিষ্ট রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির আসনের একটিতে বুধবার মনোনয়ন জমা দিয়েছেন চিত্রলেখা। জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘দলের প্রতি ওঁর নিষ্ঠা আর কাজ দেখেই প্রার্থী করা হয়েছে। এর মধ্য অন্য কিছু খুঁজতে যাওয়ার মানে নেই।’’ আর চিত্রলেখা নিজে দাবি করছেন, ‘‘উন্নয়ন দেখে এই দলে এসেছিলাম। দলের নির্দেশ মেনে মানুষের জন্য কাজ করব।’’
তবে, চিত্রলেখা প্রার্থী হলেও সংরক্ষণের জটে প্রার্থী হওয়া আটকে গিয়েছে গত বার জেলা পরিষদের আসনে তাঁর বিপক্ষে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ানো রিয়াশ্রী দাসের। এই দুই বধূ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হঠাৎই চর্চায় চলে এসেছিলেন। গ্রামের এক পাড়াতেই বাস তাঁদের। একে অপরের বন্ধুও বটে। ২০১৮ বহু আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল শাসকদল। জেলা পরিষদের ৪২টি আসনে(এ বার অবশ্য আসন সংখ্যা বেড়ে ৫২) একমাত্র বিরোধী প্রার্থী হয়ে শিরোনামে চলে আসেন চিত্রলেখা। জেলার একমাত্র জেলা পরিষদের আসনে লড়াইয়ের সম্ভবনা তৈরি হওয়ায় সামনে আসেন প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াশ্রীও।
কিন্তু, ‘খেলা’ ঘুরিয়ে দেন অনুব্রত। হেঁয়ালির সুরে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘‘মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিনের আগে আগে কেউ অসুস্থ হবেন। কেউ যাবেন পিজি, কেউ যাবেন সিউড়ি হাসপাতালে। কারণ, উন্নয়নের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে কষ্ট পাচ্ছেন সকলে।’’ জেলা পরিষদের একমাত্র বিরোধী প্রার্থীর প্রসঙ্গ উঠতেই অনুব্রত বলেছিলেন, ‘‘উনিও কষ্ট পাচ্ছেন!’’
এ কথা বলার দু’দিনের মধ্যে বিজেপি প্রার্থী চিত্রলেখা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। বিজেপির দাবি ছিল অনুব্রতের চাপে এ পথ বাছতে বাধ্য হয়েছেন চিত্রলেখা। সেদিন সংবাদমাধ্যমের কাছে নিরুত্তর ছিলেন চিত্রলেখা। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতেন রিয়াশ্রী। কিন্তু, পাঁচ বছরে আমূল বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। দু’জনে এক সঙ্গে ব্লকের মহিলা সংগঠনের কাজ সামলেছেন। এক জন পাঁচ বছর জেলা পরিষদের সদস্য থেকেও এ বার টিকিট পাননি। অন্য জন, সেই আসনেই মনোনয়ন জমা দিলেন দলের টিকিটে। ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী রিয়াশ্রী অবশ্য বন্ধু চিত্রলেখাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রিয়াশ্রী বলেন, ‘‘এ বার ব্লকের দু’টি জেলা পরিষদ আসনই সংরক্ষিত। তা ছাড়া, দল যা ভাল বুঝেছে সেটা মেনে নিতে হবে।’’
রাজনগর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুকুমার সাধুর দাবি, প্রথম থেকে তৃণমূলেই ছিলেন চিত্রলেখা। কারও ‘প্ররোচনায়’ বিজেপিতে গিয়েছিলেন। ভুল বুঝতে পেরে ফের দলে এসে গত পাঁচ বছর ব্লকের মহিলা শাখার চেয়ারপার্সন ছিলেন। সুকুমার বলেন, ‘‘উনি কাজ করেছেন। দল তাঁর কথা ভেবেছে।’’ প্ররোচনার প্রসঙ্গ এড়িয়ে িত্রলেখার দাবি, ‘‘তৃণমূলে কাজের সুযোগ বেশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy