Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Deucha

বৈঠকে আজ ডেউচায় আসছেন মুখ্যসচিব

মুখ্যসচিব সফরের প্রস্ততিতে ত্রুটি যাতে না থাকে, সেই জন্য  বুধবার  দুপুর থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে প্রশাসন।

শ্রমজীবী: পাথর খাদানে কাজে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। মহম্মদবাজারের পাঁচামিতে। ফাইল চিত্র

শ্রমজীবী: পাথর খাদানে কাজে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। মহম্মদবাজারের পাঁচামিতে। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা  
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

বীরভূমের মহম্মদবাজারের প্রস্তাবিত ডেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে জেলা প্রশাসনের ও এলাকায় মানুষের সঙ্গে কথা বলতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে আসছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। গত ডিসেম্বরে শেষ মুহূর্তে ডেউচা সফর বাতিল হয়ে গিয়েছিল মুখ্যসচিবের। তবে, সব ঠিক থাকলে এ বার তাঁর আসা পাকা বলেই জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুও বুধবার জানিয়েছেন, মুখ্যসচিব আসছেন। বৃহস্পতিবার মহম্মদবাজারের ডেউচা স্কুলে একটি ছোট্ট মিটিং করবেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার হেলিকপ্টারে সকালে সিউড়ির চাঁদমারি মাঠে নামার কথা মুখ্যসচিবের। সেখান থেকে তিনি মহম্মদবাজার যাবেন। ডেউচা গৌরাঙ্গিনী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানীয় কিছু মানুষ ও জনপ্রতিনিধির সঙ্গে তিনি মিলিত হবেন। থাকছেন আদিবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। যাঁরা মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করবেন, তাঁদেরকে প্রশাসনের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পরে সিউড়ি ফিরে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুখ্যসচিব।

মুখ্যসচিব সফরের প্রস্ততিতে ত্রুটি যাতে না থাকে, সেই জন্য বুধবার দুপুর থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে প্রশাসন।ব এ দিন বিকেলে সিউড়িতে এই নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের মধ্যে ম্যারাথন বৈঠক হয়। পরে মহম্মদবাজার ব্লক অফিসেও একটি বৈঠক হয়। ডেউচার ওই স্কুলও পরিদর্শন করেন প্রশাসনের কর্তারা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে জয়দেব-কেঁদুলিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লাখনি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন। সেখানে পাথর খাদানের নীচে জমে রয়েছে উন্নতমানের বিশাল কয়লা ভাণ্ডার। ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের কোল ব্লক বণ্টনের তালিকায় ছিল ডেউচা-পাঁচামি। প্রথম দিকে খনির পরিকাঠামো গড়তে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও যৌথ ভাবে আরও পাঁচ রাজ্যকে দায়িত্ব দিয়েছিল মন্ত্রক। অন্য রাজ্য আগ্রহ না দেখানোয় কয়লা উত্তোলনের দায়িত্ব গত ডিসেম্বরে একক ভাবে পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্য জানিয়েছিল, আগামী ১০০ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এ রাজ্যে কয়লার অভাব হবে না। কর্মসংস্থান হবে লক্ষাধিক মানুষের।

সূত্রের খবর, কয়লা রয়েছে মহম্মদবাজার ব্লকের ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের (ভাঁড়কাটা, হিংলো, সেকেড্ডা, পুরাতনগ্রাম ও ডেউচা) ১১টি মৌজায়। এমন একটা সুখবরে উচ্ছ্বসিত হওয়ারই কথা। কিন্তু ভাল লাগার পাশাপাশি দোলাচল রয়েছে এলাকাবাসীর। কারণ খোলামুখ খনি হলে ১৮টি গ্রামে প্রায় ১৯ হাজার মানুষকে ভিটে ছেড়ে সরতে হবে। তাঁদের মধ্যে প্রায় সাত হাজার আদিবাসী জনজাতি। ফলে কেউ কেউ শিল্পকে স্বাগত জানালেও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন প্যাকেজ কী হবে, জীবন-জীবিকার কী হবে— তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন।

বীরভূম আদিবাসী গাঁওতা নেতা রবীন সরেন বলছেন, ‘‘আমরা জানি মুখ্যসচিব আসছেন। দেখা নিশ্চয়ই করব। প্রস্তাবিত কয়লা খনি নিয়ে তাঁর কাছে এলাকার মানুষের মতামত তুলে ধরব। পাশাপাশি জানতে চাইব, কয়লা খনি হলে এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকার কী হবে। তার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত।’’ আদিবাসী গাঁওতারই আর এক নেতা সুনীল সরেন অবশ্য বলছেন, ‘‘পাঁচামিতে একটা শিল্প (পাথর খাদান) চলছে। তাতে কতটা উন্নতি হয়েছে, এলাকার আদিবাসী মানুষেরা সবাই জানেন। এটুকু বলব, এখানকার মানুষ নতুন করে উন্নয়নের নামে আর উচ্ছেদ হতে চান না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Deucha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE