Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Mid Day Meal

খাবারের মান থেকে হিসেবে নজর

শনিবার মিড-ডে মিল পরিদর্শনে আসা কেন্দ্রীয় দল সে ভাবে বড়সড় কোনও গলদ পায়নি বলে দিনের শেষে দাবি করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন।

Central team\'s inspection on mid day meal

নিতুড়িয়ার কুঠিবাড়ি স্কুলের হেঁশেলে রান্না পরখে পুষ্টিবিদ অনুরাধা দত্ত। রঘুনাথপুরের বাবুগ্রামে থালা ধুলেন পিএম পোষণের ডিরেক্টর জি বিজয় ভাস্কর। নিজস্ব চিত্র

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল, সঙ্গীত নাগ
রঘুনাথপুর-নিতুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫৪
Share: Save:

মিড-ডে মিল পরিদর্শনে এসে কোনও স্কুলকে পড়ুয়াদের সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ানো ও আর্বজনা ফেলার জায়গা ঠিক করার পরামর্শ দিল কেন্দ্রীয় দল। কোথাও কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিদের কাছে অভিভাবক অনুযোগ করলেন তরকারি ও ডাল কম দেওয়া হয়। নিতুড়িয়ার চার স্কুলে রাঁধুনিদের গ্লাভস পরতে না দেখে তাঁদের হাতের অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়।

এমনই ছোট ছোট ঘটনাকে বাদ দিয়ে শনিবার মিড-ডে মিল পরিদর্শনে আসা কেন্দ্রীয় দল সে ভাবে বড়সড় কোনও গলদ পায়নি বলে দিনের শেষে দাবি করল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। দলের সঙ্গে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রণবকুমার বসু বলেন, ‘‘দু’টি ব্লকের সাতটি স্কুল পরিদর্শনের পরে মোটের উপরে সন্তোষ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় দল। মিড-ডে মিল সংক্রান্ত কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলি নজরে রাখা হবে।’’

কলকাতা থেকে নিতুড়িয়ায় এসে কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা জেলা প্রশাসনকে জানান, দু’টি দলে তাঁরা নিতুড়িয়া ও রঘুনাথপুর ১ ব্লকের স্কুলগুলি পরিদর্শন করবেন। নিতুড়িয়ার দলের নেতৃত্বে ছিলেন ‘জয়েন্ট রিভিউ মিশনের’ নেতৃত্ব দেওয়া পুষ্টিবিদ অনুরাধা দত্ত। রঘুনাথপুরের দলের নেতৃত্বে ছিলেন পিএম পোষণের ডিরেক্টর জি বিজয় ভাস্কর।

নিতুড়িয়া ব্লকের কুঠিবাড়ি, নিতুড়িয়া, বিন্দুইডি এই তিন প্রাথমিক স্কুল ও বড়তোড়িয়া হাই স্কুলে যায় দলটি। নিতুড়িয়া প্রাথমিক স্কুলের পাশ দিয়ে প্রথমে তাঁরা যান কুঠিবাড়ি প্রাথমিক স্কুলে। কুঠিবাড়ি পৌঁছেই কেন তাঁদের নিতুড়িয়ার স্কুলে নিয়ে যাওয়া হল না, জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে তা জানতে চান কেন্দ্রীয় আধিকারিক অনুরাধা। কুঠিবাড়ি পরিদর্শন করে তাই গাড়ির কনভয় ফিরে যায় নিতুড়িয়া প্রাথমিক স্কুলে।

কুঠিবাড়িতে এক অভিভাবক জ্যোতি বাউড়ি কেন্দ্রীয় দলকে সামনে পেয়ে অনুযোগ করেন, দুপুরের খাবারে তরকারি ও ডালের পরিমাণ কম থাকে। এক শিক্ষক মাঝে কিছু বলতে গেলে, তাঁকে সটান থামিয়ে দেন অনুরাধা। পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সতীমা মণ্ডল বলেন, ‘‘যেমন অর্থ বরাদ্দ মেলে তেমনই খাওয়ানো হয়।’’

নিতুড়িয়া প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা পড়ুয়াদের সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ানো ও স্কুলের আর্বজনা ফেলার জায়গা ঠিকঠাক করার পরামর্শ দেন। প্রধান শিক্ষিকা রেণুকা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুলে তরল সাবান থাকলেও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। নতুন করে কেনা হয়নি।’’

অন্য দিকে, রঘুনাথপুরে কোন স্কুলে পরিদর্শন হবে, তা নিয়ে ধন্দে ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারাই। শেষে রঘুনাথপুর গার্লস’ হাই স্কুলে পরিদর্শন শুরু করে কেন্দ্রীয় দল। শুক্রবারের তুলনায় শনিবার পড়ুয়ার সংখ্যা কিছুটা কম থাকলেও কেন আগের দিনের মতোই চাল-ডাল নেওয়া হয়েছে জানতে চাওয়া হয়। রাঁধুনি খেন্ত রজক তাঁদের জানান, ভাতের তুলনায় পড়ুয়ারা খিচুড়ি বেশি খায়। পরে প্রধান শিক্ষিকার অফিসে মিড-ডে মিলের হিসেবের খাতা খতিয়ে দেখা হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মৌটুসী চন্দ বলেন, ‘‘স্কুলে কী রান্না হয়, চালের হিসাব, টাকার হিসাব, কত পড়ুয়া দৈনিক উপস্থিত থাকে, সেই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখেছেন তাঁরা। নথির প্রতিলিপি নিয়ে গিয়েছেন।’’

পড়ুয়ারা পেট ভরে খাবার পায় কি না, খাবারের মান, কী ধরনের খাবার তারা বেশি পছন্দ করে ইত্যাদি তাঁরা পড়ুয়াদের কাছে জানতে চান। রঘুনাথপুরের বাবুগ্রাম সম্মিলনী হাই স্কুল ও নিতুড়িয়ার বড়তোড়িয়া হাই স্কুলে পড়ুয়াদের সঙ্গে বসে মিড-ডে মিল খান কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। রঘুনাথপুরের স্কুলগুলিতে রাঁধুনিদের অ্যাপ্রন ও গ্লাভস পরে থাকতে দেখে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন। শেষে শাঁকা হাই পরিদর্শন সেরে রঘুনাথপুরের এসডিও অফিসে জেলাশাসক রজত নন্দার সঙ্গে আলোচনা সেরে কলকাতায় রওনা দেয় কেন্দ্রীয় দল। পিএম পোষণের ডিরেক্টর জি বিজয় ভাস্কর বলেন, ‘‘পরিদর্শনে রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট মহলে জমা দেওয়া হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day Meal Central Team
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy