পাড়ুইয়ে বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষের রোড শো। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
ঘোষণা হয়েছিল জেলা বিজেপির আয়োজনে নেতাজি জন্মজয়ন্তী সাঢ়ম্বরে পালিত হবে পাড়ুইয়ে। কারণ পাড়ুই থেকেই কার্যত বীরভূম জেলায় উত্থান বিজেপির। স্বামীজীর জন্মদিনের মতো নেতাজির জন্মদিন পালনেও বিজেপি আর তৃণমূলের টক্কর দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার পাড়ুইয়ে বিজেপির রোড শো’তে নেতাজি ঠাঁই পেলেন না। তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান বা তাঁকে নিয়ে দু’চার কথা বলারও কেউ ছিলেন না।
এ দিন বিজেপির এই রোড শো’ শুরু হয় পাড়ুইয়ের পুরাতন ব্রহ্মচারী মেলা মাঠ থেকে। দুপুর থেকেই লোকে লোকারণ্য হয় মেলা মাঠ। দলের রাজ্য সভানেত্রী তথা রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশ কর্তা ভারতী ঘোষ নির্ধারিত সময়ের প্রায় দু’ঘণ্টা পরে সেখানে উপস্থিত হন। বিজেপির পতাকা হাতে জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিয়ে শুরু হয় রোড শো। স্থানীয় পেট্রল পাম্প মোড় হয়ে রোড শো শেষ হয় পাড়ুই বাজারের কাছে। সেখানেই একটি পথসভা করেন ভারতী ঘোষ। নেতাজি প্রসঙ্গে একটি কথাও না বলে তিনি এই দিনকে পরাক্রম দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে পাড়ুইয়ে গত ন’বছরে তৃণমূলের সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য কোনও ক্ষেত্রেই উন্নয়ন করেনি বলে অভিযোগ করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকেও একহাত নেন ভারতী। নাম না করেও অনুব্রতকে কটাক্ষ করে ‘মোটা দাদা’ বলে সম্বোধন করায় গোটা সভা জুড়ে হাসির রোল ওঠে। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পুলিশ বালি ও পাথর খাদানে অবৈধ কারবারে মদত দিচ্ছে। এই সভায় মুখ্যমন্ত্রীকেও আক্রমণ করেন ভারতী। তিনি বলেন, ‘‘আপনি একটি সংবাদ মাধ্যমকে দিয়ে সমীক্ষা করিয়ে দেখাচ্ছেন, বিধানসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসছে। তাহলে দলে এই ভাঙ্গন অব্যাহত কেন? শান্তিপুরের বিধায়ক দল থেকে বেরিয়ে এলেন কেন? রাজীববাবুর মতো মানুষ কেন মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন? বৈশালী ডালমিয়া উইপোকা বলেছেন বলেই তাঁকে কেন সাসপেন্ড? এইভাবে কত জনকে সাসপেন্ড করবেন?’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘গত ৯ বছরে পাড়ুইয়ে কোনও কলেজ, হাসপাতাল হয়নি। পুলিশ সুপাররা বসে বসে বালির টাকা, কয়লার টাকা, গাছ কাটার টাকা খাচ্ছেন আর ভাবছেন এরকম ভাবেই দিন চলে যাবে। ২০২১ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে বীরভূম, পুরুলিয়া সহ সমস্ত জায়গায় পুলিশ সুপারদের সমস্ত টাকা-পয়সার তদন্ত করব।’’
ভারতীর এ দিনের কটাক্ষের প্রেক্ষিতে অনুব্রত কিছু বলতে না চাইলেও তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘নেতাজির জন্মদিনের শোভাযাত্রা ছিল যে ওঁদের! তাতে নেতাজি কোথায়? শুধু কিছু অশালীন আর বাননো কথা বলে গেলেন। পাড়ুই থেকে বোলপুর কুড়ি মিনিটের পথ। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী একটা গোটা বিশ্ববিদ্যালয় করছেন তা উনি জানেন না? শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়ে বলছেন আবার!’’ আর সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম বলেন, ‘‘বিজেপি কখনই মনীষীদের মনীষী বলে মনে করে না। সে নেতাজিই হোক বা রবীন্দ্রনাথ। শুধুমাত্র নির্বাচনে ফায়দার জন্যই তারা বাঙালি আবেগকে ব্যবহার করতে চাইছে। নেতাজি জন্মজয়ন্তী পালনের নামে পাড়ুই-এর রোড শো’তেও সেই একই জিনিস দেখা গেল।’’ এ দিনের রোড শোয়ে ভারতী ঘোষ সহ উপস্থিত ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা, প্রাক্তন জেলা সভাপতি অর্জুন সাহা, সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি শেখ সামাদ সহ বিজেপির স্থানীয় নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy