বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। —নিজস্ব চিত্র।
চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছেন। তার পর চাকরি হয়নি। টাকাও ফেরত দেননি। এমনই অভিযোগ করে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বিক্ষোভকারীদের ‘রাস্তার কুকুর’ বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপি সাংসদ। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে বাঁকুড়া।
সোমবার দুপুরে গাড়ি নিয়ে কোতুলপুর থেকে লাউগ্রাম যাচ্ছিলেন বিজেপি সাংসদ। মিলমোড় এলাকায় তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। পরে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছোয় যে, সিআইএসএফের সহযোগিতায় সাংসদ বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে তাড়া করেন বিক্ষোভকারীরা। বিজেপি সূত্রে খবর, লাউগ্রামে বিজেপির এক কর্মীর বাড়ি যাচ্ছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। যাত্রাপথে মিলমোড় এলাকায় কয়েক জন যুবক সাংসদকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। অন্য দিকে, স্থানীয়দের অভিযোগ, সাংসদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সৌমিত্র কোনও কথা শুনতে চাননি। উল্টে তাঁদের উদ্দেশে কটুক্তি করেন সাংসদ। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যান তাঁরা। তাই সাংসদের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সৌমিত্রের নিরাপত্তারক্ষীরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে সাংসদের গাড়ি বার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে কয়েক জন যুবক তাড়া করে যান। যদিও লাউগ্রামে তাঁর গন্তব্যে নিরাপদে পৌঁছে যান সৌমিত্র।
ওই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে জাকির শেখ নামে এক জন বলেন, ‘‘২০১৫ সালে আমাদের এলাকার অনেকে চাকরির জন্য সাত থেকে ১০ লাখ করে টাকা দিয়েছিলেন সাংসদকে। কিন্তু চাকরি হয়নি। আজ সেই টাকা ফেরতের জন্য হাতজোড় করে সাংসদের গাড়ি দাঁড় করানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি যে দুর্ব্যবহার করলেন, তার ফল আগামী দিনে জনগণের কাছ থেকে পাবেন।’’ এলাকার অপর এক বাসিন্দা দীপক গায়েন বলেন, ‘‘আমার বোনের চাকরির জন্য সৌমিত্র খাঁকে সাত লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। চাকরি না হওয়ায় আমাকে উনি এক লক্ষ টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাকি ছয় লক্ষ টাকা ফেরতের জন্য হাতজোড় করে তাঁকে অনুরোধ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি খারাপ ব্যবহার করে চলে গেলেন।’’
সৌমিত্র অবশ্য চাকরির নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, এটা তৃণমূলের চক্রান্ত। বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘রাস্তার কুকুররা কী বলল, তা দেখে আমার লাভ নেই। যারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে, তাদের আমি চিনি না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এলাকায় কাজ হচ্ছে। সেই রাগে তৃণমূলের লোকজন এই নোংরা রাজনীতি করছে। ওদের একটাই কাজ— চুরি করা।’’
অন্য দিকে, এ নিয়ে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই বিক্ষোভের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। সাধারণ মানুষকে চাকরি দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণা করার ফল পেতে হয়েছে সৌমিত্রকে। ওই দুর্নীতির জন্যই ওঁকে দলে রাখা হয়নি। এখন বিজেপির ওয়াশিং মেশিনে গিয়ে উনি সাধু সাজার চেষ্টা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy