অনুপম অভিযোগ করেছেন, কেরিম খানকে প্রকাশ্যে দলের সভায় দেখা যাচ্ছে।
নানুরের বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইকে খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা আব্দুল কেরিম খান এখনও অধরা। তাঁকে ধরার দাবি বারবার তুলেছেন নিহতের পরিবার এবং জেলা বিজেপি নেতারা। সেই কেরিম খানেরই একটি ছবি ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ফেসবুকে সেই ছবি পোস্ট করেছেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা। তাতে তিনি দাবি করেছেন, তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন কেরিম খান। দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকেও।
বুধবার রাতে ওই ছবি পোস্ট করে অনুপম অভিযোগ করেছেন, কেরিম খানকে প্রকাশ্যে দলের সভায় দেখা যাচ্ছে। অথচ পুলিশ তাঁকে ধরছে না। বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদ লিখেছেন, ৬ সেপ্টেম্বর স্বরূপকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ৭ সেপ্টেম্বর নানুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশের খাতায় ‘ফেরার’ মূল অভিযুক্ত কেরিম খানকে ওই দিনই (৭ তারিখ) দেখা গেল তৃণমূলের জেলা মিটিংয়ে! সেই ছবি চন্দ্রনাথ সিংহেরই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট হয়েছে। এর পরেই অনুপমের প্রশ্ন, ‘‘কোথায় নিরপেক্ষ তদন্ত? তাই আমরা এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাই।’’
৬ তারিখ রাতে রাধাষ্টমী উপলক্ষে প্রসাদ খেয়ে ফেরার পথে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষের মুখে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন নানুরের রামকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা স্বরূপ। পর দিন সকালেই স্বরূপের পরিবারের তরফ থেকে আব্দুল কেরিম খান-সহ ১১ জনের নামে নানুর থানায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়। পাল্টা তাদের কর্মীদের খুনের চেষ্টা করা হয়েছে বলে বিজেপি নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। একই সঙ্গে সেদিনের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু হয়। গত রবিবার রাতে কলকাতার এক হাসপাতালে মারা যান স্বরূপ। সোম ও মঙ্গলবার তাঁর দেহ নিয়ে বিস্তর টানাপড়েনের পরে বুধবার দুপুরে কাটোয়া শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, স্বরূপ-খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা এলাকায় তৃণমূলের কর্মী হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু, কেরিম খানকে গ্রেফতার না করা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা। অনুপম বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এই খুনের ঘটনায় আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি করছি। আমাদের আরও দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের সকলকে যেন পুলিশ অবিলম্বে গ্রেফতার করে এবং পুলিশের তরফ থেকে নিহতের পরিবারের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়।’’
দলের জেলা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকার বিষয়টি অবশ্য অস্বীকার করেননি আব্দুল কেরিম খান নিজেও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘৭ তারিখের ওই বৈঠকে আমি ছিলাম। কিন্তু, আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি, ঘটনার রাতে আমি কলকাতায় ছিলাম। তার পক্ষে সমস্ত প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল কর্মীদের খুনের চেষ্টার অভিযোগে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা এবং জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডলেরও নাম রয়েছে। তাঁরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ আগে ওদের ধরুক!’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক এবং ৮ জন বিজেপি-র বলে পরিচিত। জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘কেউ দাবি তুললেই কাউকে গ্রেফতার করতে হবে, তা নয়। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে কারও যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তবেই ধরা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy