অনুপম হাজরা। —ফাইল চিত্র।
থামছেনই না কেন্দ্রীয় বিজেপির সম্পাদক অনুপম হাজরা। এ বার দলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলে রাজ্য নেতৃত্ব থেকে জেলা সভাপতিদের তুলোধনা করলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘দলের মধ্যে যে সমস্ত ভাইরাস আছে, সেই ভাইরাসকে আগে বের করুন। দরকার পড়লে দু’ চারটে থাপ্পড় মারতে হয় মারুন। কোনও অসুবিধা নেই।’’ পাশাপাশি দলের মধ্যে তাঁকে কোণঠাসা করে রাখারও অভিযোগ করেছেন অনুপম। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের কোর কমিটির মধ্যে আমি ঢুকে গেলে ওলট-পালট হয়ে যাবে। যে সিন্ডিকেট চলে ওই সিন্ডিকেটগুলো ঘেঁটে যাবে। এই জন্য আমাকে কোনও রাজ্য অফিসের বৈঠক বা অনুষ্ঠানে ডাকা হয় না।’’
বস্তুত, সোমবার বর্ধমানের সভায় দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিজেপির নেতা অনুপম। তার পর মঙ্গলবার সকালে তাঁকে দেখা যায় শান্তিনিকতনে তৃণমূলের অবস্থানমঞ্চে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলক-বিতর্কে তৃণমূলের ধর্নাস্থল থেকে উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তীকে আক্রমণ করেন বিজেপি নেতা। বিষয়টিকে মোটেই ঠিক ভাবে নেননি বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় নেতার সমালোচনা করে বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে এ-ও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘চাইলে সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিন।’’ পাশাপাশি, অনুপমের উপাচার্য-বিরোধিতারও সমালোচনা করেন শমীক। পাল্টা শমীককে ‘এসি ঘরের তোতাপাখি’ বলে কটাক্ষ করেন অনুপম। তার পরেও থামছেন না বিজেপির এই কেন্দ্রীয় নেতা। মঙ্গলবার নানুর বিধানসভার কীর্ণাহার-২ অঞ্চলের ফেউগ্রামে একটি দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধনে এসে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশকে নিশানা করেন তিনি। উল্লেখযোগ্য ভাবে, দলীয় অফিস উদ্বোধনে বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের অধিকাংশই অনুপস্থিত ছিলেন। দেখা যায়নি বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলকেও। এর কারণ জানতে চাইলে অনুপম বলেন, ‘‘ওঁর জন্যই এই সব মানুষগুলো (সাধারণ কর্মী) কোণঠাসা হয়ে বসে আছে। অথচ ওঁরই গ্রাম। কিন্তু ওঁর সঙ্গে কোনও লোক নেই।’’ অনুপম এর পর অভিযোগের সুরে জানান, পশ্চিমবঙ্গ থেকে তিনিই একমাত্র বিজেপির কেন্দ্রীয় স্তরে জায়গা পেয়েছেন। অথচ রাজ্যের ২৬ জন সদস্যের কোর কমিটিতে তাঁর জায়গা হয়নি। কারণ, ওই কোর কমিটির মধ্যে তিনি ঢুকে গেলে অনেক ‘হিসেব-নিকেশ’ ওলট-পালট হয়ে যাবে। বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘এই জন্য আমাকে কোনও রাজ্য বিজেপির প্রোগ্রামে ডাকা হয় না। আবার যদিও বা ডাকা হয়, এমন একটা সময়ে বলা হয় যে পৌঁছতেই পারব না।’’ আক্ষেপের সুরে অনুপমের মন্তব্য, ‘‘আমাদের পার্টির (বিজেপি) একটা প্রবলেম (সমস্যা) হচ্ছে, পদাধিকারীরা যখন পদে থাকেন, তখন তাঁদের মাটিতে পা থাকে না।’’
দলের নেতাদের কটাক্ষ করে কর্মীদের উদ্দেশে অনুপম বলেন, ‘‘যে পদাধিকারীরা কাজে বাধা দেবেন, তাঁদের আগে ওষুধ দিন। দলের মধ্যে যে সমস্ত ভাইরাস এবং ভিলেন রয়েছে, তাঁদের চিহ্নিত করুন। আপনারাই তাঁদের ওষুধ দিতে পারবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আপনারা (কর্মীরা) মার খাচ্ছেন। আর তাঁরা (নেতারা) বাবা-কাকাদের ধরে পদ পেয়েছেন। তা দিয়ে দাদাগিরি করছেন, নিজেদের পকেট ভরাচ্ছেন। এঁরা মোদীজির নাম ভাঙিয়ে পকেট গরম করতে এসেছেন। এই সমস্ত ভাইরাসকে চিহ্নিত করে আপনারাই ওষুধ দিন। একটা দল শুধু মার খাবে, আর একটা দল পকেট ভরাবে, এটা বেশি দিন চলতে পারে না। চোরমুক্ত বিজেপি করতে হবে।’’
নানুর থেকে নাম না করে আবারও শমীককে কটাক্ষ করেছেন অনুপম। তাঁর কথায়, ‘‘সেই তোতা আমাকে জ্ঞান দিয়েছে। সে নাকি আমাকে সংস্কৃতি শেখাচ্ছে। আসলে পোষা টিয়া জ্ঞান বুলি না বললে তো চাকরি চলে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy