পুরানো বিজেপি নেতাদের সঙ্গে অনুপম হাজরা। বুধবার তারাপীঠে। —নিজস্ব চিত্র।
দলের পুরনো কর্মীদের গুরুত্ব না-দেওয়ার অভিযোগে দিন তিনেক আগে সিউড়িতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিজেপির কয়েক জন কর্মী। তা নিয়ে দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহার সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় বিক্ষুব্ধ কর্মীদের। বুধবার তারাপীঠে কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরার পাশে দেখা গেল জেলা বিজেপি-র তেমনই এক ঝাঁক ‘পুরনো’ মুখকে। যাঁদের কয়েক জন দলে গুরুত্ব না-পাওয়ার অভিযোগে আগেও সরব হয়েছেন। তাঁদের ‘দলের সম্পদ’ বলেও অাখ্যা দিলেন অনুপম।
কারা ছিলেন অনুপমের পাশে? দুধকুমার মণ্ডল, রামকৃষ্ণ রায়, কালোসোনা মণ্ডল, অনিল সিংহদের মতো পুরনো নেতারা। তারাপীঠের একটি লজে অনুপমের সঙ্গে ওই নেতারা দেখা করেন। পরস্পরের হাতে রাখি পরিয়ে দেন।
কোথায় ছিলেন জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা? কয়েক জন অনুগামীকে নিয়ে এ দিন তারাপীঠে এসেছিলেন ধ্রুব। তারাপীঠ মন্দিরে প্রবেশ করার আগে তিনি ফুলের তোড়া দিয়ে অনুপমকে স্বাগন জানান। তার পরেই অবশ্য বেরিয়ে যান বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। এই বিষয় নিয়েও দলের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে। পরে মন্দির সংলগ্ন একটি লজে দুধকুমারদের সঙ্গে দেখা করেন অনুপম। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা পুরনো কর্মী, তাঁরা দলের সম্পদ। সেই সমস্ত পুরনো কর্মী যাঁরা সংগঠনে রয়েছেন কিংবা সংগঠনের বাইরে রয়েছেন, তাঁদের সকলকে এক সঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা দেওয়ার জন্য রাখিপূর্ণিমা হচ্ছে সঠিক দিন।’’
প্রাক্তন দুই জেলা সভাপতি (তখনও বীরভূমকে দুই সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করেনি বিজেপি) দুধকুমার মণ্ডল ও রামকৃষ্ণ রায় সহ কালোসোনা মণ্ডলদের দেখিয়ে অনুপমের মন্তব্য, ‘‘যাঁদের জন্য বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ জন চিনেছিল, তাঁরা যেন এক সঙ্গে কাজ করেন। যাঁরা সংগঠনে এখন নেই, তাঁদেরও পরামর্শ নিতে হবে বর্তমান নেতৃত্বকে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এঁরা একটা সময়ে জীবনের বাজি রেখে দল করে গিয়েছেন। নেতৃত্বের উচিত তাঁদের অভিজ্ঞতা, আর্শীবাদ নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’’ এর মধ্যে দিয়ে জেলা নেতৃত্বকে অনুপম কোনও ‘বিশেষ’ বার্তা দিলেন কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে দলে।
অনুপমের আরও দাবি, দু’সপ্তাহ আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা তাঁকে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসন নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই জায়গা থেকে দলের পুরনো কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা জরুরি বলেই তিনি মনে করছেন। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধ্রুব সাহার বিরুদ্ধে কর্মীদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে অনুপম বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব দেখছেন। তবে দলের মধ্যে কোনও ক্ষোভ থাকলে, তা দলের অন্দরে আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়াই ভাল।’’
তারাপীঠের আগে এ দিন বোলপুরে অনুপমের কর্মসূচি ছিল। গত বছর রাখি পূর্ণিমার দিনই গরুপাচার মামলায় সিবিআই গ্রেফতার করেছিল জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। এই রাখি পূর্ণিমায় অনুব্রতের গ্রেফতারির ‘বর্ষপূর্তি’ পালন করেন অনুপম-সহ বিজেপি নেতা-কর্মীরা। অনুপম বলেন, ‘‘গত বছর রাখি বন্ধন উৎসবের দিন অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হয়েছিলেন। বীরভূমের মানুষ বিশেষ করে বিজেপি কর্মীরা স্বস্তি পেয়েছিলেন। আর তাঁদের ঘরছাড়া হতে হবে না।’’ অনুব্রতের বলা সেই গুড় বাতাসা, নকুল দানা সঙ্গে নিয়েই এ দিন রাখিবন্ধন উৎসব পালন করেন বিজেপি কর্মীরা। শান্তিনিকেতনে পথ চলতি মানুষের হাতে রাখি পরিয়ে বিজেপি কর্মীরা গুড় বাতাসা, নকুলদানা বিলি করেন। পরে সুরুলে একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া বাজি কারখানাও দেখতে যান বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy