অনুপম হাজরা। —ফাইল চিত্র।
গত ২৬ ডিসেম্বর বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন কলকাতায়, তার ঠিক আগে ফেসবুক লাইভ করে সমাজমাধ্যমে দলের বিরুদ্ধে একের পর এক মন্তব্য করেছিলেন অনুপম হাজরা। তার পরেই বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ খোয়ান। রবিবার আবার দু’দিনের সফরে বাংলায় আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। তার ঠিক আবহে অনুপম ঘোষণা করে দিলেন, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে তিনি বোলপুর কেন্দ্র থেকে লড়বেন। সেই সঙ্গে বিজেপি নেতার ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য, ‘‘লড়াই করতে গেলে দলের প্রয়োজন হয় না। মানুষ চাইছে। তাই লড়ব।’’ তিনি তৃণমূলে ফিরবেন কি না, এ নিয়ে জল্পনার মধ্যে কাজল শেখেরও সুনাম করতে শোনা যায় অনুপমকে।
বার বার ‘দলবিরোধী’ মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন অনুপম। তার জেরে কিছু দিন আগে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ থেকে অপসারিত করা হয় তাঁকে। কিন্তু অনুপমের ‘বিদ্রোহ’ থামেনি। নতুন বছরে সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘অন্যের বাড়িতে চোর দেখলে গলা ফাটিয়ে জোরে চিৎকার করুন। যাতে লোকজন ধারণাও করতে না পারে যে আপনার নিজের বাড়িই চোরের আশ্রয়স্থল।’’ তার পর সম্প্রতি, ব্রিগেডে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে টিকিট বিক্রি এবং টাকা তোলার অভিযোগ তুলেছিলেন। যার প্রেক্ষিতে অনুপমকে পাল্টা কটাক্ষ করেন তাঁর দলের নেতারা। নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভের মুখেও পড়েন। তবে অনুপম আছেন অনুপমেই। শুক্রবার বোলপুরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘সমস্ত চোর একসঙ্গে আমার বিরুদ্ধে বলেছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতিদের ‘অপদার্থ’ বলে কটাক্ষ করে অনুপম বলেন, ‘‘এ ভাবেই রসেবশে চলুক ওরা। যে দিন যাবে একেবারেই যাবে।’’
অনুপম জানিয়েছেন, লোকসভা ভোটের আগে বোলপুরে তিনি ‘বেশি করে সক্রিয়’ হবেন। কিন্তু তাঁর দল কি তাঁকে টিকিট দেবে? অনুপমের জবাব, ‘‘লড়াইয়ের জন্য দলের দরকার হয় নাকি? ইচ্ছে হলেই দাঁড়াব। গণতান্ত্রিক দেশ। আমার ইচ্ছে, আমি ভোটে লড়ব।’’ বিজেপি নেতার সংযোজন, ‘‘আমার দলের প্রতীকে দাঁড়ালে ভাল কথা। তবে এমনিতে গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউ ভোটে লড়তে পারে। মানুষ চাইলেই হল।’’ বস্তুত, তৃণমূল ছেড়ে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে চলে যান বিশ্বভারতীর প্রাক্তন শিক্ষক অনুপম। বিজেপি তাঁকে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে টিকিট দেয়। যদিও তৃণমূলের তারকা প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর কাছে পরাজিত হন তিনি। বুধবারও বিজেপি নেতাদের একাংশকে কটাক্ষ করে অনুপম বলেন, ‘‘আমাদের কিছু নেতা আছেন, যাঁদের জেতা লক্ষ্য নয়। তাঁদের লক্ষ্য, ভোটে লড়া এবং দলের ইলেকশান ফান্ড থেকে যে টাকা আসবে সেটা ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজ়িট করে দেওয়া। ওই প্রবৃত্তি আমার নেই।’’
বীরভূমের জেলা তৃণমূল নিয়েও মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে অনুপমকে। সম্প্রতি তৃণমূলের কোর কমিটি নিয়ে অনুপম বলেন, ‘‘কাজল শেখ ভাল কাজ করছিলেন। হয়তো অ্যান্টি লবি ওঁর সক্রিয়তা মেনে নিতে পারছিল না। এটা তৃণমূলের দলীয় ব্যাপার। আমার মন্তব্য করা ঠিক নয়। তবে বোলপুরের এক জন বাসিন্দা হিসাবে মনে হচ্ছে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে কাজলকে ছেঁটে ফেলা হল।’’ আসলে ২০১৪ সালে অনুপম যখন বোলপুরের সাংসদ নির্বাচিত হন, তখন অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে কাজলের সম্পর্ক ‘আদায় কাঁচকলায়’। অনুপমকে জেলার মধ্যে নানুরে সব থেকে বেশি লিড পাইয়ে দেওয়ার নেপথ্যে কাজলের ভূমিকা ছিল। সেই কাজলের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপির অনুপম জানান, তৃণমূলে অনুব্রত মণ্ডলের গোষ্ঠী বনাম কাজল-গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব মেটার নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy