Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
TMC

‘চাপের মুখে’ ইস্তফা সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যানের, ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’ বলেই কি সরতে হল?

সোমবার সিউড়ির মহকুমাশাসকের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন অঞ্জন। একই সঙ্গে, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।

(বাঁ দিকে) অনুব্রত মণ্ডল এবং অঞ্জন কর।

(বাঁ দিকে) অনুব্রত মণ্ডল এবং অঞ্জন কর। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩ ১৭:৪৭
Share: Save:

পদ নিয়ে টানাটানি চলছিল পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকেই। এ বার পদত্যাগ করলেন বীরভূমের সিউড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান অঞ্জন কর। ঘটনাচক্রে, গত মে মাসে তাঁকে পদ থেকে সরানোর দাবিতে সরব হয়েছিলেন তাঁর দল তৃণমূলেরই ১৩ জন কাউন্সিলর। যদিও অঞ্জনের দাবি, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। দলের একটা অংশের মতে, ‘চাপের মুখে’ই অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত অঞ্জন পদত্যাগ করেছেন। আর সে কারণেই তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি জেলার রাজনীতিতে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে।

সোমবার সিউড়ির মহকুমাশাসকের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেন অঞ্জন। একই সঙ্গে, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি। অঞ্জন জানান, শারীরিক এবং পারিবারিক কারণেই এই পদত্যাগ। মহকুমাশাসক অনিন্দ্য সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘উনি একটা চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু চিঠিতে কী আছে, তা জানি না। খুলে দেখা হয়নি। পরে দেখব।’’ চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফার পরেই অঞ্জনের ‘দলবদল’ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে অ়ঞ্জন বলেন, ‘‘দল আমায় কিছু বলেনি। আজ তো পদ ছাড়লাম। দল করব কি না, সেটা পরে চিন্তাভাবনা করব।’’

পঞ্চায়েত ভোটের আগে অঞ্জন এবং পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বিদ্যাসাগর সাউকে সরানোর দাবি জানিয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীকে চিঠি দিয়েছিলেন ১৩ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। তাঁদের অভিযোগ ছিল, সিউড়ি পুর এলাকায় পরিষেবা তলানিতে ঠেকেছে। এমন অবস্থায় ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়া সম্ভব হবে না। দলীয় সূত্রে খবর, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের কোনও ‘গ্রহণযোগ্যতা নেই’ বলেও দাবি করা হয়েছিল চিঠিতে। তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল, দু’জনের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হতে পারে। তখন সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ এবং বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়ের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ বার ভোট মিটতেই ইস্তফা দিলেন অঞ্জন। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, অঞ্জনের মতো বিদ্যাসাগরও ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন।

দলীয় সূত্রে খবর, অনুব্রত (বর্তমানে তিহাড়ে বন্দি) গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে সিউড়িতে জেলা সভাপতির ‘ঘনিষ্ঠ’দের ‘কোণঠাসা’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছিল। অঞ্জনও ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত। তাই, তাঁর পদত্যাগে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কি অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই চেয়ারম্যান পদ থেকে সরতে হল তাঁকে? মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর অনুব্রতের নাম নিতেও শোনা যায় অঞ্জনকে। তিনি বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল আমাকে এই চেয়ারে বসিয়েছেন। ওঁর বিকল্প কেউ নেই।’’ তৃণমূলের অন্য একটি অংশের আবার দাবি, ইস্তফা দিয়ে আদতে দলের মুখরক্ষাই করেছেন অঞ্জন। কারণ, ১৩ জন কাউন্সিলের ‘ক্ষোভ’ যদি অনাস্থা পর্যন্ত গড়াত, তা হলে দলকে আরও বিড়ম্বনায় পড়তে হত। দলীয় সূত্রে দাবি, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় পুরসভার পরবর্তী চেয়ারম্যান হতে পারেন।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Suri Anubrata Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy